দুঃখ পেলে মনে হয়, কবিতা আমায় দিয়ে গেল মাটির কাছাকাছি এক বন্ধুগাছ, রূপকথায় হারিয়ে যাওয়া বাবা-মা, অসময়ে চোখের জল ফেলতে পারব এমন হাঁটুগোঁজ ক'রে ব'সে থাকা অসাড় বিকেল। দুঃখে থাকলে মনে হয়, তার সমস্ত দুর্বোধ্য পংক্তিরা কাঁধে হাত রেখে বলছে," তোমার ঐ না-পারাগুলো দিয়ে আমাদের দুটো ডানা বানিয়ে দেবে? দেবে ঐ চেপে রাখা চিৎকার থেকে আশ্চর্য কোনো সুর? ভেতরের অন্ধকার থেকে মায়াপরবশ জ্যোৎস্না?"। কিছুই দিতে পারিনা। কিছুই দিতে না পারলেও কেউ কি থেকে গেছে কোনোদিন? আমি ছেড়ে গেলেও কেউ কি বসে থেকেছে অসীম অপেক্ষায়? কেউ থাকেনা, এতকাল ভেবেছি, শৈশবের স্নেহবন্ধন সরু হতে হতে অচিরেই ছিন্নবস্ত্রের মত ছেড়ে যায় দেহ, আদরের আস্তানা হয়ে ওঠে বদ্ধ কারাগার। কেবল তারই মাঝে, বিষম দুঃস্বপ্ন থেকে জেগে ওঠা তৃষ্ণায় ওরা ফিরে এসেছে বটগাছ হয়ে। সুখের সময় যারা মরীচিকা হয়ে মিলিয়ে যায় শূন্যে। কান্না পেলে বাতাস ভারী হয়ে এলে আবার এসে দাঁড়ায় শত বছরের প্রাচীন ঝুরি নিয়ে। লতায় পাতায় অজস্র অক্ষর, আমার আশ্রয়। যত হারাই তত ফিরে ফিরে পাই। ততবার দেখি হালকা হয়ে এসেছে মন, চারপাশে তখন শুধু জুঁই ফুলের গন্ধ, ফুরফুরে হাওয়া আর সেই চিরন্তন আশ্বাস। ওরা আছে, ওরা থাকবে।
-