-
- পাপা, আজ কিন্তু বিরিয়ানি !
- ইয়েস মাই বয়, ডোন্ট ওয়ারি ।
- বাবা আজ ভাত হবে? কতদিন খাইনি...
- হ্যাঁ রে বাপ, আজ দুমুঠো ভিক্ষে পেয়েছি।
অষ্টমী তো তাই আজ আর তাড়ায় নি ।
-সঞ্চয়িতা
-
অষ্টমীর সকালে দুর্গা দালানে এসে ঠাকুরের চরণে অঞ্জলীটা নিবেদন করেই ডিউটিতে বেরোনোর জন্য রেডি হতে গেলো রূপা......পেশায় একটি সরকারি হাসপাতালের সেবিকা সে । অবশ্য পুজোর এই বিশেষ দিনটাতেও এভাবে ডিউটিতে চলে যাবার ব্যাপারটা একদমই ভালোভাবে মেনে নিতে পারছে না রূপার শ্বাশুড়ি । বিয়ের পর এটাই একসাথে প্রথম পুজো বিতান আর রূপার....সন্ধিপুজোর সময় স্বামী ও সংসারের মঙ্গল কামনা করে একটাও প্রদীপ জ্বালাতে পারবে না বৌমা এটা মন থেকে মেনে নেওয়া একবারেই সম্ভব হচ্ছে না ওনার পক্ষে । তিনি বিতানকে ডেকে বললেন –' ঘরে চাকুরীজীবী বউ এনে সত্যিই বড় ভুল করলাম রে বাবু...একে দিয়ে সংসারের কোনো কল্যাণকর কাজ হবে না!' মায়ের বলা এই কথাটার তীব্র প্রতিবাদ করে বিতান, সে তার মাকে বোঝায় একটা প্রদীপ জ্বালিয়ে রূপা হয়ত একটা সংসারের কল্যাণ করতে পারবে কিন্তু এই মহামারীর পরিস্থিতিতে ওই সময়টা হসপিটালে গেলে তার সেবা পেয়ে হয়ত আরও অনেকগুলো সংসারের কল্যাণ সাধন হবে । তাছাড়া রূপা থাকতে না পারলেও এবছরের মতো সন্ধিপুজোর সময় সংসারের এবং বউয়ের মঙ্গল কামনার্থে এই বিশেষ দিনের শুভক্ষণে প্রদীপ জ্বালানোর দায়িত্বটাও স্বইচ্ছায় নিজের কাঁধেই তুলে নেয় বিতান।
-
নীলুর আজ খুব আনন্দ। আজ যে অষ্টমী, আজ সে আর তার বোন পেট ভরে খাবে অনেকদিন পর। বোনের জ্বর, যেতে পারবে না, তাতে কী? বড়োবাবুরা খুব ভালো, বললে ওরা বোনের জন্য একটু বেশী করেই দেবে আমাকে।
ক্লাব থেকে আজ গরীব দুখীদের খাওয়ানোর সাথে সাথে জামাকাপড় বিলির ও ব্যাপার আছে, অনেক দায়িত্ব তপনবাবুর, তার মাঝেই একবার বাড়ি গিয়ে ভোগ দিয়ে আসতে হবে। গরীবদের জন্য খিচুড়ি, আলুরদম এবং ক্লাবের মেম্বার ও তাদের পরিবারের জন্য পোলাও, পনির ও মিষ্টি। তপনবাবুর বাড়িতে চার জন্য সদস্য, কিন্তু কেউ নেই দেখে তিনটে প্যাকেট বেশীই নিলেন তিনি। এক্সট্রা অর্ডার দেওয়া হয়েছে, কম পড়বে না।
লাইনে আগে দাঁড়ানোর জন্য নীলু একটু দৌড়াতেই তপনবাবুর গায়ে ধাক্কা লেগে একটা প্যাকেট পযড়ে গেলে তপনবাবু বেজায় চটে যান। ধমকে ওঠেন তিনি "মুখে মাস্ক নেই কিছু নেই, এভাবে এসে ধাক্কা দিয়ে দিবি? এত লোভ তোদের, এই জন্য তোদের এই অবস্থা। এই এখানে ভলেন্টিয়ার কে আছো? এই ছেলেটাকে যেন খাবার না দেওয়া হয় আর কেউ নিয়ম ভাঙলে যেন এমনই সাস্তি হয়। তবে এদের শিক্ষা হবে।"
অনেক কাকুতি মিনতি করেও তাকে লাইনে দাঁড়াতে দেওয়া হয় না। অষ্টমীর দিনও হয়ত তাদের আধপেটা থাকতে হবে।-
পুজো মানেই, তুমি আমি হাতে হাত রেখে ঘোরা
পুজো মানেই অষ্টমী, ঘর ছেড়ে তোমার পাড়া
শাড়িতে তোমায় ভালোই মানায়
তাই তো চলে যাই আমি
-
আজ যা কিছু মলিন
ধুয়েমুছে যাক,
মা-এর অপেক্ষার শেষে,
ছেলের প্রথম বেতন থাক।
যা কিছু খারাপ;সময় বুঝে নিক,
আদুরে আমেজ,ছেলে মাকে দিক।
সত্যিই পাওয়ার তো কিছু নেই,
হারানোই জীবন,
তবু মুহূর্তেই বেঁচে থাকা,
আর ঘন এই কাশবন।-
বাঙালি মেয়েদের পুজোর আবেশিত গন্ধ
অষ্টমীর অঞ্জলিতে নিপাট শাড়ির সাজে
মুগ্ধ প্রেমিকের দৃষ্টি ছাড়া বড্ড অসম্পূর্ণ-
শুনছেন,
অষ্টমীর চাঁদের আলো এখুনি আঁচল ছুঁয়ে গেলো l
গঙ্গার জলের শব্দে হালকা হাওয়ায় এলোমেলো হয়ে গেলো খোঁপাটা...... আপনার আঙুলের ফাঁকে ধরা নিকোটিনের ধোঁয়া লক্ষ্য যোজন দূর থেকে আমার কপাল ছুঁয়ে গেলো.....
কে বলে অষ্টমীর প্রেমে হাতছানি থাকে?
আমরা অষ্টমীর বিরহ আকণ্ঠ পান করেছি পরিণতির কথা না ভেবে......
চিরকুটে লিখলাম " প্রেমে তো সবাই পড়ে, বিরহে পড়ে ভাগ্যবানরা "......
-