তুমিও যদি আসতে আমার পৃথিবীতে,
আসতো নেমে উড়ো মেঘ শহর ঘেঁষে-
সে সব মেঘ ফিরত না আর এমনভাবে,
নামত তারাই এক সমুদ্র ভালোবেসে...
তুমিও যদি ঘনিয়ে আসো যেমন ভাবে,
পৌষালি হিম বিনিদ্র রাতে ধূমায়িত হয়-
আমিও তোমায় চক্রবালের পদক্ষেপে,
অস্তরাগের ছোঁয়া দিতাম কুয়াশা আলোয়...
তুমিও যদি ওষ্ঠরাগের রং ছড়াতে,
যেমন করে অস্ত রবি আলাপ জমায়-
কাশফুল আর শরৎ স্নিগ্ধ চোখের জলে,
দিগন্ত শুধু অভিভূত হত গেরুয়া আভায়...
তুমিও যদি আসতে আমার পৃথিবীতে,
আসতো উড়ে ফাগুন হাওয়া আদিম হয়ে-
সে সব হাওয়া ফিরত না আর এমনভাবে,
নামত তারাই ঘাসের উপর শিশির হয়ে...
-
কিছু বৃষ্টি হয় মনখারাপের। একলা
জানলার পাশে চায়ের পেয়ালায় চুমুক।
কালো মেঘের দেশ থেকে ভেসে
আসা বুক চাপা দীর্ঘশ্বাস।
যে প্রেম পূর্ণতা পেলো না তার স্মৃতি।
পাতা ঝরা বৃষ্টির টুপটাপ শব্দ। দুপুর
দিনে দুপুর রাতের অন্ধকার। এক
ছাতার তলায় দুজনের শহর।
এফ এম-এ "আমার মেঘলা আকাশ
বৃষ্টি তোমাকে দিলাম", বাস্তবেও।
জুতো মোজা ভিজে যাওয়ার অজুহাতে
ক্লাসরুমে খালি পায়ে হেঁটে বেড়ানো।
কাঁদা মাঠে আছাড় খাওয়ার হাসি।
জোরালো বাতাস, খুলে রাখা পৃষ্ঠার
সরসর, শার্সি ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়া জলপথ
আর তুমি...
-
মেঘ মুলুকের আঁধার বুনোন,,
গায়ে জড়ানো জলজ বাতাস-
শহর দেওয়াল গড়িয়ে পড়ে,,
শ্রাবন ধারার উদাসী আভাস...
ঘোলাটে মেঘের কান্নাকাটি,,
তোমার চোখের কাজল যেমন-
আর কিছু আজ চাইনা শুধু,,
তুমিও থাকো পাশেই এমন...-
তুমি যদি হও, অবকাশ শুধু আজকের-
আমি বিনিদ্র রাতে থাকবো তোমায় ঘনিয়ে...
তুমি যদি হও, বালুচর ঐ আগামীর-
আমি অস্তরাগের আলাপ দেব জমিয়ে...
তুমি যদি হও, কোলাহল এই শহরের-
আমি অ্যালবাম হয়ে ছায়াছবি শুধু রাখবো...
তুমি যদি হও, উদাসীন রোদ দুপুরের-
আমি আনমনা হয়ে নিস্তব্ধতা গায়ে মাখবো...
তুমি যদি হও, প্রহেলিকা এক পৃথিবীর-
আমি অবিরত সুখে কুয়াশায় তাকে মানাব...
তুমি যদি হও, আচ্ছন্নতা কোনো প্রেমিকের-
আমি ব্রহ্মান্ডের দর্পণে তাই জানাবো...
তুমি যদি হও, মরশুম চির কষ্টের-
আমি আলিঙ্গনে চোখপাতা ভারি করবো...
তুমি যদি হও, নক্ষত্র কালো নিশীথের-
আমি নাবিকের মতো তোমাতেই পথ খুঁজবো...-
তার হাত ছেড়ে যদি চলে যেতে চাও,
তবে যাও, সেতো বড়োই সহজ ;
তার হৃদয় থেকে নিজেকে বার করে,
কেমন করে যাবে?-
বহুদিন পর আবার আকাশ দেখা
বহুদিন পর মাটি গন্ধের চাদর-
অগোছালো মন অযাচিত প্রেম চায়,
চায় শুধু শুধু তোমার দমকা আদর...
শহরে ভীষণ মেঘ জমেছে স্মৃতির,
পলাতক ধুলো জমতে জমতে ওড়ে-
চুঁয়ে নামে কাঁচা রং ক্যানভাসে,
একলা তুমিও হাঁটো ফুটপাথ ধরে...
বহুরাত পর আবার একটু ঘুম,
এখনো শহরে ট্রাফিক আলো জ্বালা-
চোখের তলায় কয়লা ঘষেছ যত,
আজকে তাদের ধুঁয়ে ফেলবার পালা...-
তোমার দেওয়া মুহূর্তরা বন্দী আছে,
শেষ বিকেলের কাতর আলোর অনুরোধে...
জাফরানি রোদ যত দিগন্ত-ই দখল করুক,
অন্ধকারের কাজল লাগায় দুঃখবোধে...
তোমার দেওয়া অনুভূতিরা দিব্য আছে,
শেষ ট্রেন-টার মরা বাল্বের আলোছায়ায়...
তন্দ্রাতুর যাত্রী যতই ঘুমিয়ে পড়ুক,
সদ্যজাত ঝাঁকুনি শুধু তাকেই জাগায় ...
তোমার দেওয়া স্মৃতিগুলো টাটকা আছে,
শেষ পৃষ্ঠায় বন্ধ বইয়ের নীরবতায়...
আলিঙ্গনে দূর্বা যতই জড়িয়ে ধরুক,
শিশির তবু সাফল্য খোঁজে ঝরে পড়ায়...
তোমার দেওয়া স্বপ্নগুলো একলা আছে,
শেষ তারাটার বিদায় নেওয়ার পদক্ষেপে...
সরপড়া ভোর আঁজলা আলো যতই দিক,
মরশুমি মেঘ ভারী হলে নামেই ঝেঁপে...
-
তোমার আমার ব্যবধান আজ যত ,
উদাসীন হয়ে জড়িয়ে আমায় ধরে -
গভীর কুয়োর শূন্যতা উঠে এসে ,
মরা মানুষের মতোই আবার মরে ...
দূরে দাঁড়িয়ে আমিও অপেক্ষায়,
যেমন বিষণ্ণ ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকে একা -
শীত কাতুরে আলো সেই আমাদের,
কুয়াশা চাদরে আর যায় না যে দেখা...
আকাশ উঠোনে হামাগুড়ি দেওয়া মেঘ,
শ্লথ গতিতে বসতে থাকে মনে -
নির্জনতার কবর যতই গভীর হয়,
কাঁড়ি কাঁড়ি শুধু অন্ধকার এসে জমে...-
পৃথিবী পটে ঘুমিয়ে আছে ব্যস্ত সময় আজকে কেন ?
দমকা পাতার স্পর্শ ভিজে কাঁপন ধরায় তুহিন যেন...
হিমাভ হাওয়ায় মেঘলা নদীর কৃষ্ণ আঁধার কেমন বল ?
দেওয়াল ঋতুর চিত্র আঁকি আমরা দুজন আবার চল ...-