আমার দিনরাত
এখন শুধু শরৎ বানান
বর্শাবিদ্ধ কবি
তুমি কবিতার থেকে
শতহস্ত দূরে
পালাও বলে রাগ করিনি
অভ্যাসে আছো
অভ্যাসে থাকো
মনে মেঘে কুয়াশায়
একটিবারও স্পর্শ করিনি-
পৃথিবীর আকাশে সমস্ত মেঘ তখনও শীতের হয়ে ওঠেনি,
সম্পর্কের কাঠামোতে কাঁচামাটি লেপে দিচ্ছে
আশ্বিনের উদ্ভ্রান্ত বাতাস!
তোমায় দেখতে পেলে প্রতিটা ইন্দ্রিয় বলে-
যত রং চেনো সমস্তই ভালোবাসার,
যত ফুল ফোটে সমস্তই বৃষ্টির অবশিষ্ট মায়া...
এভাবে কাছে এলে যেন নিশ্বাসে নিশ্বাসে
তোমার সুঘ্রাণ ভ'রে রাখি সারাটাদিন।
কথা হারিয়ে ফেলেছে যেসব কবিতারা
তাদের কীকরে জানাবো আর!
সে আমায় ভাসিয়ে রেখেছে গোলদিঘি জলে
শালুক ফুলের মত অজস্র চুম্বনে...-
তোমার সাথে কথা বলার ইচ্ছেগুলো
পদ্মপাতা!
ওদের কাছে নিয়ে এসো জল টলমল চোখ।
কে জানে আর বৃষ্টি হবে কবে,
কে জানে কার ধুলোর বাড়িঘর,
কেউ কি তার ঘুমের মাঝে পরশপাথর খোয়ায়?
তোমার সাথে দ্যাখা হওয়ার ইচ্ছেগুলোর
গলা শুকিয়ে কাঠ
তাদের চুলে অঢেল অঢেল মেঘ জড়িয়ে দাও...-
তুমি আমি আর এই যে ইশারা
সহজ কোমল আহ্লাদী
অথচ
যা কিছু জলের মত সহজ,
মুঠোয় ধ'রে রাখা যায়না চিরকাল
চুঁইয়ে প'ড়ে যায় যদি
আমাদের বোঝাপড়া?
ভয় কি!
সমুদ্রের মত দুই বাহু বাড়িয়ে দিতে পারো যদি
আর মহাকর্ষের মত প্রেম...
আমি আছি
আর আছে নক্ষত্রের আশ্বাস,
এই বেলাভূমিতে সর্বস্ব হারিয়ে বসে থাকা এক নারী!
দ্যাখো তার ভীষণ শূন্যের মাঝে যদি কিছু খুঁজে নিতে পারো।-
তোমার মেঘের মাঝে শরীর বিছিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। দাঁড়িয়ে আছি অসমাপ্ত ঝড়ের মাঝে। আগে বলতাম ভালোবাসলে তাকে নিয়ে লিখতে পারিনা কিছু! আগে কী বলতাম, মিলিয়ে যাচ্ছে, চোখ কটকট করছে আচমকা ধুলোয়। সাদা থান উড়তে উড়তে ময়দান বেয়ে ব'য়ে আনছে অশরীরী দুঃখ! আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে যাচ্ছে আমার চুলে, হাতের পাতায়... এখন কেবলই সেই মেয়েটার জন্য আমার কষ্ট হয়, যার না হওয়া প্রেম তৃষ্ণার্ত গলার নলি ছিঁড়ে হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। বোরো ধানের ক্ষেতে না ব'লে ক'য়ে আসা বৃষ্টিতে আর কেউ মাথায় ধরে না মস্ত এক কচু পাতা। ক্রমে ওদের ছায়া এসে পড়ছে আমাদের চোখের ওপর। কোনো এক চৈত্রের ঘূর্ণাবর্তে পাক খেতে খেতে আবছা হয়ে আসছে আমাদের বর্তমান...
-
সূর্য এখন গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবুঝ প্রেমিক।
সূর্য আজকাল হাতে বোনা সোয়েটারের রোঁয়া ওঠা মেঘ
যত্ন ক'রে জমিয়ে রাখে বুকপকেটের একটা কোনায়।
কিজানি কোন নাম না জানা পাহাড়গ্রামে
কার সে হাতের বাজুবন্ধ, সুগন্ধী সব স্মৃতি
জমিয়ে রাখে তুষার জমা নীল কাগজের খামে,
দ্যাখা হলেই পালকধোয়া বুকে ছড়িয়ে দেবে ব'লে
শেষ দুপুরের শীতকাতুরে রোদ!
এইতো আমার অস্তগামী সাজ,
এইতো আমার তাকে ছোঁয়ার বৃষ্টি;
আড়াল খুঁজে খুব গোপনে একলা একলা ভিজি!
সূর্য তখন পাঁচিল ঘেঁষে এসে অতর্কিতে জাপটে ধরা আলো,
ওষ্ঠ চিবুক লেপ্টে ছিল বিন্দু বিন্দু জল
ছ্যাঁত করে সব বাষ্প হল...
এসব কথা কিন্তু
তোমরা কেউ পাঁচকান ক'রোনা।-
যতদূর যেতে হয় যাব।
লোকালয় ছেড়ে ঐ নির্বাক মেঘেদের পাড়া,
তোমাকে জানব,
বর্ষাকে যেমন জেনেছে ক্ষীণকায়া নদী।
সেদিনও এমন সন্ধ্যের মুখোমুখি
ওষ্ঠে ওষ্ঠে কি অকস্মাৎ বিদ্যুতের মাস!
বর্ষাতি ফেলে কারা সব ছুটে গেছে জলে।
এই ঘাস এই মাঠ বৃষ্টির তীর বুকে নিয়ে
বিড়বিড় করে চলেছে মাটির প্রথম কবিতা...
দেখো
ঝাপসা নিয়ন আলো চোখে
আমি শক্ত ক'রে ধ'রে আছি তোমার হাত।-