জীবনের এক একটা সময়..
আমরা ভীষণ অভ্যস্ত হয়ে পড়ি,
ঘুম ভাঙা,ফুল ফোটা ..সবেতেই
এক প্রকার স্থিতধি,কম চঞ্চল!
তখন উজার করার ইচ্ছে কমে,
অনিবার্য কারণে,সৃষ্টি একটু হলেও থমকে যায়
অথচ ভেতরে উথালপাথাল নেই বলেও
কোনো অভিযোগ করি'না!
যেমন আছে,তেমন রাখার অদম্য প্রয়াস করে যাই ...রোজ! অনবরত!
এই সব ক্ষেত্রে, ব্যস্ততার অজুহাত
নিজেকে নিজের থেকে লুকিয়ে রাখে,
জানা দিনের নতুন বছরেও
একই আবেগ আর একই অনুভূতি বিলিয়ে দিতে,আর কবিতার জন্ম হয়'না..
এরা আসলে কিছুটা শূন্যস্থান প্রবণ!
মনকে একেবারে নিংড়ে ,
রসদ খুঁজে না পেলে,
সুর তোলে না,
চেনা গতিবিধির ওপর লেখে'না
আশ্চর্য কাব্য কথা!
জানি'না বাকি'দের সাথে মিলবে কিনা..
তবে আমার অভ্যস্ত জীবনের জানলায়
হলুদ পাখি আর সবুজ ক্যাকটাসদের ভিড়ে,
এরা আজকাল কম'ই উঁকি মারে
সৃজনের আনন্দ,
আমার পরিচিত রোজনামচায় মিলিয়ে যায়..
আজ,এক প্রকার জোর করেই,
অভ্যেস আর ভারসাম্যের দিনগুলিকে
ভালোবাসা জানাতে লিখছি..
এ পর্বে,আমি বা আমরা পরিণত অনেক,
সত্য যাপন,ফানুস স্বপ্ন'দের সুতো কেটে দেয়,
আজও আমরা বেপরোয়াই ঊড়ি,
কিন্তু,নিজের আকাশ চিনে!
যে যার নির্দিষ্ট সীমানায়.....
-
আমার বোধ হয় খোঁজ শেষ হয়ে যাচ্ছে
যতদিন দাবি ছিলো,
কবিতা ছিলো!
যতদিন আরও আরও অনেক কিছুর জন্যে
হন্যে হয়েছি,কবিতা ছিলো
ছিলো এক লহমায় মনের এক অন্য যাপন
এখন আর খিদে নেই,
কখনো কখনো মানুষ প্রাপ্তি আর
না-প্রাপ্তি পেরিয়ে..
সব পেয়েছির হিসেব পিছনে ঠেলে,
এক অনাবিল সামঞ্জস্যে পৌঁছোয়
যেখানে সব আছে, গান আছে!জয় আছে
শুধু সেই আমি'টা নেই,
নেই সেই আমি'র হাজার খানেক
ব্যর্থ চাওয়ার ঘোর!
এটা সরলরেখা হলেও
ধুকপুকানি বন্ধ করে'না
কবিতা দিয়ে খালি স্রোতের ওঠা-নামা
থমকে যায়,নদী শান্ত-সলিলা হয়ে
পছন্দের সাগরে এসে মেশে!
এর জন্যে অনুতাপ ও নেই
নেই অনুশোচনা!
খোঁজও প্রয়োজনের অতিরিক্ত হলে
গাছ ভাঙে,ফলের ভারে পাতার ডগা ছিঁড়ে যায়..
থামতে পারাটা আসলে একটা শিল্প,
ইচ্ছের ঊর্ধ্বে,ইচ্ছের খোঁজ
শুধুই ক্লান্ত করে,করে অযথা ভারগ্রস্ত!
আমার দরকার লাগে না তাই
যা পেয়েছি শুধু তার ছবি আঁকতে চাই
কবিতা না আসলেও,গদ্য লিখতে চাই
আমি,খোঁজ বিহীন দেদার বাঁচতে চাই
আজ,শুধু সত্যিকারের যাপন করতে চাই...-
তোমার ওপর ভার ভীষণ,
ভালো-রাখার অনেক দাম!
ওদের জন্য বটের ছায়া,
আর চারিধারে বৃষ্টিপাত..
তোমার কাছে সবাই আসে,
ফুল নিয়ে দেয় পাড়ি!
কূলে বসে তুমি একা,
তুমি ওদের কান্ডারী
আয়ু যত কমে আসে,
ওজন তার বৃদ্ধি পায়
নির্ভরতা নিয়ে অনেক
আবেগ রয়েছে অপেক্ষায়..
দায় নিয়ে ক্লান্ত তখন
তোমার চোখে উতলা ঘুম
কার কাছে কতটা সময়
কার জন্য কতটা ওম!
তোমার জন্য ভয় হয়,
যুবক বেশের বদ্ধ জীব
জলের মেয়াদ পূর্ণ করে,
নিভিয়ে দিচ্ছ কোন্ প্রদীপ
অভিযোগ কোথাও নেই
যেমন সব-খানে নেই সমঝোতা
তোমার দিকে তাকিয়ে বাঁচে
আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা
তুমি তাও কবিতা লিখো..
কেবল, নিজের জন্য মনকেমন
তোমার ওপর বেঁচে থাকার
শুধু উপলব্ধি আর অনুকরণ
এইভাবেই ভার বয়ে,
নামুক আঁধার আর আসুক দিন
তোমার ওপর ভরসা অনেক
তুমিই ওদের পথিকৃৎ...
-
এক একটা জীবনের সাথে
এক একটা গল্প শেষ হয়ে যায়,
সকালে ওঠা,সূর্য্য দেখা!
রঙিন চোখে আকাশে মিলিয়ে যাওয়া
এক একটা লড়াই'র শেষে,
কেবল কিছু পিছুটান থেকে যায়..
লিখতে গেলে প্রকান্ড এক পাহাড়
গল্পের পর গল্প জমে,
শৈশব ছাপিয়ে শব যাত্রায়..
আসলে,সব কটা হেরে যাওয়ার পরেও
একটা অন্যরকম প্রাপ্তি রয়ে যায়..
তা সে আমি হই কি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী
কিম্বা কোন এককালের ক্ষণস্থায়ী প্রেম,
কথা দিয়ে কথা রেখে গেছে সবাই,
জীবনের শেষে গল্প লিখেছে বেশ!
বুক ফুলিয়ে হয়তো কেউ বৃহত্
কারোর ঠোঁটে শুধুই ছিলো ক্ষেদ,
শরীর কারোর সাথ দেয়নি তেমন
মেয়াদ হঠাৎ ফুরিয়ে হয়েছে শেষ,
কত জনের কত রকম সাধ!
জীবন বলে কতো হাঁকাহাঁকি!
এক একটা সন্ধ্যা নামলে প্রদীপ
একটু করে,হারায় তার তাত'ই
ভাবতে বসে,গল্প লিখিনি তাও
এ একটুখানি কুর্ণিশ জানাবার!
গোটা জীবন'টা টেনে নিয়ে চলে,
জেনেও সব'ই শুধুই হারাবার..
জানি,আমার গল্পও হারিয়ে যাবে একদিন
সকালে ওঠা,অবাক সূর্য্য দেখা!
আসলে,এক একটা শেষ হয় বলেই
বোধ হয় সত্যি হয়,নতুন গল্প বলা...
-
এই যে বারেবারে ফিরে আসি,
মনের নাগালের বাইরে,
কোনো এক অজ্ঞাত সত্যের জোরে,
এই যে বারবার বলি ভালোবাসি!
আচ্ছা,ফুল,পাখি রামধনু
সবই তো এক এক প্রকার,
এক এক রকমের আশার ফানুস!
গন্ধে,বর্ণে যারা আমাদের নিস্তার দেয়
আর আমরা বারবার বলি বেঁচে আছি!
আর আমাকে ,সবাইকে
যে যেখানে আছে সকলকে যদি রসদ-বিহীন
করে,জীবন-স্রোতের দুর্গম বালুচরে
একা,এক্কেবারে নিঃসঙ্গ দাঁড়াতে বলি!
মূর্হুতেই সব নিভে যাবে,
না-ভালো লাগার করাল ছায়া,
গিলে নেবে সব! জীবন-বোধ
আমরা একা,ফুল বিহীন পাখি বিহীন
আলো বিহীন বড়োই ঠুনকো!
তাই তো হাজারও অন্ধকারে,
দপদপ করার শেষ লহমা অবধি,
মোমবাতি আলো'র কথাই বলে,
গায় জীবনের গান
আমরা যে যেমন ঠিক তেমনই ..
বেঁচে আছি,ভালো আছি !
আর সাথে করে বয়ে নিয়ে চলেছি এক চরম
সত্যি'কে,নিজেদের মতো করে...-
যদি বা ঘরে মেয়ে হলো
লক্ষ্মীমন্ত অথবা স্বনির্ভর
আমরা কিন্তু ভয়ই পাই,ফিরে ফিরে
আবার আবার !
একের পর এক প্রজন্মতে বয়ে চলেছে
একই জল,
মেয়ে হয়েছে,চটজলদি নিয়মাবলী বুঝিয়ে বল
রাত তো বাড়াবাড়ি!
স্বাধীনতা মেয়ের যম,টুঁটি টিপে জানান দেবে
ঘোমটাতেই আসল সুখ!
আমার পাও সুন্দর বেশ,আমারও গরম লাগে
খাওয়া যেমন আমার রুচির
পোশাক কেন বা লাজের,
আরও কতো পুঁথি পত্র,বুঝিয়ে বুঝিয়ে
দিন কাবার,
কিন্ত সেই সুলক্ষণাও দিনের শেষে,
তোমার খাবার
কেমন লাগে,গুঁড়িয়ে দিতে?
মেরূদন্ড আর যোনির আঘাত!
পাল্টা যদি কাটা যায়,সেদিন জানবো সঠিক জবাব!
ভয় হয় ,জন্ম নেয় যেই কোনো মেয়ে আবার
পরিণতি যখনতখন রাত পোহালে,জীবন কাবার....
তবু আমরা লড়াকু জাত!
নাড়ী কেটেই প্রসব করি,
তোদের অবাধ প্রবেশ পথে,
বারুদ জ্বলবে,কোটি কোটি..
বিশ্বাসেই দিন গুণি,এমন স্বাধীন আমরা হই
শরীর পেরিয়ে মানুষ হিসেবে সমানাধিকার
প্রাপ্ত হই
আলাদা আমাদের কিছুই নেই
ঐ ওপর নিচে দুটো বিভাগ
মানুষ আমরা সবাই সমান
তাকিয়ে দেখার বদল আন,
শুধু উপলব্ধির বদল আন...
-
ওরা বৃষ্টিতে ভিজতে চেয়েছিলো
ভীষণ স্নানে সব দাগ মুছে ফেলতে চায়
বারান্দায় বৃষ্টি এলো সেদিন
অন্য কোথাও হৃদয় নিংড়ে যায়
সব বৃষ্টিই সুখ আঁকে'না লালে
উত্তাপ খুইয়ে, বিবর্ণ হয় ডাক
ওরা একটুখানি শান্তি খুঁজতে গিয়ে
গভীর বনে,একলা হারিয়ে যায়
তোমরা কেমন হাত পাতলেই পাও
বিন্দু ফোঁটা,বাড়ায় শিরশিরানি
জানলায় ঝাপ্টা দিয়ে, বোঝায়
মিলেমিশে রো
তারই মাঝে,ওরা কেন যে ভীরু
পাগলের প্রায়,একটু ভিজতে চায়
সিক্ত দিনের গল্প লিখে ঘরে
আনন্দের ব্যাকুল অপেক্ষায়
-
আবারও একটা ২৫শে বৈশাখে,
ব্যস্ত দিনের হাজার উপেক্ষা পেরিয়ে
এক কলি গান গাইলাম আনন্দে
আবারও মনের সুপ্ত কোণে,ফুল ফুটলো
কবিতার,গানের,ভাবনার বোধের..
হয়তো দূরে চলে যাচ্ছি অনেক
এক সময় থেকে অন্য সময়ের রসি ধরে
আমরা এই কঠিন পৃথিবীর ভিড়ে
শুধু ছোটাছুটি করি!
মুক্তিদের শ্বাসরূদ্ধ হয়,মন আর মেতে ওঠে'না
গায় না হারিয়ে যাওয়ার গান!
নিজেকে, নিজের মননকে আর খোঁজা হয়ে ওঠেনা,নিয়ম মতো চলতে গিয়ে
বাঁধ ভাঙে না! বয়'না শনশন হাওয়া!
তাও আবারও ২৫শে বৈশাখ আমাদের
হ্যামলিনের বাঁশির মতো এক জায়গায়
জড়ো করে,সুদূর প্রবাস থেকে
দূর শহর,পিছিয়ে পড়া গ্রাম গঞ্জ
সবাই আমার উদযাপন করি..
গাই হৃদয়ের গান!
বছর বছর তাই ২৫শে বৈশাখ
জন্মদিনের ধারা'কে এগিয়ে নিয়ে চলুক
শিল্প নবজন্ম পাক!
দূরে সরে যাওয়া আমরা
আবার ভালবাসতে শিখি,
ব্যস্ততা,অপারকতা সব ছাপিয়ে
পরবর্তী প্রজন্মে বয়ে চলুক এই ধারা
গান হোক আরও অনেক গান হোক উদাত্ত!
-
যেদিন একটা জানলা খুলবে,
সত্যিকারের দেশে
রোদ্দুর কেমন ঝলমলাবে
বৃষ্টি পড়বে ঝেঁপে!
বুলবুলির গানে কেমন সত্যিকারের বাঁচা
যেদিন একটা নৌকা ভিড়বে,
আসল সুখের তীরে
সবাই যা চাইছে,
তার খোঁজ হবে শান্ত!
কেমন যেন আবেগ মাতাল
সবাই সুপ্রসন্ন!
আদৌ কি জানলা এমন খুলবে
জীবনকালে,নাকি
মরণোত্তর ভাবনার অকুল পাথারে
খোঁজের পর খোঁজ কেবল!
একটু শীতল হাওয়া!
হয়তো একটা গান গাইবে
কেউ কখনো কোনোখানে....
-
কি ছিলাম তা ভুলেই গেছি হয়তো!
যা নই তার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরি!
আমার জন্য খুব মায়া হয়
কি জানি কতদিন টিকে যাবো?
আচ্ছা,স্বাধীনতা আর শান্তি দুয়ের কি বড়োই
সংঘাত! এ সংঘাতের কি শেষ কোথাও নেই
নাকি আমার শ্মশান বন্ধুর হাতের আগুন
দেবে থামিয়ে
মৃত্যু আমি ভীষণ চাই
কি ছিলাম কি হতে চেয়েছি সব ব্যতিরেকে
প্রতিদিনের বদলে যাওয়া আমির জয় হোক
নিজেকে সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলার কথা শুধু
লেখা থাকে যেন!
কোনো প্রশ্ন করিনা,জানতে চাইনা
সভ্য সমাজের নিয়ম
আমি আনন্দে আছি,এই স্লোগান
আর প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে শুধু পরম শান্তির
অপেক্ষা!
ভুল যত করেছি,ফিরে দেখলে
সবচেয়ে বড়ো মাতৃত্ব
আমি বাধ্য হলাম,
আগে'ও বিভিন্ন ভাবে বাধ্য হয়েছি!
না বলবো'না এ কবিতা নিয়ে সমগ্র হোক
কেউ কখনো পড়ার ইচ্ছে রাখুক
আমার সব অন্যায়ের জন্য শুধু'ই ক্ষমাপ্রার্থী
ভুল মার্জনা করো সকলে,
আমি খুব ভালো আছি
সাজানো মহড়ার তলায় নিভে যাওয়া
প্রদীপকে সযত্নে রাখবো
সন্তানের মুখ চেয়ে,নিজের অসম্মানের জন্য
প্রতিবাদী হবো'না আর
যদি আমার কেউ কোথাও আপন থাকে
আমার মতো করে, শুধু আমার
তার জন্যে তার ভাবনায় এ জীবন সঁপে দিলাম
এসো হে পরম প্রিয়,
এসো হে আমার নাথ!
-