পাড়ার লোকেরা সেদিন সাবিত্রীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে,পিটিয়ে প্রায় আধমরা করে ফেলল,এই বলে "ছিঃ!!! লজ্জা করে না তোর,স্বামী মারা গেল এই তো প্রায় কমাস হল....বাচ্চাগুলিও তো কত ছোট,এর মধ্যেই বেশ্যাপনা শুরু করলি!!!!!.....পাড়ার মেয়েরা তোকে দেখে কি শিখবে???"
সাবএী তখনো ভারসাম্যহীন শরীরটি নিয়ে মাটিতে শুয়েছিল,হঠাৎ করে উঠে দাঁড়িয়ে বলল "কোথায় ছিল তোমার সমাজ যখন আমার স্বামী মাএ ২০০ টাকার ওষুধ না খেতে পেয়ে মারা গেছিল!!!!কোথায় গেছিল তোমার মূল্যবোধ যখন আমার দুধের শিশুগুলির জন্য আমি তোমাদের প্রত্যেকের দুয়ারে দুয়ারে মাথা কুটেছিলাম!!!!"
এই স্বল্পকালের উওেজনা, অজস্র লোকের উন্মাদনা হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে গেল, খালি সাবিত্রীর চোখ বেয়ে ঝরঝর করে অশ্রু গড়াতে থাকল........-
লুচি খাবো বলে সেদিন পাড়ার দোকানটা থেকে একটু তেল আর ময়দা কিনে যেই বলেছি পরের দিন পয়সা দেব, দোকানদার ফের হাত থেকে জিনিসগুলো ছিনিয়ে নিলো! কি নির্লজ্জ লোক রে বাবা, লজ্জা পাবার নামগন্ধ নেই!!
এদিকে নিজেই বড় বড় করে দেওয়ালে টাঙিয়ে রেখেছে -
'ধার চাহিয়া.....'-
রিমা শাড়ীর আঁচল টা একটু ঠিক করে নিয়ে দাঁড়ালো পাত্রপক্ষের সামনে, রিমার বাবা প্রকাশবাবু বললেন, "মেয়ে আমার বড্ড সরল, কলেজে পড়ে, অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছি।"
বেশ কিছু প্রশ্নোত্তরের পর পাত্রের বাবা বলে উঠলেন, "বেশ বেশ,আপনার এই লাজুক দুহিতা কে বেশ পছন্দ আমাদের, তা কিছু মনে না করলে এবার............................মানে ওই ব্যাপারে একটু আলোচনায় আসি"।
মাথা নীচু করে মুচকি হাসা লাজুক অষ্টাদশী এবার মুখ তুলে তাকালো, "পণের বিনিময়ে আমি বিয়ে করবো না"।
-
রুমকি কে সবাই একটু নির্লজ্জ বলে জানে, ওর নাকি লজ্জাবোধ ভীষণ কম, রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছেলেদের সাথে কথা বলে, কয়েকজন নাকি ছেলেদের সাথে ফুটবল খেলতেও দেখেছে।
সেবার ওদের বাড়িতে বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানে বেশ হইহই রমরমা, প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনরাও নিমন্ত্রিত, হঠাৎই ওদের বাড়ির পরিচারিকা ঘরে প্রবেশ করে, রুমকি দৌড়ে গিয়ে প্রণাম করে তাঁকে।
কেউ কেউ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলো "এতটাই নির্লজ্জ মেয়েটা"। কেউ কেউ আবার মনে মনে রুমকিকে আশীর্বাদ করলো।-
আমি একটা বেকার মেয়ে হয়ে একজন ডাক্তারকে বিয়ে করলাম আর তুই একটা স্কুল মাস্টার হয়ে একটা রিক্সাওয়ালাকে বিয়ে করলি?
লজ্জা লাগলো না?
না রে, যখন ওর রিক্সায় ও আমায় সগর্বে চাপিয়ে রোজ স্কুলে দিয়ে আসে তখন নিজেকে রাণী মনে হয়, বিয়ে তো কারও রাণী হওয়ার জন্যেই করেছিলুম রে!-
-"শয়তান ছেলে- মাধ্যমিক পাশ করে সাপের পাঁচ পা দেখেছ তুমি...শেষে কিনা আমার মেয়ের সাথে গলির ধারে ঘুগনি- লজ্জা করে না?"
-"স্যার গতকাল তো আমি দেখলাম আপনি বড় রাস্তার মোড়ে আমার কাকিমার সাথে দাঁড়িয়ে ফুচকা... লজ্জা করে না?"
-"আর পরশু আমার গিন্নি যে তোর কাকার সাথে কলেজ মোড়ে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম...সেইজন্যই তো আমি- এবার যা, বাড়ির ভিতরে গিয়ে বল- "লজ্জা করে না?" "-
"এর আগে দুবার আমাদের পাড়ার ক্রিকেট ম্যাচে হেরে ভূত হয়ে আবার খেলতে এসেছিস, লজ্জা নেই নাকি ভাই তোদের?"
বিপক্ষ দলের ক্যাপ্টেন উত্তর দিল, "না লজ্জা নেই।"
একটু থেমে সে আবার বলল,"আসলে হেরে যেতে যত না লজ্জা লাগে তার চেয়ে অনেক বেশি লজ্জা লাগে ভয় পেয়ে মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যেতে।"
-
আদালতের বাইরে শামিম, রিপোর্টারের সরাসরি প্রশ্ন - "কেমন লাগছে মোহাম্মদ শামিম নিজের স্ত্রীকেই নিজের বিরুদ্ধে হারতে দেখে? আচ্ছা, যৌন হেনস্থার কেসটা স্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের করতে আপনার লজ্জা লাগে নি?"
শামিম একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বলে - "লজ্জা হয় বলেই তো কেসটা লড়েছি, তবে গত ৮ বছর বড্ড নির্লজ্জ ছিলাম বলেই হয়তো শুধু নির্যাতন সয়ে গেছি..!
অনেকের মতেই মোহাম্মদ শামিম একজন নির্লজ্জ পুরুষ, কিন্তু শামিম ঠিকই বুঝতে পেরেছিল, 'পুরুষেরও লজ্জা হয়!'
-
-" কি ব্যাপার আপনার , লজ্জা করেনা আমি লক্ষ্য করছি বেশ কিছুদিন ধরে ফলো করছেন।।"
-"ইয়ে, না মানে,লজ্জা করে বলেই ফলো করছিলাম,আসলে আজকে আমাকে মনের কথাটা বলতেই হবে,না বলে ফিরলে বন্ধুরা বলবে,"তোর লজ্জা করেনা, এত ভীতু যে বলে উঠতে পারলি না?"
(একসাথে হাসি)
-"আমিও এটাই ভাবছিলাম, এত লজ্জা কিসের আপনার,না ইয়ে মানে তোমার?-
-ছিঃ ছিঃ একটুও লজ্জা হলো না একটা বাচ্ছা মেয়ের সাথে এরকম করতে। খুব শীঘ্রই সমাজকে আরও শিক্ষার আলোতে আনা প্রয়োজন বুঝলি।
-শিক্ষাই যদি সব সমস্যা মেটাতে পারত তাহলে তো আর স্কুলগুলোতে 'বিশাখা কমিটি' গঠনের দরকার পড়ত না।-