তোমার মতোই ভুরুর মাঝে টিপ, ওরাও জানে আঁকতে নিপুণ হাতে
কাজল চোখে চাইতে জানে ওরাও,ডাকতে পারে চটুল ইশারাতে!
টোল পড়তো ওদেরও লালীম গালে, তোমার মতোই হাসতো দুলে দুলে
নাইতে গেলে প্রখর দুপুর বেলা, শাড়ির ভাঁজে মেঘ আনতো তুলে!
শরীর জুড়ে মাতাল মহুল নেশা, নিষিদ্ধ ডাক কুসুম কোমল ঠোঁটে
তোমার মতোই বাসতে পারে ভালো, দুমড়ে মুচড়ে নিজেকে নিঃশেষে!
'চাঁদনী রাতে সবাই গেলে বনে,' ওরা আসে গোপন অভিসারে
মোম চুঁয়ানো নীল কুয়াশার জলে, তোমার মতোই ভেজায় আঁচল খুলে।
তোমার মতো ওরাও অভিমানী, জমাট বুকে কষ্ট রাখে চেপে
ওরা আমার অবুঝ কথার মালা, তোমার মতোই ছন্দে বাঁধি যাকে।-
চলে যাবো, জানি যেতেই হবে
ঝরবে বকুল পথের কান্না মেখে
ধূপের ধোঁয়ায় উড়বে দীর্ঘশ্বাস
বিয়োগ ব্যথায় পথটি যাবে ঢেকে
কষ্ট হবে ভীষণ কষ্ট হবে
পোষ না মানা বুকের খাঁচাটিতে
চায়ের কাপে হাত ছুঁয়েছে যে
ঠোঁট ছুঁয়েছে শেষ প্রহরের রাতে
সব থুয়ে যে আমাতে নিঃস্ব
কেমন করে ভাসিয়ে যাবো তাকে
ভাবুক মনের ভাবনা তাকে নিয়ে
এছাড়া নেই মৃত্যুতে আক্ষেপ।
আমার কথা কাঁদায় যদি তাকে
ভেজায় এসে বুকের নরম মাটি
তারই তরে লিখছি মনের কথা
আবেগ দিয়ে ভরছি চিঠির ঝাঁপি!-
এই যে এমন বৃষ্টি ঝরার দিন, মেঘ নেমেছে পাতার ফাঁকে ফাঁকে
ভিজছে কারো অপেক্ষার ঘর, ডুবরী চোখের নোনতা জলের কাছে!
মনের ভেতর পুড়ছে কারো মন, বিবশ ব্যথায় বুকের হাহাকার
পুড়ছে যখন অপেক্ষার ঘর, ভুলেছে কেউ ফেরার অঙ্গিকার
শূন্যে আঁকা অবাক বেবাক দিন, রাত ফুরোলে দৃষ্টি পথে পাতা
অবহেলায় অপেক্ষার ঘর, কড়ি বরগায় ঘুণপোকাদের বাসা
আশায় তবু মিথ্যে বাঁচে কেউ, স্বপ্নে বেচে ঘুম শহরের ঝুম
ভেঙে পড়া অপেক্ষার ঘরেও, সাজিয়ে রাখে বাহারী মরশুম!-
কিছু সততার গাছ
কিছু ফুল মানবতার।
বাকি সব
ঝরে যাক, ঝরে যাক
দুঃখের মতো যত গাঢ় অন্ধকার!-
ছুঁয়ে থাকো তুমি চঞ্চল কৈশোর
স্বপ্নীল চোখে এঁকে দাও আল্পনা
লাল নীল কিছু সুখ বুনে দাও তাতে
হাতের মুঠোয় রেখে দাও চুনিপান্না
ছুঁয়ে থাকো তুমি উদ্দাম য়ৌবন
বুকে যার ওঠে যোজনগন্ধা শ্লোক
দামাল রক্তে মাতাল মহূল নেশা
কিছু করবার অদম্য যার ঝোঁক!
আলোছায়া ঘন সাঁঝের বারান্দায়
কানের দুপাশে চশমাটি আঁটোসাটো
পোড় খাওয়া কত অভিজ্ঞতার ঝুলি
পড়ন্ত বেলায় তাকে তুমি ছুঁয়ে থাকো।
ধ্যানমগ্ন এক ডাকের অপেক্ষায়
যে রয়েছে বসে খোলা জানালার পাশে
ছুঁয়ে দাও তার কাঁপা কাঁপা দুটি ঠোঁট
ছুঁয়ে থাকো তারে শেষবার ভালোবেসে।-
তোমার কাছে কি আর হবে বলে
জমাট ব্যথার রঙ হয়েছে নীল
কি হবে আর দুঃখের কাহন গেয়ে
তোমার চোখে বৃষ্টি যখন অমিল!
চাইছি যখন তোমায় ক্ষতের পাশে
শান্তিবারির কলস ভরা জল
বেলজিয়ামের সুদৃশ্য আয়নাতে
আঁকছো তুমি নিপুণ হাতে কাজল
বেহাগ রাগে ফুটেছে কোথাও পলাশ
তোমার ঘরে বসন্ত উৎযাপন
ভীষণ জ্বরে পুড়ছে আমার গা
সে কথা থাক তোমার কাছে গোপন
চাঁদ সোহাগী মধ্যরাতের যামে
গলিত ধারা পড়ছে যখন ভুঁয়ে
তুমি কারো ঠোঁট রেখেছো ঠোঁটে
ছোঁয়াচে প্রেম বাড়ছে শরীর ছুঁয়ে
আমার তখন দুঃখ বোনা রাত
ব্যথার ভারে পড়ছে চুঁয়ে চুঁয়ে-
জীবন কেমন চলছে?শোন বলছি তোমার কাছে,
বৃষ্টি যেদিন এলো সকাল বেলা, সেও এলো তার সাথে।
খেলনাপাতি নামিয়ে তাকের রাঁধলো পিঁড়ি পেতে...
'বললে দাদাই' খাবে এসো,আম দিয়েছি ভাতে!
পাতার লুচি, ধুলোর ভাতে আমসত্ত্ব মাখা,
এমন করে রাঁধতে পারে কেউ কি জানে সেটা!
আঙুল চেটে বলতে হলো, বেশ রেঁধেছো দিদি!
'দেখতে কেমন শক্তি হতো,' রোজ দিতো কেউ যদি।
গাল ফুলিয়ে বললো মেয়ে, 'আমি তো আছি নাকি'
রোজ রাঁধবো তোমার জন্য খাঁটি ঘিয়ের লুচি।
এখন এসো আমরা দুজন খেলবো লুকোচুরি...
চোর পুলিশের লড়াই হবে, মজা হবে ভারি!
খেলতে খেলতে কখন যেনো সন্ধ্যা নেমে এলো!
টের পাইনি কিচ্ছুটি তাই জ্বালিনি ঘরে আলো।
হঠাৎ দেখি মিষ্টি কোথাও নেইকো কাছেপিঠে
এ-ঘর ও-ঘর খুঁজে মরি পাইনি কোথাও তাকে!
যেমন হঠাৎ এসেছিলো তেমনি গেলো চলে....
আজও আমার থমকে সময় ধুলোর খেলার ছলে
সবাই বলে আমার নাকি এসব মনের কল্পনা
মিষ্টি নামে কেউ আসেনি, কক্ষনো কেউ ছিলোনা।
বয়স হলে এসব নাকি ভীমরতিতে ধরে...
আমি ভাবি মিথ্যা যদি, তবে চোখ কেন জল ভরে!
স্মৃতির ভারে কাটছে জীবন, কাটছে ভেবে তাকে
হয়তো কোথায় পাবো খুঁজে, ভুবনডাঙার মাঠে।
-
খাঁখাঁ বিরান চাঁদের আলোয়
একটা রাতের কালসিটে জ্বর
স্মৃতির বোনা নকশীকাঁথায়
জাগছে চোখে ব্যথার কাজল
একলা দিনের দুঃখ যাপন
এলোমেলো দমকা হাওয়ায়
চলছে জীবন ঘুড়ির সুতোয়
যাচ্ছে উড়ে হাতের লাটাই
ঝরছে বকুল রোদন বুকে
বিষাদ সকাল বিষন্ন মুখ
শূন্য ঘরে দৃষ্টি বেবাক
হাতড়ে মরে একমুঠো সুখ
সব হারানোর যন্ত্রণাদের
লুকিয়ে রাখা দেরাজ খুলে
আলতো হাতে বুলিয়ে আদর
গা মুছে দিই শোকের জলে!-
জানতে চেয়োনা আমরা কেমন আছি
দূরত্বে সরেছে মাথার বালিশ দুটি
জানতে চেয়োনা নাছোড়বান্দা জ্বরে
কে কার কপালে হাত রেখে তাপ মাপি!
হিংসার বীজ কে রেখেছে মাঝে পুঁতে
কর গুণে গুণে কার হাতে বিদ্বেষ
জানতে চেয়োনা বিষাক্ত নীল ঠোঁটে
কার চুম্বনে মৃত গোলাপের দেশ!
বৃষ্টির মতো কার জেদ ছিলো বেশি
আগুনের মতো কে পুষেছে বদরাগ
জানতে চেয়োনা ঘষা পাথরের মতো
কার বুকে কত ক্ষয়ে গেছে অনুরাগ।
অভিমানে কার পাহাড় হয়েছে ভারী
সাগর নদী কার চোখে বহমান
কে কার বিরহে তুষের মতো পোড়ে
জানতে চেয়োনা জীবনের খতিয়ান।-