এমন মনকেমন করা শ্রাবণের শেষ সন্ধ্যা। পাড়াগাঁয়ের চায়ের দোকানের কানাঘুষো...
অন্ধকার একটু গাঢ় হলেই দেখি তুমি বিশাল থেকে বিশালাকার ধারণ করো
দূরের ওই আকাশটার মতো, শান্ত নীরব নিঃশ্চুপ... তবু কাছে আসো না, ছুঁয়ে
দেখো না আর এই জাগতিক যা কিছু। অথচ আমি স্পষ্ট দেখতে পাই,
তোমার বুকের পাঁজরে লুকিয়ে রাখা অসহনীয় যন্ত্রণার দল রোজ গর্জন করে ওঠে
অশান্ত মেঘের মতো। অথচ আমি বুঝি, রোজ নোনাজলের ধারায় রক্তস্নাত হয়ে
ওঠে তোমার বুকের শুকনো মাটি।
এরকম তো কথা ছিল না? তবে কেন আজও তোমার শাড়ির আঁচলে লেপ্টে থাকা
আমার শরীরের সুবাস, ডালিমরঙা বিকেল, কিম্বা ধরো তোমার এলোচুলের
ঘন কালোয় মিশে যাওয়া আমার জীবনের সব অন্ধকার থেকে তুলে আনা
অসংখ্য স্মৃতির কোলাহল, নির্জনে আঁকড়ে ধরো?
এক লহমায় সবকিছু ছেড়ে ফাঁকি দিয়ে আমার চলে যাওয়া... মেনে নাও। মেনে নাও, পৃথিবীর এ কঠিন নিয়ম।
জানি, আমি অপরাধী তোমার কাছে। যে অদৃশ্য রৈখিক দূরত্ব সবকিছু নিরর্থক করে দিল,
যে অপরাধে তোমায় শুধুই উপহার দিয়ে এলাম আজীবনের পাথরশোক,
সে ব্যবধান যে আলোকবর্ষের! আমি নিরূপায়!
কানাঘুষো মিলিয়ে যায়। আমি দু হাত পেতে সযত্নে কুড়িয়ে নেই
বিন্দু বিন্দু তরল অভিমান এমন মনকেমন করা শ্রাবণের কোনও এক শেষ সন্ধ্যায়...
-