চেনা মুখ অচেনা হয় সময়ের স্রোতে,
কষ্টগুলো দলা বাঁধে গ্রীবার সম্মুখে
সবচেয়ে কঠিন কাজ, তা কি তুমি জানো?
পাল্টাতে দেখেও সইতে পারা, অভ্যেস পালটানো।

-

বলতে চেয়েও হয় না বলা অনেক কিছু কথা,
তুই কি বুঝিস আমার সেই সরব নীরবতা?

-

~'শোননা,একটা ভুল করেছি, ওকে কিভাবে সরি বলি বলত?'

~ 'সরি বলার দরকারই নেই, বরং শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরিস, জড়িয়ে রাখিস অনেকক্ষণ, হাজারটা সরির চেয়ে অনেকটা বেশি দামী রে এটা।'

©শুভাশিস

-

বৃষ্টিদুপুর বিরহ আনে মনখারাপের নীরবতায়,
সব অতীতকে চাইলেই কি আর ভবিষ্যতে পাল্টে ফেলা যায়?

-

রাত্রিগুলো গল্প খোঁজে একলা থাকার ব্যস্ততার,
মোবাইল স্ক্রিনে রাত কেটে যায়, মিথ্যে এক নীরবতার।

-

জন্মের পর প্রথম যে শব্দটা বলেছিলাম সেটা হল 'মা'। প্রথম চোখ খুলে হয়ত তোমাকেই দেখেছিলাম। কোনদিন হয়ত বোঝাতে পারিনি কতটা ভালবাসি, কিন্তু তুমি জাননা হয়ত নীরবে অনেকটা ভালবাসি তোমায়। প্রতিদিনের তোমার-আমার হাজারো দ্বন্দ্ব, মতের অমিল, আমার রাগ, তোমার কথা না বলা, মনোমালিন্য সব কিছুর মাঝেও জানি তুমি আছ। এখনও জানি আমি রাত করে বাড়ি ফিরলে তুমি না খেয়ে আমার খাবার নিয়ে বসে থাকবে, দুপুরে মাছের সব থেকে বড় পিসটা তুমি আমার জন্য সরিয়ে রাখবে, এখনও জ্বর হলে তোমার স্পর্শ কপালে পেতে বড্ড ইচ্ছে করে, আমার জন্মদিনে কেক কাটার হয়ত অনেকে আছে, কিন্তু তোমার হাতের পায়েশটা না খেলে জন্মদিনটা অসম্পূর্ণই থেকে যায়। বাবার সাথে সব কিছু শেয়ার করা যায় না, কিন্তু তোমায় কেন জানিনা সব কিছু বলা যায়, প্রথম প্রেম, প্রথম সিগারেট, প্রেমিকার সাথে ঝামেলাটাও তোমায় বলেছি, কেন জানিনা মনে হয়েছিল তুমি বুঝবে। ১০মাস, ১০দিন গর্ভে ধারণ করেছিলে যে, আমায় তোমার থেকে ভাল আর কে বুঝবে বল? জীবনে যত সমস্যাই আসুক না কেন, যখনই মনে হয়েছে আর বুঝি সওয়া যায় না, এ পৃথিবীতে কি একজনও নেই যে আমায় বুঝতে পারে, তখনই মন থেকে কে যেন বলেছে 'মা' আছেন। কোথায় যেন একটা পড়েছিলাম, 'ঈশ্বর মা সৃষ্টি করেছিলেন, কারণ তিনি সব সময় থাকতে পারবেন না বলে', সত্যিই তাই। পৃথিবীতে হয়ত কুসন্তান অনেক আছে, কিন্তু কুমাতা একজনও নেই।

#HappyMother'sDay

©শুভাশিস

-

এই বৃষ্টিভেজা রাতটা তোমায় দিলাম,
আমায় সিক্ত কর তোমার প্রবল বর্ষণে।

©শুভাশিস

-

এই করোনা শিখিয়ে দিল পরিবারের মানে,
এই করোনা শিখিয়ে গেল ধর্ম নয়, ভরসা রেখ বিজ্ঞানে।

এই করোনা শিখিয়ে গেল একতাই সবার ওপরে,
ভালবাসা পারেনি, ভয় আজ হাত মেলাল হিন্দু-মুসলমানের।

এই করোনা শিখিয়ে গেল স্বল্পে বেঁচে থাকার মানে,
বাঁচার জন্য বিরিয়ানি নয়, ভাত-ডালটাই লাগে।

করোনা শেখাল মানুষ নয়, প্রকৃতিই আসল রাজা,
অহংকারী মানুষ এখন নিজের দোষেই পাচ্ছে সাজা।

করোনা শেখাল বিলেত আমেরিকার মিথ্যে যত বড়াই,
দিনের শেষে সবাই সমান, তাই এবার হানাহানিটা বন্ধ করি সবাই।

করোনা তুমি পেরেছ শেখাতে, দিয়েছ কঠিন শাসন,
করোনা তুমি চলে যেও শীঘ্রই, শুধু রেখে যেও তোমার চাবুকটা।

©শুভাশিস

-

আবার আমাদের দেখা হবে, বন্দীদশার শেষে
অভিমানগুলো জমিয়ে রাখিস, মাখিয়ে দিস বুকে এসে।
এখন আমার পায়ে বাঁধন, হাতে শেকল পরা;
শহরটাও ঘুমাচ্ছে আজ, জোনাকির স্তুপে মোড়া।
শহরে আজ অমাবস্যা, হাসি গেছে ঢেকে
তবু জানি একদিন সব ফিরবেই, বিশ্বাসকে সামনে রেখে।
সেদিন আমার হাতটা ধরিস, বুকে রাখিস মাথা
শহর আবার ফিরুক ছন্দে, বুনুক রুপকথা।

©শুভাশিস

-

তোমার কাছে যাব বলে সেই কবে থেকে অপেক্ষায়। তোমার কাছে যেতে বড্ড ইচ্ছে করছে। লকডাউনের দুনিয়ায় তোমার কাছে যদি আইসোলেশনে যেতে পারতাম। লকডাউনে তুমি কেমন আছ হিমালয়? মানুষের চলালচল নেই, পায়ের হুঙ্কার নেই, একমুহুর্তে যেন পাল্টে গিয়েছে তোমার দুনিয়া। তুমি কি এটাই চেয়েছিলে? তোমারও হয়ত রেস্টের প্রয়োজন ছিল? বলনি তো কোনদিন? এখন কেমন কাটছে তোমার দিনগুলো? গল্প করছ নদীর সাথে? রাতে চাঁদের চুম্বন নিচ্ছ প্রাণ ভরে? জানিনা, কেন তোমার প্রতি এরকম দুনির্বার আকর্ষণ অনুভব করি! হয়ত কোন জন্মে জন্মেছিলাম তোমার কোলে। হয়তবা একটা ছোট্ট পাহাড়কোলের গ্রামে। তোমাকে ভীষণ মিস করছি, ইচ্ছে করছে এক্ষণি ছুট্টে যাই। ঘরবন্দী যদি থাকতেই হয় তোমাতে বন্দী হব। তোমার কোলে মাথা রেখে সূর্যের আলো মাখব, কফিকাপে চুমুক দেব। ভাল থাক হিমালয়, এখন তোমার বিশ্রামের সময়। এই সময়টা তোমার একার, প্রাণ ভরে নিশ্বাস নাও, সঞ্চয় করে রেখ। বন্দীদশার শেষে আসছি তোমার কাছে, তোমার সঞ্চয়ের ভাগ নিতে।

©শুভাশিস
১৩ই চৈত্র, ১৪২৬

-