তুমি একদিন হঠাৎ বলেছিলে,
আকাশটা আজ খুব মেঘলা
আমি বুঝতে পারছিলাম
তোমার মন খারাপ, তুমি খুব একলা।
আমার চুলে হাত বুলিয়ে বলেছিলে,
চুলগুলো সব জট পাকিয়ে এলোমেলো
আমি বুঝেছিলাম তোমার মনে ঝড় উঠেছে
তোমার মন আলিঙ্গন চাইছিলো।
এক বিনিদ্র রাতে তোমার ঘুম ছিলোনা
তুমি সারারাত ছিলে জেগে,
আমি বুঝেছিলাম, তুমি এক সমুদ্র কবিতা লিখতে চাও
শীতের পরিযায়ী পাখি সেজে।
অনেকদিন নিস্তব্ধতার পর, তুমি বলেছিলে
তুমি পাহাড় ভালোবাসো, ঝরনা হয়ে ঝরতে চাও
আমি বুঝেছিলাম, পালাতে চাও তুমি
খোলা আকাশ দেখতে চাও।
✍🏻 সৃষ্টি
-
বহুদিনের ঝড়ের পরে
প্রেমের রঙে মরচে ধরে
খেলনা বাটি ঠোঁট ফুলিয়ে
মনের ভিতর গুমরে মরে।
ঝড়ের পরে মাটির পুতুল
পথের ধারে গুঁড়ো গুঁড়ো
নোনা ধরা লাল রক্তেও
আমার পুতুল হয়নি বড়ো।
উঠোন জোড়া ঘর ছিলো তার
পুতুল আমার সংসারী মেয়ে
ঝড়ের পরে টুকরো ঘর
চোখের জলে কুড়িয়েছে সে ..
পুতুল আমার পূর্ণা আজ
নিজের পায়ে নিজেই চলে,
জমাটবদ্ধ ভালোবাসাকে
খুব সহজেই উড়িয়ে চলে।
তপ্ত রোদ গায়ে মেখে
পুতুল এখন সংসারী মেয়ে
আমার পুতুল স্বাবলম্বী
ঘাটে বাঁধা নৌকার চেয়ে।
✍🏻 সৃষ্টি
-
শেষের দিনে দাঁড়িয়ে আছি,
কত গুলো অধ্যায় শেষ করে..
আবার গল্প লেখা হবে কাল থেকে
নতুন করে বেঁচে ফিরে আসার পরে।
-
শহরের কোলাহলের মাঝে
নীরবে কাঁদে কত একা প্রাণ
চলো ভালোবাসা দিয়ে কিনে ফেলি আজ
সব যন্ত্রনা আর অভিমান।
যত কথা বলার ছিলো আজ
সেসব কিছুই বলা হলোনা প্রিয়,
তবু মুঠো করে সব ভালোবাসা গুলো
খোলা আকাশে দুহাতে ছড়িয়ে দিও।
অপেক্ষারা ফিরে ফিরে যায়
কত মুখ করে থাকে ভার,
আজও কত রাধারা অপেক্ষা করে
ভালোবাসার রঙ মেখে নেওয়ার।
-
সব আগুন একদিন নিভে যায়
পড়ে থাকে শুধু কালো ছাই।
মুলস্রোতে কেউ ফিরে যেতে চায়
কেউ বা থাকে অন্ধকারেই।
কেউ বা আবার ধোঁয়ার সাথে
কালো পতাকায় মুক্তি খোঁজে
কারোর বন্ধ দরজা প্রিয়,
প্রেমকে বাঁচায় নিষেধ ভাঁজে।
খুব যত্নে কেউ বা আবার
আগলে রাখে খেলনা বাটি
কারোর মুখে ক্ষতের দাগ
কামড়ে থাকে ভিজে মাটি।
কেউ কেউ মৃত্যু খোঁজে
জীবন শেষের বাহানা ধরে
কেউ বা আবার বালিয়াড়িতে
প্রতিশ্রুতির প্রাসাদ গড়ে।
সব কিছুতেই গল্প হয়,
গল্প লেখে চরিত্ররা
ইতিহাস শুধু সাক্ষী হয়
বাদ বাকি সব মনগড়া।
- সৃষ্টি ✍🏻
-
তোমার জন্য ভাঙাগড়া
তোমার জন্যই রক্তস্রোত
তোমার নামেই স্লোগান ওঠে
তৈরি হয় ভাষার জোট।
তোমার নামে বাংলা বাঁচাও
তোমার নামেই বর্নমালা
তোমার কাছেই ভাষা খোঁজে
গরীব লোকের পেটের জ্বালা।
অক্ষরেরা চাপা ছিলো
বস্তা পচা আবর্জনায়
তোমার বর্ন রাস্তার মোরে
শব্দ দিয়ে লড়াই চালায়।
নেশা ধরে তোমার নামে
কি না জাদু বাংলা গানে
মাঝির সুরে সেই গানেতে
ব্রহ্মা বিষ্ণু দাঁড় টানে।
তোমার ভাষার তালে তালে
গান গেয়ে ধান কাটে চাষা,
মোদের গরব মোদের আশা
মোদের গর্ব, বাংলা ভাষা।
রক্ত দিয়ে কেনা তুমি
তোমায় মোরা কেমনে ভুলি
যতই বলুক নেতা মন্ত্রী
'বাঙালী' কে 'বাংগালী'।
- সৃষ্টি ✍🏻
-
কিছু ভালোবাসা আড়ালে বেড়ে চলে
বলা হয়ে ওঠেনা
খরস্রোতাও শান্ত হয়,
স্থির হয় ঠিকানা।
নিন্দুকেরা গল্প বানাক
কল্পনায় ভেসে
বালিয়ারিতেও প্রাসাদ হয়
দুজনের বিশ্বাসে।-
ভালোবাসায় ডাক নামেরা
খুব ছোঁয়াচে,
কথা দেওয়া শব্দেরা কেবল
উষ্ণ আঁচেই বাঁচে।
স্পর্শ পেলে জাপটে ধরে
খেলনা বাটির ঘর
দাড়িপাল্লায় উষ্ণতা মাপে
প্রেমের সুত্র ধর।
যুক্তির চেয়ে মিথ্যে বড়
অক্ষরেরা হার মানে
প্রতি রাতে কান্নার মাপ
শুধু বালিশ গুলোই জানে।
-
নিয়মের মাপকাঠি উপেক্ষা করে যারা
তারাও কিন্তু ছেড়ে যাওয়ার নিয়ম মেনে চলে
তবুও প্রতিটা বিচ্ছেদের গল্পে লেখক,
শুধু এক জনের হেরে যাওয়ার কথাই বলে।
বাস্তবের দাড়িপাল্লায় হার জিত মাপলে
যুক্তি গুলো সব অক্ষর হয়ে জমে,
তার চেয়ে বরং তোমায় জড়িয়ে ধরা মানুষটার বুকচাপা কান্না মাপো,
মরুভূমির বালিয়াড়ি ঝড় যদি তাতে কিছুক্ষনের জন্য থামে।
-
ওপাড়ায় নন্দী দার বাড়িটি ফ্ল্যাট হবে
প্রতিদিন সেই বাড়িটি একটু একটু করে ভাঙার কাজ চলছে
নন্দীদার দুটো বাড়ি পরই থাকে সৌম্য
সৌম্য প্রতিদিন ওই বাড়ির পাশ দিয়ে অফিস যায়
বাড়িটি প্রতিদিন একটু একটু করে ভেঙে পড়ছে
সৌম্যর জীবনের নৌকোও প্রতিনিয়ত ঢেউতে টালমাটাল
প্রতিদিন একটু একটু করে ভাঙার পর আজ অবশেষে পুরো বাড়িটি ভাঙা পড়লো,
একটি কাঁচের শববাহী গাড়ি বাড়ির পাশ দিয়ে একটি মৃতদেহ নিয়ে চলে গেল
গাড়ির ভেতর সৌম্য, আজ ভোরে ও আত্মহত্যা করেছে।-