আমাদের শহরের শরীরে, মনে রং ধরছে, আরও একবার। রোদ পোহানোর অজুহাত ফিকে হচ্ছে ধীরে ধীরে। প্রিয় মানুষের গন্ধ ধুয়ে ফেলে গরম জামাদের আবার ঠাঁই হবে অন্ধকার কুঠুরিতে। কদিন আগেও ছাদে আলো হয়ে ছিল যে ডালিয়ারা, তাদের ফুরিয়ে আসছে দিন। শুকনো পাতারা এখনও চিনে উঠতে পারেনি নতুন বসত। ফুটপাথে উদ্বাস্তুর মত পড়ে আছে অবহেলায়। যে হাওয়ায় কদিন আগেও মিশেছিল বিষাক্ত ছোবল,আজ সে সদ্য বয়ঃসন্ধিতে পা রাখা কিশোরীর মতই প্রাণবন্ত।
সদর দরজা থেকে বেরিয়ে মোড়ের মাথায় পৌঁছানো অবধি প্রাক্তন প্রেমিকের মতো হয়ত শেষবারের মত মুখ ফিরিয়ে তাকাবে শীত, তারপর বড়রাস্তায় মিলিয়ে যাবে বিন্দু হয়ে।অনেকদিনের বিরহকান্না ভুলে, প্রকৃতি আবার আয়নার সামনে দাঁড়াবে। শীতের মলিনতাটুকু ঝেড়ে ফেলে সেজে উঠবে নতুন অভিসারলগ্নে।
গর্ভবতী নারীর মতই অহঙ্কার নিয়ে বসন্ত আসছে।
©️অবন্তিকা (১৭/০৩/২০২২)-
Don't judge me through my... read more
শ্রাবণ যখন তোমার বুকে
উন্মাদনার ছবি আঁকে,
সদ্যস্নাতা তিলোত্তমা
উঠল সেজে অনুরাগে।।
—: অবন্তিকা-
প্রেমিক কেমন?
মায়ের মতো মুখ!
মায়ার চোখে তাকিয়ে থাকে?
সারায় মনের অসুখ!
©️ অবন্তিকা-
।। পাহাড় ।।
পাহাড়ি আল-পথে যেন এক তীব্র যুবা। ঘন সবুজে খোদাই করা পাথর কঠিন শরীর। মসের আদরে জড়ানো পাইন। এত রূপ তোমার! তোমার গহন বুকে বারবার হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে...
তোমায় আমি বারবার দেখেছি। প্রথম ঊষার আদর যখন ছুঁয়ে যায়! যখন কুয়াশা তীব্র আশ্লেষে নিজের শরীরে আড়াল করে তোমায়! যখন বৃষ্টির ঘন ঠোঁটের জলকেলিতে শ্রান্ত হও তুমি! কিংবা যখন পাহাড়ি মেয়ের পায়ের নুপুরের সুরে প্রেমিক চোখে স্তব্ধ হও তুমি!
আমি তোমার সবটা দেখেছি সন্ন্যাসী...
শ্বেত পাথরের মতো কঠিন শরীর! প্রপিতামহের মতো জ্ঞানী অথচ নবীন। নিজের শর্তে বাঁচা ছেড়ে আসা সেই প্রেমিক, শতবার পায়ে পড়েও যাকে রাজি করাতে পারিনি আমি। আমার কাঙ্খিত নবীন সেই আদি পুরুষ! এত সুন্দর, এত তীব্র গন্ধ, বিস্তৃত দৃষ্টি, এমন মাতাল করা সবুজ আগে কি কখনো দেখেছি আমি?
সহস্র বছর ধরে তোমার প্রেমে পাহাড়ি পথে ডুবে যেতে রাজি আছি আমি সন্ন্যাসী...
©️অবন্তিকা (২৬/১০/২১)-
আমি কবি হবো না বলে, এতদিন যে লড়াই লড়লাম
তাকে অপশ্রুতি দিতে পারে যারা
তাদের জন্য দু-এক ছত্র তাঁত বুনে ফেলি মাঝেমধ্যেই...
©অবন্তিকা-
'Let us agree to give up love,
And root up the Infernal Grove;'
Then shall we return and see
The worlds of happy Eternity.
'And throughout all Eternity
I forgive you, you forgive me.
As our dear Redeemer said:
"This the Wine, and this the Bread. "'
©Abantika (10/06/2021)-
"লাল একটা অভ্যেস ছিলো বহুদিনের,
লালচে একটা সুখ ছিলো রক্তের ধারার মতো।
যেদিন সময়ের কাছে বিষ ধার চাইলে,
সেদিন তোমার কথা ভেবেই রক্তদান করেছিলাম আমি!
বেঁচে উঠেছিলে কিনা সে খবর এমনিই রটে গেছে...
লাল তখন কোনো রঙ নয়, লাল কোনো সাজ নয়;
লাল আমার জীবনে থেকে চলে যাওয়া তুমি..."
©অবন্তিকা (০৬/০৬/২০২১)-
তোমার নিঃস্ব অনুভব নেই!
মেতে ওঠো রঙ বদলের উৎসবে...
বিশ্বাসের আয়োজনে এই 'আমি'টা
বাঁচি এখনো ভালোবাসার বৈভবে।
©️ অবন্তিকা-
যতবার ভাবি এবার একটা আত্মহত্যা আঁকবো
ততবারই থেমে যাই তোমার ঠোঁটের বক্ররেখায়...
আমাদের এপিটাফে কোনো শব্দ বিনিময় নেই,
খালি মাংসের ঝোলে অনুভূতিরা সাঁতার কেটে বেড়ায়...
নীলরঙা রাশি বিলিয়ে চলে অমলতাস মায়া
আর্কাইভে ঘোড়সওয়ারের যৌবন আঁকে রবীন্দ্রসঙ্গীত।
সাহসী একচোখে জ্বলে দ্রোহের আগুন,
ডানাবতী মেয়েটির অন্যচোখে খরস্রোতা রঙ্গিত।
দু-একটা চিনচিনে ব্যথা বাকি রয়ে গেল আজও
দেখা হবে সুপুরী বনের কিনারায় কিংবা তুলসীতলায়...
অ্যাসাইলাম ঘুরে ভরা চাঁদের আলোয় মৃত্যু সাজাই!
শহরের ভাঙাচোরা অ্যাসফল্টে আমাদের কাহিনী ভাসে সুতনুকা হাওয়ায়....
অবন্তিকা (৩১/০৫/২০২১)-
যাবার দিন রজনীগন্ধায় ভরিয়ে দিও তোমরা। বড় প্রিয় ফুল আমার। সময়ের দস্তাবেজ থেকে মুছে যায় যাবতীয় ধুলোমাখা রাত। আজ কোনো চিনচিনে ব্যথা নেই। জানো সন্ন্যাসী, মৃত্যুও কত রোমান্টিক! এলোচুলে ঢেকে গেছে পৃথিবীর সমস্ত সজীবতা। এবার সমুদ্রকে ছোঁবো, ছুঁয়ে যাবো আকাশ ও শূন্যতাকে...
©অবন্তিকা (১৪/০৫/২০২১)-