আরও একটু সময় দাও, শিরদাঁড়াটা সোজা করি ;
ফসকে যাওয়া মুহূর্তগুলো, ভাবনায় সুখ-স্বপ্ন গড়ি।
আরও একটু ইচ্ছা দাও, নিজেরে গড়তে পারি রোজ ;
নৈঃশব্দতায় ঘর বেঁধেছি, কেউ নিও না আমার খোঁজ।
-
সবুজের নেশায় বুঁদ পাহাড়,
হঠাৎ প্রচণ্ড রোদ্দুরে হাসতে থাকে ভেজা-ভেজা খামে...
কাটাকুটির অঙ্ক ভুলে তক্ষুনি হয়ে যাই মাজুলি দ্বীপের মতই নিঝুম
বর্ষা-শরত ওলট-পালট! আরেকখানা তিস্তানদী মনের কোণে
নীল ফুলের মতো অবাধ বিষণ্ণতা হয়তো গোণে
আমি তবু মুছে যেতে থাকি সমান্তরালে!
আমি তবু মশারির আড়ালে বাড়তে থাকি ধীরে ধীরে বুনোলতার জঙ্গলি ফুলে
শ্যাওলাধরা বন্দরে! তোমাদের থেকে বহুদূরে!
দেখো আমার নুব্জ অক্ষরগুলোর ছাপে কেমন ঘাসের তীব্র মেঠো সুগন্ধ!
অনেকটা পাহাড় রয়ে গেছে মুঠোর ভেতর, অনেকটা বন রয়ে গেছে!
- An Obscure Existence
-
মুখোশের মিছিল জমছে খেলাঘরে
তবুও হরতনের হৃদয়ের আঁধারে
চরিত্রদের আড়ালে খুঁজছি আরশিনগর
আমি, কলম হারানো নাট্যকার!
-
বন্ধুর আড়ালে,
দেখতে পাই নি ছিল পূর্ণচ্ছেদ, কোলন, যতি
আমার রাস্তায় আলোকবর্ষে এতই কি গরমিল জ্যামিতি!
অনেক আঙুলের মুখর মিছিল ধাক্কা দেয় খিড়কির বিবর্ণ কপাটে
সুরকির আস্তরন খসে পড়ে... হাওয়া কোলাহল তোলে কাঠে-ইটে
ইলেকট্রনের বিয়োগান্তক খেলায় আমি তো বরাবর আনাড়ি!
তাই সমাজের আস্তানা থেকে বহুদূর সময়বিন্দুতে সাজাই ঘরবাড়ি
দিনলিপির মুখরা জুড়ে কুড়িয়ে তুলি নিঃসঙ্গতা...
নিজেও বদলে যাই... হঠাৎ নিঃসঙ্গতায়!-
হৃদয় জুড়ে শুধু,
বীজপত্র মেলছে অগ্রন্থিত গুচ্ছ-গুচ্ছ স্বর্ণলতা
বুনো দেওয়াল-প্রাচীর বেয়ে একফোঁটা বারোয়ারী ঝুলবারান্দা
নিভৃত মরচেধরা খয়েরি কাঁটাফুল পর্যন্ত! অস্ফুটে কয়েকটা বিরুৎ প্রশ্বাস
নিষ্ফল অক্সিটোসিনকে হারিয়ে আশ্রয় খুঁজছে বারোমাস
পরগাছা এই বনখণ্ড থেকে ভুলে যাচ্ছি রোজ কোনদিকে বাতাসের খেয়া
ভেতরে ভেতরে ওরা দরখাস্তে চেয়েছে আমার হয়ে ইউথ্যানশিয়া!-
পুরোনো ছবি ঝাপসা হয়ে আসে,
নিউরোনের অ্যালবামটার পাতা উল্টে উল্টে একা
বিয়োগ করে যাই ক্রমাগত হাতের ভাঁজের কয়েকটা বক্ররেখা
ঝুম বর্ষা নামে স্মারক-শহরে... নিজস্ব কাহিনী থেকে আরো খানিকটা দূরে
প্রচণ্ড ঝুল-কালি মাখাই পরিচিত ব্রহ্মান্ডটা জুড়ে
ঘনীভূত অন্ধকারে ঘুন ধরতে ধরতে ডুবে যায় ব্ল্যাকহোল!
তারপর জেগে থাকি! নিজেই নিজের ভুল, ভুলের মাশুল!-
এ লড়াই নিজেরই সত্তার সাথে সত্যের!
হস্তরেখার এলোমেলো পথচলায় নিঃসঙ্গ, ভীষণ নিঃসঙ্গ আমার ঘর
তাও নাটকের দেওয়ালে দেওয়ালে অন্তর্বাহী ঝড়ে
চরিত্রকে ভালোবেসে অসংলগ্ন হয়ে যায় সংলাপ
বিক্ষত জীবনের মাঠ জুড়ে শুধু অবিরাম নিয়ন আলোর প্রলেপ!
দীর্ঘশ্বাস! একটা দীর্ঘশ্বাসের আড়ালে সহস্রাব্দের যুদ্ধ এবার!
-
সংখ্যার লেখচিত্রে পরিচয় খোঁজার এ নিরন্তরে
উচ্চারিত অঙ্কের দুনিয়ায় শেষমেষ
দশমিকের বাঁপাশে ভাগফল অনুভূতির দেশ
হারাচ্ছে সাদা পাতার প্রান্তরে
শূন্যাধার বিভাজনরেখার সীমান্তে উদ্বাস্তুর ভিড়ে!
-An Obscure Existence
(soumanti Sinhababu)
-
আরও অনেক দূরে
যক্ষের মেঘদূত বৃষ্টি হয়ে ভেঙে পড়ে ব্যথার শিহরনে
অন্ধকার ঝাপসা নিরাশা একলা আড়ালের আবডালে
বালিশে চাপা দেওয়া দুঃখ কি আর শতভিষা হয়ে আকাশে জ্বলে?
সমান্তরাল মহাবিশ্বেরও বুঝি আস্তে আস্তে বয়স বাড়ছে, অণুতে আঁধার সয়ে!
মাঝে মাঝে মনে হয় স্রষ্টাও আমাদেরই মত জেগে আছেন যন্ত্রনার রাত, নিয়ন আলোয়!
তবু তাঁর ঠিকানা এখনও অনেক দূর!-
বুঝতেই পারিনি সহ্য করার অজুহাতে
অবসাদকেই ভালোবাসতে শিখেছি কবে!-