আমার কবিতাদের যদি হাত-পা থাকতো ;
তাহলে গাছের ডালে ঝুলিয়ে রেখে,
ওদের সব দাবি-দাওয়া শুকিয়ে নিতাম রোদে ।
দূর থেকে তুমি ভাবলে ;
ছাইপাশ ঘেঁটে আমি কবিতা কুড়োই,
আসলে আমি কবিতাদের কবর দিতে পারিনি এখনো ।
জোরে জোরে পা ফেলো ;
আরেকটু এগোলেই একটা সিঁড়ি পাবে,
নেমে দেখে এসো একটা আস্ত কবিতার বাড়ি বানিয়েছি ।
কবির দুঃখের দেওয়ালে ভর দিও না যেন !-
তুমি বলেছিলে মেঘেদের বাড়ি নিয়ে যাবে একদিন।
কিন্তু নিজেই কোনোদিন হারিয়ে যাবে দূর আকাশে,
সেটা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে দাওনি।
স্নেহময়ী পৃথিবীর আদরের কোল,
কিংবা আকাশের বুকে টিম টিম করে জ্বলতে থাকা তারাদের মাঝে,
কোথায় যে বেশি শান্তি মেলে তোমার
জানতে ইচ্ছে করে।
তার পরে আবার মন ভাঙা দুঃখেরা ভিড় করে,
সংগোপনে বিরহের কবিতা শোনায়।
আমি রোজই শুনি।
তুমি শুনতে পাওকি?-
~~বাড়ি~~
সবার কি থাকে বাড়ি??
তাই করেছে তারাও আড়ি....
কখনও স্টেশন,কখনও রাস্তা,,
এই নিয়েই থাকে তাদের আস্থা...
হয়তো খাচ্ছে ধূলোয় লুটোপুটি,,
তাতে অবশ্য নেই তাদের ত্রুটি...
অল্পেই খোঁজে আনন্দ,,
খুব একটা লাগেনা দন্ধ...
ঝড়-বৃষ্টি,বন্যা উপড়েছে তাদের ভিটে,,
লক্ষ্য করলে পড়বে নজরে জলের ছিটে...-
টিমটিম জ্বলে সময়ের লণ্ঠন,
সুফিয়ানা, ভাড়া বাড়ি,
প্রতিবেশীর মধুর গুঞ্জন
এভাবেই কেটে যায়,
ফুল পঞ্জিকার দিনক্ষণ,
দিন কেটে সময় বয়,
বুঝলে, বিপদ ভঞ্জন!
সবমিলে বেশ আছি,
জ্ঞান আছে টনটন।
-
শেষমেষ বুঝতে শিখলে, ফিরে এলে বাড়ি
মা তোমার দুঃখ নিল, তুমি মায়ের শাড়ি।-
নার্সিংহোমে যেদিন প্রথম জন্মেছিল জবা;সে কি আনন্দ! জবার বাবা দেখতে এসে আহ্লাদে আটখানা, আমার মামনি যেন ঘর আলো করে এলো। শুনছো? তোমাদের কবে ছুটি দেবে, মামনিকে বাড়ি নিয়ে যাবো। মায়ের মমতায় আর বাবার আদরে বড়ো হওয়া জবা অপরুপা অষ্টাদশী পড়াশোনা পর্ব শেষ করে বাবার পছন্দ করা পাত্রের সাথে বাড়ি পাল্টানোর প্রহর গোনে। সানাই এর সুর থেমে গেল, শ্বশুর বাড়ির সাজে জবার সে কি কান্না।
বাবা বল্লেন ও মা আর কাঁদিস না, মেয়েদের তো শ্বশুর বাড়ি যেতেই হয়, সবাই অপেক্ষা করছে।
সাজানো সংসার, জবা ভীষণ সুখী, স্বামী-পুত্র-কন্যা; উপচে পড়া সুখ। একদিন নিয়তির নিয়মে স্বামী হারা হতে হয়।পুত্র প্রতিষ্ঠিত;মস্ত চাকুরে। ওমা এ বাড়িটা আমরা ছেড়ে দেবো, একটা ভালো ফ্ল্যাট নিয়েছি। জবার চোখে জল- বাবা বাড়ি পাল্টাবি? পরিস্থিতি মেনে জবা ছেলের সঙ্গে নতুন বাড়িতে, সাধ্যমত ছেলে মাকে যত্নে রাখে।বয়স বেড়েছে, শরীর আর তেমন সাথ দেয় না, ডাক্তারের চিকিৎসার জোরে একটু আধটু চলে ফিরে বেড়ায়।
পাড়ার মিনু জেঠিমা দেখতে এসে বলে ও জবা বাড়ি যাওয়ার ডাক এলো না কি রে। জবার দুচোখ গড়িয়ে জল পড়ে, দিদি আর শরীর চলে না,কবে যে গোবিন্দের কৃপা হবে, বাড়ি ফিরে যাবো।
জানিনা কোথায় বাড়ি!🙏
০২/০৬/২০১৯ #৪৪৮
মধ্যরাত্রি-
বদ্ধতা — স্তব্ধতা
ঘরের জানলাটা খুলে পুকুর দেখতে চাইনা
গাছপালা দেখতে চাইনা
চাই সেই জানলাটা খুলতে
খুলে পাশের বাড়ির দেওয়াল দেখতে
বদ্ধ ঘরেই থাকতে
আজকাল কেন মানুষের মায়া কাটিয়েও
বাড়ি ঘর দোরের মায়া কাটাতে পারছিনা?
আমার নতুন সকাল কি বাড়িটাতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেনা?-
তোমার বাড়ি অনেক দূর।
যাওয়ার নেইকো রাস্তা।
চাইলেই তুমি ফিরে আসবে,
আমার প্রেম কী এতই সস্তা!-
একটা পুরোনো বিচ্ছিরি রঙচটা বাড়ি । চাঙড় খসে খসে পড়ে যেন মৃত কঙ্কাল । যতক্ষণ বাড়ির বাইরে থাকি ততক্ষণ শান্তি !
অথচ সারাদিনের পরিশ্রমের পরে ক্লান্ত পায়ে মনে হয় কতক্ষণে বাড়িতে ফিরব !
বাড়ি কি শুধুই কিছু ইট পাথরের গাঁথুনি ? নাকি তার চেয়েও অনেক বেশী কিছু !-
"বাড়ি"-
'বাড়ি'মানে-ইট, সিমেন্ট,বালি- দ্বারা-
গঠিত ভালোবাসা ও সুখের আস্তানা।।
যেখানে সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রমের শেষে-
ফেরে বাড়িতে পেতে মানসিক শান্তনা।
"বাড়ি" এমন একটা শান্তির ঠিকানা-
যেখানে সর্বদা চলে প্রিয়জনদের আনাগোনা।
যাদের টানে ফিরতেই হয়-
স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে-
ভালোবাসায় মন ভরাতে।
যাদের বিনে যায়না চেনা নিজেকে।
থাকে নিজের পরিচয় লুকিয়ে।
Anima Barman.-