দেশ তখনই স্বাধীন হবে, যখন দেশের প্রত্যেকটি মানুষ নিজেকে স্বাধীন মনে করবে। একনায়কতন্ত্রের স্বপ্ন দেখা প্রভাবশালী মানুষগুলোর মুখের কথায় আর জাঁকজমকপূর্ণ উদযাপনে কখনই স্বাধীনতাবোধের উদ্ভব হয় না। কোনোকিছুর জন্য বাধ্য থাকা আর কোনোকিছুর জন্য নিজেকে বেঁধে রাখার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে। আশা করি সব ভারতবাসীর মধ্যে চেতনার উন্মেষ হবে। "ভারত আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে।"
-
ক্লান্তি নেই তবু,
চলতে চলতে গাছের ছায়ায় ক্ষণিক জিরিয়ে নেওয়া
আঁজলা ভরা জলের স্নানে অতীত গ্লানি দূর
পথ চিনেছে তোমায়, তুমি চিনছ পথের পথিক
সমস্থানিক সাদৃশ্যতায় থমকে অসীম গতি।
অনেক হল বদলে যাওয়া নতুন দিনের সাথে,
স্থির চোখে আজ তাকিয়ে দেখো ফিরছে ঘরে মন।
এইখানে সেই শেষের শুরু নির্ধারিত অন্ত।
কালের নিয়ম বয়ে যাওয়া, সর্বদা ভঙ্গুর।-
তবুও অতীত পথ রেখে যায় ফেরার
ঝরা পাতাদের সজীবতায় ক্ষণিক
সবুজের স্মৃতি রঙ রেখে যায় বাঁচার।-
সেই গোপন পথের বাঁকে পলাশ বিছায় চাদর
দিনের সাথে ফুরিয়ে আসে লিখিত সংলাপ।
ক্যালেন্ডারে উহ্য তারিখ উড়ছে হাওয়ায় ভীষণ
সেসব বিশেষ দিনের ঘরে শুকনো কালির দাগ।
কোন অজানা ঠিকানাতে লুকিয়ে গেছে ভোর
রাতের শেষে হাতড়ে বেড়াই ঘন অন্ধকার।
স্রোতস্বিনীর চওড়া বুকে পালের দিকভ্রম
অন্য কোনো নদীর তীরে জমছে অভিমান।-
আকাশে মেঘের দল ক্লান্ত হয়ে ঝরে পড়েছে কিছু আগে। ভোর রাতের আকাশ এমনিতেই কালো, তার ওপর ভীষণ গাঢ় ছিল দুচোখের ঘুম। খোলা জানালা পেরিয়ে মাটির সোঁদা গন্ধ আর নির্মল শীতলতা মুছে দিচ্ছিল তিক্ত গ্রীষ্ম রাতের দাবদাহ। একটা বৃষ্টিস্নাত স্বিগ্ধ ভোরের রোদেলা আবেগ মুচকি হেসে ডাক পাঠাল সোনালী খামে অথচ আড়মোড়া ভেঙে সকালের ব্যস্ততা ঘিরে ধরছে বাসি বিছানার নরম আলসেমি।
-
বুঝতে বুঝতে বোঝার মত বাড়তে থাকে ভার
ফেরি করি হাহুতাশ্ আর শূন্য সমাবেশ।
লিখতে লিখতে হারিয়ে ফেলি বর্ণমালার হার
মুছতে মুছতে ক্ষয়িষ্ণুপ্রায় স্বপ্ন অবশেষ।-
মিষ্টি সকাল ডাক দিয়েছে ঘুম জড়ানো চোখে
বিছানাতে শুয়েই তুলি একের পর এক হাই,
বলছে তারা নরম ঘাসে দুঃখ ছোঁয়ার ঝোঁকে
পেরিয়ে আসা বাধা, বিধির নিয়ম ভুলে যাই।-
জামার বোতাম বেহায়া খুব হলে
খুলে রাখে ভিতর ঘরের আকাশ।
মুখ গুঁজে দিই নীলের নিরুদ্দেশে
বসন্ততে ঠোঁটের বয়স সাতাশ।
সন্ধে নামে চোখের আবেশ মেখে
মন পেতে দিই পাশে এসে বসুক,
গভীর ছোঁয়ায় সংক্রমণের শেষে
আমারও হোক তোমার মত অসুখ।
চাঁদের দেখা পেলেই উদাস লাগে
আলোর হাসি এতই প্রভাবশালী,
বুকের ভেতর জ্যোৎস্না ভরা রাতে
তারায় ভরা আকাশ খুঁজি খালি।-
এলোমেলো উতল হাওয়া রাখলো আবেগ,
একফালি চাঁদ ডুবছে মরে জ্যোৎস্না রাতে।
গাছের পাতা যাচ্ছে খসে একের পর এক
তুলছে আওয়াজ নীরবতার আস্কারাতে।
দূরের থেকে ছুটে এসেও ভাঙছে না ঢেউ
কি জানি কি লুকিয়ে রাখে গোপন খাতে?
পাহাড় প্রমান জলোচ্ছ্বাসে মান অভিমান
আছড়ে পড়ে তীরের বুকে যন্ত্রণাতে!-
মাঝে মাঝে তুমি আলো হয়ে এসো,
মাঝে মাঝে এসো সব শেষে।
আশাটা আসার থেকে গেলে জানি,
দেখা হবে পুরোনো স্বদেশে।
চেয়ে থেকে থেকে শুকোবে এ জল
বুক ফেটে পিচ গলে যাবে।
রাস্তারা তবু অলি গলি বেঁকে
সময়কে গোটা গিলে খাবে।
পায়ে পায়ে আমি পেরোব গ্লানি,
তবু যেন পৌঁছতে দেরি,
নিঃশ্বাস ফেলে পিছনে পিছনে
ছুটে আসে পরাধীন বেড়ি।-