•হৃদয় অবাধ্য মেয়ে•

নদীর বাঁকে যেখানে পলির সাম্রাজ্য,সেখানেই ঘাস ফড়িংয়ের ডানায় হারিয়েছে মন...
পাথরের গায়ে আজও ইতিহাস কথা বলে,শীতল জলের সোহাগে তার ঠান্ডা হয় কামনা।
হৃদয় সুন্দরী সেখানেই তার আলতা-পা ফেলে এক্কা-দোক্কা খেলে গেছে।
সবুজ শৈবালে যখন চোখ ধুয়েছে ছায়ার দল,সে হেসে কুশল বিনিময় করেছে;
কিন্তু যাত্রা থামায়নি তার,ছিটে-ফোঁটা চাঁদের আলোয় সে মেয়ে বুনেছে তার জিন্দেগি!
আসলে,সে যে এমনই;হৃদয় অবাধ্য মেয়ে!

শালুকের পাপড়িতে ভোরের শবনম হেসে উঠলে,তার গতি থেমেছে বিস্ময়ে।
কিন্তু তাকে আটকে রাখা যায়নি,দিন প্রাপ্তবয়স্ক হলেও সে ছুটে চলে আলোর গতিবেগে!
না,সময়ও তো পারেনি তাকে বেড়ি পড়াতে,কেবল বৃদ্ধ করেছে তার অবয়ব!
বাকী অন্তর জুড়ে সে শুধুই ছেলেমানুষীর অক্সিজেন মাখে,
ক্ষতের বাহানা স্থবিরতা দিলেও,কালশিটে নিয়েই সে সময়ের প্রেমে পড়ে।
বোঝো না...হৃদয় অবাধ্য মেয়ে!

কিশোরীর নূপুরের ছন্দে,নদীর যৌবনে,কিংবা বেলাশেষের গোধূলিতে তার অস্তিত্ব;
হার না মানা রূপকথায়,কবিতার সূক্ষ্ম দেহে,অথবা নিজের বুকের বাঁদিকে একবার দেখো তো!
কথা দিলাম তাকে খুঁজে হয়তো পাবে,কিন্তু বাঁধার বাহানা পাবে না।
কেন?...

সে যে হৃদয়,অবাধ্য এক মেয়ে।।

-

।। হৃদয় অবাধ্য মেয়ে ।।

শুনেছি, মেঘের দেশে আজও কানাকানি হয়,
চোখের কিনারে বৃষ্টি যাপন করা সেই মেয়েটা নাকি
এখন মিথ্যেবাসায় ভালো আছে।

তবু বারেক চাওয়া স্বপ্নগুলোকে ছুঁয়ে নিতে চায় নির্বাক প্রেমে,
অভিযোগের ধুলোয় কতই না অপূর্ণ ইচ্ছে ঢাকা পড়ে গেছে!
বর্ষার সাথে আড়ি-ভাবে এভাবেও যদি মিশে থাকা যেত
অন্য কবির কবিতায়..

আসলে সেও তো ভুলে থাকতে চেয়েছিল,
জমানো স্মৃতির হিসেব কিংবা অনিয়মে খোঁজা সুখ!
অযত্নে পড়ে থাকা কবিতার খাতাটায়
না জানি কলমের আঁচড় কেটেছিল কতবার!

মনের দোরগোড়ায় কখনও আটকে নিয়েছে একচিলতে আকাশ,
আবার কখনও গোধূলির লাজুক রোদে পুড়ে গেছে চুপচাপ-
নিঃস্ব হৃদয়ের আনাচকানাচ জুড়ে..

সেসব এখন হারিয়ে কোথায়, মুহূর্ত সাজায় অন্য গল্পে।
মেয়েটা তবু ছন্দ আঁকে, অন্ত্যমিলে শব্দ বুনে;
ঠিকরে পড়া চাঁদের আলোয়, অভিমান লেখে ব্যর্থ শোকে।

শুনেছি, মেঘের দেশে আজও কানাকানি হয়,
চোখের কিনারে বৃষ্টি যাপন করা সেই মেয়েটা নাকি
এখন মিথ্যেবাসায় ভালো আছে।

-

"হৃদয় অবাধ্য মেয়ে"
আচ্ছা অবাধ্য মেয়ে তুই তো!
ঘুরে বেড়াস মস্তিষ্কের অলিগলির মাঝে-
টো টো করে।
পড়াশুনাতে মন নাই, খালি উড়ু উড়ু চিন্তা
তোর বেহাল্লাপনার দাম চামড়া মেটাবে কতদিন?
বল রে।

ডাগর হবি ক'দিন পরেই
উড়াটা বন্ধ কর তো; নইলে শুনতে হবে
সাত পাঁচ কথা।
সবুজ হবে তোর জমি,
জন্মাবে কত পরিণত ধারণা, ভাঙবে কত
ত্রুটিবিচ্যুতি।

ও হৃদয়, মাখিস না প্রেম
হইস না লজ্জিতার আবরণে ধর্ষিতা, নিজেকে
বানাস না পণ্য।
নইলে শরীর জ্বলবে নখের আঁচড়ে,
তুই বিশ্বাসভঙ্গে; সমাজতন্ত্র করবে
কলঙ্কিত গণ্য।

রাখিস নিজেকে দৃঢ়নিশ্চয়
সংযম কর আবেগ, প্রসারিত কর উন্নয়ন
অলিন্দ নিলয়ে।
মনে রাখিস আরেকটি বিষয়
তোর কাজ দাম পায়
মানব শরীরে।

-

|| হৃদয় অবাধ্য মেয়ে ||

ওরে শোন, মন তো মেতেছিল,
মেতেছিল আরও একবার।
তোর দুষ্টুমিতে ঝুঁকি নিয়ে
মোহানায় মিশেছিলেম,
হয়েছিলেম ছারখার।

ওরে শোন, মন তো ডুবেছিল,
ডুবেছিল গভীরে বারবার।
তোর চাহনিতে লাজুক হয়ে
গহ্বরে হারিয়েছিলেম,
দেখেছিলেম পারাবার।

ওরে শোন, মন তো বুঝেছিল,
বুঝেছিল তুই নিরাকার।
তোর মায়াতে অপমান সয়ে
অবাধ্য হয়েছিলেম,
গেছিলেম কারাগার।

-

হৃদয় অবাধ্য মেয়ে


শুনেছিলাম ছোট থেকেই ভারি অবাধ্য তুমি,
তোমার মেয়েবেলার দস্যিপনা-গল্প শুনে
কেটেছে কত অন্যমনা বিকেল সন্ধ্যে।
তোমার প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব যতই বলেছে -
'ওর না আছে চাল না আছে চুলো, কেবল নেচে বেড়ায়, বড় ধিঙ্গি...'
মনে মনে আরো ভালবেসেছি বোধহয়।

আজ যখন আমার বুকে মাথা রেখে তুমি চাঁদের মতো শান্ত,
বরাবরের বাধ্য হৃদয় আমার
অবাধ্য এই প্রথম...

-

হৃদয় অবাধ্য মেয়ে
-----------------------

সেই মেয়েটা নীলচে ফ্রক পড়া,
সেই মেয়েটা চেনো নাকি তাকে,
সে মেয়ে নাকি ভারী দস্যি মেয়ে,
পাড়াটাকে মাথায় করে রাখে....

সেই মেয়েটা ভীষণ রকম জেদি,
একগুঁয়েমি রাগ করে সে খালি,
সেই মেয়েটা অভিমানি বড়,
সাজায় অনেক অভিযোগের ডালি....

সেই মেয়েটাও কষ্ট দেখে অনেক ,
সেই মেয়েটাও ভালোবাসতে জানে,
যন্ত্রণাদের আড়াল করে রাখে,
বোঝে সকল অনুভূতির মানে....

সেই মেয়েটা দুরন্ত যে ভীষণ
সবাইকে সে দেয় যে পাগল করে,
হৃদয়খানি অবাধ্য তার তাই তো,
উজার করে ভালোবাসতে পারে.....॥

-

হৃদয় অবাধ্য মেয়ে

ঠিক যতটা অবাধ্য হয়ে বৃষ্টি ঝরে মৌসিনরামে,
তেমনই অবাধ্য ধারায় ঝরবো তোমার মনে....
ঠিক যতটা অবাধ্য হয়ে ভিসুভিয়াস জেগে ওঠে,
তেমনই বিস্ফোরণে ভাঙবো তোমার আগলটাকে....
ঠিক যতটা অবাধ্য হয়ে মরুঝড় ওঠে সাহারায়,
তেমনই রুক্ষ ঝড়ে মিশে যাবো তোমার দেহময়....
ঠিক যতটা অবাধ্য হয়ে সুনামি আছড়ে পড়ে উপকূলে,
তেমনই স্রোতের ধারায় ভাসবো তোমার দুচোখ জুড়ে....
ঠিক যতটা অবাধ্য হয়ে আমাজন আঁকড়ে রাখে দুর্লভ সৃষ্টিকে,
তেমনই জড়িয়ে রাখবো তোমায় জন্ম-জন্মান্তরে....
ঠিক যতটা অবাধ্যতায় বাঁধা যাবে তোমায়,
তেমনই বেঁধে রাখবো তোমার আমার হৃদয় |

-

হৃদয় বড় অবাধ্য মেয়ে
দুষ্টুমি করে মুচকি হাসে আমার দিকে চেয়ে !
কালবৈশাখী বিকেল বেলায় আম কুড়ানোর মাঠে ;
মেঘলা আঁচল উড়িয়ে কন্যা একলা বেড়ায় ছুটে
বাঁধ ভাঙা তার হাসির জোয়ার ,
ভেস্তে দিল রুটিন আমার
অঙ্ক খাতার সাদা পাতায় কবিতা লেখার স্রোতে !
অবাধ্য মেয়ে দুরন্ত খুব
খুঁজে ফেরে রোজ প্রেমের স্বরূপ
বাস্তবতার হাত ছাড়িয়ে হারায় অচিন পথে ...
সোনারোদ ঝরা দুপুরবেলায়
আচমকা ছোটে স্মৃতির মেলায় !
বর্ণচোরা মেঘের কোলে লুকায় চোখের জল
অকারণে শুধু আমায় কাঁদায়
মিথ্যে স্মৃতির গোলকধাঁধায়
অবুঝের মতো বারেবারে বলে, "বন্ধু ফিরে চল !"

-

~~~ হৃদয় অবাধ্য মেয়ে ~~~

আমি বললাম, "ভালোবাসি",
...হাসলো সে।
আমি বললাম, "তোমায় লুকিয়ে রাখবো নিজের করে",
...তার হাসিতে হালকা কুঞ্চন-
কালো ওড়নার মস্ত ঘোমটা পরিয়ে দিলাম তাকে,
মুখের সামনে এক চিলতে আলো ধরে বললাম,
"বাঃ! কত সুন্দর!
গোপন করে রাখবো তোমায় বিশ্বচরাচর থেকে,
তুমি আমার; শুধুমাত্র আমার..."
অমনি সে অট্টহাসিতে কাঁপিয়ে তুললো বাতাস,
কালো ওড়না কেটে কেটে বানালো প্রজাপতি,
উড়িয়ে দিলো তাদের আকাশে...।
ভেজা চোখে বলল, "তুমি বরং একটা ময়না পোষো,
বুলি শেখাবে, দানা খাওয়াবে, ভারী মজা,...
আমি, হৃদয় অবাধ্য মেয়ে;
আমায় ভালোবাসতে যেও না,... পুড়ে যাবে"।
ভেজা চোখ প্রজাপতির ডানায় মুছে, চলে গেল সে,...
প্রজাপতিগুলো এখনও উড়ছে,
আমার থেকে অনেকটা দূরে,
আমার হাতে এক তোড়া ফুল, তবু সেই ফুলে বসছে না।

-

হৃদয় অবাধ্য মেয়ে -

তোর হৃদয়টা শুধুই অবাধ্য, তুই এগিয়ে যেতেই বাধ্য, সাধ্য।
যেমনটি ছিলি অতীতে-
বীরাঙ্গনা "মাতঙ্গিনী" হয়ে,
তুই তো সাধারণ নস্!
কে বলেছে তুই অবাধ্য?
তোকে দিয়েই তো সূচনা-
তুই জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী....
মাতৃরূপি!
আজও তোর লীলা-
বর্তমানে....
সোনার মেয়ে "হিমা দাস" হয়ে।
মেয়ে-
তুই ধর্ষিতা, আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলি-
তোরা দোষী, শোষি-
মহানগরের "নির্ভয়া" নির-মাতা।

-