শারদ আকাশ, অরুণ প্রভায় শিশির ভেজা প্রাতে,
দেবীপক্ষের শুভারম্ভে আনন্দে মন মাতে।
মহালয়া সুর, আগমনী গান, মধুর চণ্ডীপাঠ,
তর্পণ স্নানে, তব আহ্বানে মুখরিত মাঠ ঘাট।
দশভূজা মা অসুরনাশিনী, অন্নপূর্ণা, মহামায়া,
সঞ্জীবনী মন্ত্রে তোমার অকালবোধন শুরু হোক।
তব পদধ্বনি মুছে দিক যত অশুভ শোকের ছায়া,
মঙ্গল করো বরাভয় দানে, প্রাণ ফিরে পাক মর্ত্যলোক।।-
দৈবনির্ভর ভদ্রবর্গ
জরায়ুভেদী অশ্রু কাড়ে
সনাতনের মূঢ় তর্পণ
দেবীপক্ষেও আঁচড় মাড়ে।-
৪ কি ৫ বছরের একটা ছেলে,
যার কাজ ছিল সারাদিন দুষ্টুমি করে বেড়ানো আর সবার কাছে বকুনি খাওয়া..
একদিন মা'র কাছে শুনলে কাল 'মহালয়া',
দুগ্গা ঠাকুর কীভাবে অসূর কে বধ করল সেই ঘটনা ভোরের বেলা টিভিতে দেখানো হবে।
মা বললেন, তাড়াতাড়ি না ঘুমোলে সূর্যের আগে উঠতে পারবে না..
- ঠিক আছে, তবে ভোরের বেলা তুমি ডেকে দিও কিন্তু!
নিশ্চিত হয়ে সে ছেলে ঘুমিয়ে পড়ত আর ঘুম থেকে উঠে দেখত সূর্য আগেই উঠে পড়েছে..
মায়ের কাছে 'না ডাকার' অভিযোগ আর অভিমান চলতো সারাদিন।
মা বলতেন, অনেক বারই তো ডেকেছি তুই তো উঠলিই না.. সারাদিন দুষ্টুমি করে বেড়ালে কারুর ভোরের বেলা ঘুম ভাঙে!-
রেডিওতে সেই চেনা সুর বেজে উঠেছে যখন,
বছর পনেরোর মেয়েটি বেরিয়ে পড়েছে তখন।
বিষণ্ণ বদনে গন্তব্যে উপস্থিত হয় শেষ রাতে,
কত লোক নেমেছে তর্পণে গঙ্গার সেই ঘাটে।
সে মেয়ে, সকলে যে তাকিয়েছে বাঁকা চোখে,
অবিচল তবু, কার সাদ্ধি আছে তাকে রোখে।
বাবার আদুরী তাঁর কাছে সর্বদা ছিল ছেলে হয়ে,
আজ অনেক গল্প হবে একটু জলের বিনিময়ে।
সমাজ, নিয়ম, রীতিনীতি ভুলে গেছে আজ সব,
বাবার দূর্গা বেঁচে আছে শুধু নিয়ে তাঁর অনুভব।-
আশ্বিনের শারদপ্রাতে,
পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে
হলো ,মাতৃপক্ষের সূচনা
আনন্দে মাতলো বাঙালি ,
শেষ করে সব দুঃখ
আর অনুশোচনা।-
আসছে শরৎকাল
কাশফুলের মেলায় ভরেছে মাঠ,
আসছে পূজোর মাস।
সেজে ওঠে আমার শহর,
মন্ডপের নানা কাজে
মহালয়ার ভোরে রেডিওতে,
আগমনীর সুর বাজে।।-
দিন যতই পাল্টে যাক
পাল্টে যাক সময়
মহালয়া আজও
বাঙালির সেই উৎসব
যেখানে ভোর চারটেয় উঠে
সেই পুরনো রেডিও তে
বাজলো তোমার আলোর বেণু দ্বারা
প্রারম্ভ হয় মায়ের
আগমনী প্রার্থনা-
আশ্বিনের শারদপ্রাতে দেবীপক্ষের সাথে সাথে সবার জীবনে আনন্দের সূচনা হোক...।
শুভ মহালয়া🙏-
শিউলি পড়ে ঝরে ভোরের শিশিরে
রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহালয়া চলেছে জোরে
অনাবিল এক স্নিগ্ধতার স্পর্শ ভাসে বাতাসের ভিড়ে।
আমরা মুখিয়ে তাকিয়ে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুংকারে
জয় ঘোষণা হবেই হবে নারীশক্তির ত্রিশুল চিরে।।-
সুপ্রভাত
আজ মহালয়া।
অনেকের মতে মহালয়া কথাটি এসেছে মহৎ আলয় থেকে।
হিন্দু ধর্মে মনে করা হয় যে পিতৃপুরুষেরা এই সময় পরলোক থেকে ইহলোকে আসেন জল ও পিন্ড লাভের আশায়। প্রয়াত পিতৃপুরুষদের জল ও পিন্ড প্রদান করে তাঁদের তৃপ্ত করা হয় বলে মহালয়া একটি পূণ্য তিথি।
-