-
আমি তোমার মুখে একশো তারার মায়া দেখেছি। অচেনা মণিখচিত ওই চোখ দুটো আমাকে নীসাড় করে দেয় — চোখ সরাতে পারি না আর।
আয়নার অবয়বে অট্টহাসির ষড়যন্ত্রে মরার থেকে,, কাছে এসে আমাকে মেডুসার মত পাথর করে দাও —আমি তোমার চোখের গভীরে আত্মা ত্যাগে রাজি।-
হৃদয়ের অলিন্দ-নিলয়ে এত যে তোমার নিঃশব্দ নিঃশ্বাস,
বাঁধন ছাড়া চোখের মায়াতে আবদ্ধ করেছো মায়াবতী ।।
সেই মায়াবতীর মায়ানমারের তীরে তীব্র যন্ত্রণা নিয়েও,
আমি বার বার ফিরে যাব ।।-
তুমি নেই। তুমি না থাকার দুঃখটা মিশিয়ে দিয়েছি একাকীত্বের ঢেউয়ে। তুমি ছিলে বলেই বিধ্বস্ততায় খুঁজতাম তোমার কাঁধ। মর্ত্য ত্যাগে আশ্রয় নিতাম তোমাতে। তোমার সঙ্গতার লোভে পরাজয়ে পালন করেছি উৎসব। কিন্তু হায়! তুমি নেই; তাই ক্লান্তি নেই, দুঃখ নেই। সব অবসর, নির্ভরতার দর, ভালোবাসার কর সব আমার।
-
এই সবুজ পাহাড়, ওই লাল পাহাড়, খটমটে পাহাড় আর পাথুরে পাহাড় সব তোমায় দিলাম।
নোনা সন্ধ্যা বাতাস, এক ফালি চাঁদ, দু' মুঠো বালি আর তিন বেঘ্ত সমুদ্র তুমি আমায় দিও।
বাকি জমিনে ফুটুক বেলি, রজনীগন্ধা, রক্ত গোলাপ কিংবা জারবেরা
আমি তোমায় পেলে হব সমুদ্র-ধনী, তুমি হুকুম দিও সেজে পাহাড়ী-রানী
বিষাদ বন্দী আছে নিষিদ্ধ দ্বীপে, তারা আর কেউ আসবেনা।-
আমি দেখেছি তাঁর চোখ এক যুগ ধরে
কাছে থেকে নয় বরং দূরে, এক মহাবিশ্ব দূরে
যে অন্ধকার নক্ষত্রের আলো গিলে ফেলে
তেমনি তাঁর কাজল দেখেছি আমি।
তাঁর মুখ জ্বলন্ত প্রদীপের মত জ্বলে
সে প্রতিমা নয় তবু তাঁর মায়াবী হাসি টানে।
শেষ তাঁর সাথে দেখা হয়েছিল পাইন বনে
একাকীত্বে; ভীষণ শীতে।
তারপর খুঁজেছি তাঁকে গ্রহে গ্রহে
সে লুকিয়েছে মহাবিশ্বের কোন কোণে
তবু সে যেন আছে — এই তো এই খানে।
জানি সে আবার ফিরবে না আর
এই লেখা, ভালবাসা, সব বেকার
তবু অপেক্ষার দশটা বছর করে পার
ফিরবো মাটির পানে॥
-
নির্জনতা আমাকে ধীরে ধীরে ঘিরে ফেলেছে।
আমি শুনতে পাচ্ছি তাদের উল্লাস।
খুব স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি তাদের কথোপকথন
কি ভয়ংকর তাদের সে সব কথা।
আমার চারিদিকে সারাক্ষণ ফিসফিস আওয়াজ
উফ্ফ্!! কি বিরক্তিকর!!
আমি টের পাচ্ছি কবরের অন্ধকার
কি ভয়ানক!! মৃত্যু মোটেই শান্তিময় নয়।
তবু মৃত্যুর অপেক্ষায় বসে আছি ঠাঁয়।
আমি একা। একান্তই একা!
সবাই ছেড়ে দিয়েছে আমায়
অন্ধকার বিছানায়।-
সময়ের স্রোতে মুছে যায় দাগ।
এই গ্রহের শিকারীরা বড্ড চালাক।
দৃশ্যমান যা, বিশ্বাস কর তা।
কাঁটাতার পেরিয়ে নাই বা দিলে দৃষ্টি।
স্মৃতি থেকে যাক কিছু তিক্ত কিছু মিষ্টি।
আসি! দেখা হবে না আর
ছিঁড়ে ফেলা যাক সব তার
বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার
মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছে।
-
আজ আবার একশোটা বছর পেরিয়ে গেল, আমাদের দেখা হয়নি। অথচ আমরা একই আকাশগঙ্গার একই নক্ষত্রের একই গ্রহে কয়েকশো হাজার বছর লুকিয়ে আছি। সেই একবার মাত্র আমাদের দেখা হয়েছিল, চোখে চোখ রেখে কথা হয়েছিল। খুফুর পিরামিড তখনও তৈরী হয়নি। তার আগে আমাদের দেখা হয়েছিল কেপলার - 452b এর মহাযুদ্ধে। আমি প্রতি যুগে নব প্রেমিকের টগবগে রক্ত মেখে হৃদপিন্ডের স্মৃতি ধরে রাখি। তুমি ছাড়া অমরত্ব অভিশপ্ত । আমাদের দেখা হবে কবে?
-
আমার মেদের পর্দা কমলো কিনা সেই হিসেব ছেড়ে বরং আজ থেকে কবিতা লিখব।
আমি এইমাত্র ঠিক করেছি আমি বই লিখব।
আমার অযথা কথা শুনিয়ে তোমাকে বিরক্ত করার থেকে বরং লিখব উপন্যাস।
তোমার কথা ভেবে ভেবে আমার কতক্ষণ মাথা যন্ত্রণা করলো সেই হিসেব ছেড়ে বরং অর্থনীতির কঠিন অঙ্ক কষব।
তোমার জন্য কি করেছি, কি করছি, কি করতে পারি এইসব সাফাই দেওয়ার থেকে বরং আমার বিছানা সাফ করব।
তোমার সাথে কথা বলার বাহানা খোঁজার থেকে বরং অভিধানে খুঁজব নতুন শব্দ।
তোমার থেকে ভালোবাসা চাইবার থেকে বরং হৃদপিন্ড ছিঁড়ে আত্মহত্যা করব।
তবু আর চোখ লাল করে কাঁদব না বরং দম বন্ধ হয়ে ফুসফুস ফেটে যাক।
আরও কত কী ভেবেছি। নাহ, বলা যাবে না, বললেই...........
অথচ বিশ্বাস কর,, বিশ্বাস কর আমি এসবের কিছুই চাইনা !!!-