এহেন বিকেল তোমার দু'ঠোঁট চেনে
চেনে উড়োচুল ধুলোদের ছোঁয়াছুঁয়ি
টান মেরে তাকে বুকে টেনে নিই যদি
রোদ ঢলে যায় গাছেদের কাছাকাছি
তুমি কি আমার জ্যোৎস্নায় ভেজা কথা?
তুমি কি আমার এক আবদারে হামি?
ঝড় এলে যারা পাশাপাশি এসে বসে
তুমি কি তাদের সোহাগের প্রতিনিধি?
আমি তবে হই চুপতারাদের আলো
তোমার উঠোনে ঝ'রে পড়া শেষ পাতা
দুপুরের প্রেম ম্যাটিনি শোয়ের মাঝে
আমি হয়ে যাই চোখেদের যাওয়া আসা
তোমাকে তখন পাহাড়ের মত লাগে
আমি একরোখা ঝর্ণার রিমঝিম
স্পর্শ নীরব, আগুন করেছো আমায়
এক চুম্বনে বারুদের গান শিখি
পথচলতি কবিতায় ঘোরাফেরা
তুমি তুমি করে বারুদের গান লিখি-
#বালিশ_ছেঁড়া_স্বপ্নধোঁয়া_উড়ছে_উড়ুক
#প্রেম_... read more
এখন তো সে রোদের মাঝে ছায়া
সেই ছেলেটার অলীক যেন চোখ
মেঘের মোড়ক জড়িয়ে দিলাম গায়ে
একফালি দিন অবাধ্যতার হোক
একফোঁটা রাত, স্বপ্ন এবং মায়া
তারায় তারায় বিলিয়ে দেওয়া গান
দেখছি তবু চোখ ফেরেনা কেন?
দিই ভাসিয়ে ছোট্টটি সাম্পান
হাওয়ার টানে পেরিয়ে গেল স্রোত
পেরিয়ে গেল জোয়ার মাপা দিন
ঠাণ্ডা হাওয়ার ঝাপটা নিয়ে মুখে
সেই যেখানে বৃষ্টি বাকি ঠিক
বৃষ্টিহীনও এক চাতকের ঠোঁট
সহজ তো নয় সহজ করে পাওয়া
আদরধোয়া চিলেকোঠার ঘরে
সেই ছেলেটার উথালপাথাল হাওয়া
বকুল ফুলের দিব্যি দিলাম তাকে
যেই ছেলেটার উথালপাথাল হাওয়া-
গুলিয়ে গেছে জলের ওপর রোদ
গুলিয়ে গেছে বৃষ্টিদিনের স্তব
তোমার চোখের আয়না জগৎ খুলে
আমায় করো অবাধ্য আলপথ
আমায় নেহাত শূন্য হতে হলো
হতেই হলো আধেক পড়া বই
ফুরায় যারা খুচরো প্রেমের মত
তাদের আমি একান্ত হইচই
তাদেরকে দাও অন্ধকারের আলো
তাদেরকে দাও পর্দাওড়া দিন
বিষম তাপে বাষ্প হলো যত
সেসব জলের অতীত মাপা ঋণ
সেসব গল্প ছোঁয়ার আগেই সোনা
দুঃখী মেয়ের ভালোবাসার বই
এইতো ছিলাম মানুষ মানুষ বেশ
এখন রাতে নিঝুম হয়ে রই-
কথাদের সমুদ্র দেখা হলোনা।
রাখা হলোনা বালিতে পা, দিগন্তে চোখ।
নদীর চিরবহমান জীবনের
একান্ত পাণ্ডুলিপি নিলাম হল।
ধূসর ছেঁড়া ছেঁড়া অক্ষরে ছিটিয়ে গেল তারা
এপার-ওপার!
নিজেকে ভেঙেচুরে এই গল্পের অন্তিমে
আমিও এখন নীল।
একদা মেঘ ছিলাম,
আমারও পাহাড় ছিল।
তুমি ছেড়ে গেলে!
আমি মানুষ হয়ে ফিরে এলাম।-
আমি অস্থির, এলোমেলো।
অসম্ভব উদ্বেগে প্রাণপণে মুঠো করি হাত।
সংযত মাঝরাত,
আমার দু'হাতে আগুন।
আরো কিছু পুড়ে যাওয়া বাকি,
আরো কিছু পোশাকি ব্যথা
ঘুমের ভেতরে ভেতরে আমায় করুক ছাই।
আমায় স্থানু করো কাল্পনিক ঈশ্বর!
এ রুদ্রনৃত্য শেষে
নতুন জন্মের গহ্বর থেকে উড়ে যাক
সেই আশ্চর্য ফিনিক্স!
-
মানুষ খুঁজতে খুঁজতে
আমিই না-মানুষ হয়ে গেলাম।
একান্ত কৈশোরে
আমার চোখ না বাঁধার স্বপ্ন
আমায় ছেড়ে হেঁটে চলে যাচ্ছে অনেক দূর।
এখন শুধুই গান্ধারীজীবন।
আনন্দ অলীকই।
এখনও কথার ওপরে কথা ছড়িয়ে দিচ্ছি
নিস্পন্দ শ্মশানে।
ভেতর ভেতর জানি
নীরবতাই আমার শ্রেষ্ঠ সাজ।
-
সেই স্তব্ধতা আমি চিনি।
যেখানে জল স্নিগ্ধ অচল,
একা একা বসে থাকি ভিজে।
আমারও আঁচল লুটিয়েছে কারো পায়ে।
একদা যত ফুল ফুটেছিল গানে
তাদেরও প্রাণের বায়ু
এমনি বালির পরে জ্যোৎস্নার মায়া মেখে
হয়ে যায় ক্ষয়!
আর তুমি আমি, আমাদের প্রেম
কোন্ মুখে করি অমরত্বের আশা?
ভালোবেসেছ ঋত?
এসো তবে
সময়ের মরীচিকা জলে
আজ তোমারও স্নান।-
দিন কি আমার মৌতাতে যায়
বিকেলঘুড়ি স্পর্ধা চেনায়
আকাশ ছিঁড়ে গণ্ডি হারায় সুতো
সবার মাঝে একলা হলাম
বন্দীঘুঘুর দুঃখ হলাম
সে কার চোখে হারিয়ে যাবার ছুতোয়
সেই মনেতেই গলছে সোনা
বিদ্যুতে আর চমকাবোনা
ঝুমকো ঝড়ের হারিয়ে যাবে ধুলোয়
ওড়নাটি তার বাঁধনি ছাপের
মনখারাপের নভেম্বরে
বৃষ্টি হয়ে জুড়ায় মেঘের ক্ষত
হেমন্তে সে আসবে জানি
নীল কুয়াশার সুরমাদানি
তোমার তো আর পাইনা দ্যাখা অত
তারপরে দিন আসবে আবার
আলোর ঢলে জীবন উজাড়
ফানুস উড়ায় মানুষ রাতের যত
দেদার বিকোয় আতশবাজি
মন পোড়ানো সে ফুলঝুরি
এ কোন্ আলোয় আমিও চন্দ্রাহত-
তুমি আমি আর এই যে ইশারা
সহজ কোমল আহ্লাদী
অথচ
যা কিছু জলের মত সহজ,
মুঠোয় ধ'রে রাখা যায়না চিরকাল
চুঁইয়ে প'ড়ে যায় যদি
আমাদের বোঝাপড়া?
ভয় কি!
সমুদ্রের মত দুই বাহু বাড়িয়ে দিতে পারো যদি
আর মহাকর্ষের মত প্রেম...
আমি আছি
আর আছে নক্ষত্রের আশ্বাস,
এই বেলাভূমিতে সর্বস্ব হারিয়ে বসে থাকা এক নারী!
দ্যাখো তার ভীষণ শূন্যের মাঝে যদি কিছু খুঁজে নিতে পারো।-
দুঃখ পেলে মনে হয়, কবিতা আমায় দিয়ে গেল মাটির কাছাকাছি এক বন্ধুগাছ, রূপকথায় হারিয়ে যাওয়া বাবা-মা, অসময়ে চোখের জল ফেলতে পারব এমন হাঁটুগোঁজ ক'রে ব'সে থাকা অসাড় বিকেল। দুঃখে থাকলে মনে হয়, তার সমস্ত দুর্বোধ্য পংক্তিরা কাঁধে হাত রেখে বলছে," তোমার ঐ না-পারাগুলো দিয়ে আমাদের দুটো ডানা বানিয়ে দেবে? দেবে ঐ চেপে রাখা চিৎকার থেকে আশ্চর্য কোনো সুর? ভেতরের অন্ধকার থেকে মায়াপরবশ জ্যোৎস্না?"। কিছুই দিতে পারিনা। কিছুই দিতে না পারলেও কেউ কি থেকে গেছে কোনোদিন? আমি ছেড়ে গেলেও কেউ কি বসে থেকেছে অসীম অপেক্ষায়? কেউ থাকেনা, এতকাল ভেবেছি, শৈশবের স্নেহবন্ধন সরু হতে হতে অচিরেই ছিন্নবস্ত্রের মত ছেড়ে যায় দেহ, আদরের আস্তানা হয়ে ওঠে বদ্ধ কারাগার। কেবল তারই মাঝে, বিষম দুঃস্বপ্ন থেকে জেগে ওঠা তৃষ্ণায় ওরা ফিরে এসেছে বটগাছ হয়ে। সুখের সময় যারা মরীচিকা হয়ে মিলিয়ে যায় শূন্যে। কান্না পেলে বাতাস ভারী হয়ে এলে আবার এসে দাঁড়ায় শত বছরের প্রাচীন ঝুরি নিয়ে। লতায় পাতায় অজস্র অক্ষর, আমার আশ্রয়। যত হারাই তত ফিরে ফিরে পাই। ততবার দেখি হালকা হয়ে এসেছে মন, চারপাশে তখন শুধু জুঁই ফুলের গন্ধ, ফুরফুরে হাওয়া আর সেই চিরন্তন আশ্বাস। ওরা আছে, ওরা থাকবে।
-