কিছু মানুষ বৃষ্টিতে একাই ভেজে
সমুদ্রের কিনারে দাঁড়িয়ে ঢেউয়ের গর্জনের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়
ইচ্ছা হলেই ছুটে যায় পাহাড়ে, মনের জমা কথা বলে আসে ঝর্ণার কাছে,
অন্ধকার পথে নক্ষত্রের মিটিমিটি আলোয় মনের অসুখ সারবে কিসে তার ঠিকানা খুঁজে ফিরি ঝিঁঝি ফোকাদের ওই গানের সুরে,
যতদূর যায় চোখ একাকীত্বের সমান্তরাল রেখা আক্ষেপ অভিমান ভালোবাসা গুলোকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে,
একাকীত্বের খোঁজ নেবার কেউ থাকেনা, দিনের শেষে আসেনা কোন টেলিফোন,
বুকফাটা কষ্ট গুলো গুমড়ে গুমড়ে মরে,মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা কি সত্যিই বেঁচে আছি..
নাকি জীবনের রঙ্গমঞ্চে অভিনয়ের এক চরিত্র........!!!
-
দুঃখের ভাগ টাও যে হাসিমুখে নেবে এমন একটা তুমির বড্ড অভাব আমাদের,
মানুষ এখন স্বপ্ন দেখে সেই স্বপ্নের পরিমাণ এতটাই বেশি যে ছোট ছোট মুহূর্তগুলো চাপা পড়ে যাই অনায়াসে আকাশের নিচে,
কথারা পথ হারিয়েছে মানুষের জীবনে নতুনত্বের ভিড়ে,
ভালোবাসা আজ চিরকুটের মোড়কে অন্ধকার পথের মরচে পরা ডাকবাক্সে স্থান পেয়েছে,
মানুষ শুধু এক মোহর ঝিনুক আঁকড়ে ধরে বসন্ত খুঁজে চলেছে.........!!!!!-
তোমার আমার সূচনার চিত্রপটে হঠাৎ করে নামল অকাল বর্ষা।
ব্যস্ততার টেলিফোনে অপেক্ষাগুলো নির্ঘুম থেকে থেকে আজ বড্ড ক্লান্ত,
রোজ দেখিবো তোমারে কল্পনার আয়নায়,ধীরে ধীরে একদিন অস্পষ্ট হবে তোমার প্রতিচ্ছবি।
যে মায়ায় তুমি বেঁধে গেলে,সেই শহরের কূলে আর হয়তো ভিড়বে না কোনো মাঝির নৌকা,
তুমি আমার ভালোবাসার দীর্ঘায়ু কামনা করলে কিন্তু আমার হাতে হিজলের মালা খান পরিলে না।
কিছু ভালোবাসা মাখা অনুভূতি ফুরায় না থেকে যায় জোছনা মাখা রাত্রির বুকে নিস্তব্ধতার বাতাসের দীর্ঘশ্বাসে.........!!!-
ইছামতির কূলে সেই বকুল তলে আছি বসে,
প্রকৃতি সেজে উঠেছে শরতের মিঠে রোদের ছোঁয়ায়,
নদীর ধারে সারি সারি কাশফুল যেনো কবির গল্পের এক একটি উপকাহিনী,
নদীর জলরাশির উপর সাজানো নৌকাখানি সদ্য বিবাহিত এক বর বধূ লয়ে চলেছে নতুন গন্তব্যের পথে দূর দেশে,
একি!এ তো আমার "ইন্দু"
সে আমারে দেখল দূর হতে একপলক,
বৃষ্টি ভেজা আঁখি হতে দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল তাঁর আঁচলে,
বিসর্জনের ঘণ্টার আওয়াজে মনের ভেতরটা কেমন যেন আঁতকে আঁতকে উঠলো,
এই বুঝি শেষ নয়.........এই বুঝি শেষ নয়..........
-
অভিমানের দীর্ঘশ্বাসের নৌকাগুলো গভীর সমুদ্রের বুকে ডুবিয়ে আমরা কি আবার এক হতে পারি না,
নিঃসঙ্গতার চাদর সরিয়ে হেমন্তের শিশির মেখে চলো হেঁটে যাই নতুন দিগন্ত পথে........!!-
"কথা রেখো"(২)
বাইরে এখনো বৃষ্টি পড়ে চলছে, বাড়ির ভিতরে মুখোমুখি সেতুও নির্মাল্য।
দুজন দুজনের দিকে অপলক তাকিয়ে আছে, মধ্যিখানে একরাশ নীরবতা। সেতু লক্ষ্য করে তার দেওয়া সেই টি শার্টটা নির্মাল্যোর গায়ে। সুখের অসুখে নক্ষত্রের আলোয় প্রহর শেষে দুজনের পথ আলাদা হয়েছিল সেদিন। আজ আবার বছর পাঁচেক পরে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ এর মতো সেতুর চৌকাঠে নির্মাল্য। কত প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা দুজনের।-
এখন আর কথা হয়না, যোগাযোগের রাস্তায় দিয়েছো ইটের পাঁচিল,
মন খারাপের রাতে খুব খুব ইচ্ছা করে তোমার কাঁধে শান্তির ছোঁয়া পেতে,
তুমি বলেছিলে যদি আমায় ভালোবেসে থাকো তবে ঝড়ের আকাশে উড়িয়ে দিয়ো বেঁচে থাকা অভিমান,
কিন্তু সে আর পারলাম কই,
অভিমান চলে গেল বাঁচার খড়কুটো টুকু হারিয়ে ফেলবো.........!!!!-
দেখতে দেখতে হেমন্তের আকাশে অন্ধকার নামল ,
একেবারেই তো চলে যাবে, আর কিছুক্ষণ নয় রও "ইন্দু"
নিজের ভাবনা চিন্তা গুলো প্রতিনিয়ত স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে একসময় ক্লান্ত হবে ,
শূন্যতার গর্জন শুনতে পাবে দিঘির ওপার থেকে।
চেনা পথের বাঁকে কথা দের হবে অকাল মৃত্যু,
তবুও যোগ-বিয়োগের শেষে যদি কিছু থাকে...
ঠিকানাটা না হয় দিও এক স্বপ্ন তরীর নৌকায় মাঝির কাছে ........!!-
"কথা রেখো"(১)
রাত্রি প্রায় শেষ প্রহর বাইরে তখনও প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টি, হঠাৎ কিসের একটা শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেল, ভাবলাম ঝড়ের দাপটে হয়তো কিছু পড়েছে,কিন্তু না আবারও শব্দ! ঠিক যেন দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। মনে মনে একটু ভেবে নিচ্ছি এই ঝড়-বৃষ্টির শেষ রাতে কে আবার এলো, অনেক রকম চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, তাই আর দেরি না করে চাদরটা আলতো ভাবে গায়ে নিয়ে এগিয়ে গেলাম দরজার দিকে। দরজা খুলতেই দেখি কালবৈশাখীর দাপটে তছনছ হয়ে যাওয়া একটা মানুষ দাঁড়িয়ে আছে!
কান্না ভেজা গলায় আমার দিকে চেয়ে শেষ বলা তার কথা,
আমি এসেছি 'সেতু' ......আমি এসেছি....!!!
-
ছোটবেলায় বাবার সাইকেলে চড়ে যেতাম'রথের মেলায়'। বাবা সবসময় বলত হাতটা শক্ত করে ধরে রাখবি ইন্দু এত ভিড়ের মাঝে হারিয়ে যাবি না হলে। মাঝে মাঝে এদিক ওদিক থেকে দু একটা খুব বড় বড় রথ আসতো আবার কিছু কিছু ছোট ছোট রথ। মেলায় কত ধরনের পুতুল, গাড়ি, বেলুন, ও নানান খেলার সামগ্রী, এছাড়া খাবারের দোকান ছিল প্রচুর জিলিপি পাঁপড় বেগুনি,গজা, মানুষের ভিড় প্রায় লেগেই থাকতো। হঠাৎ করেই সব কিছু যেন হারিয়ে গেল যেদিন থেকে হলাম 'বড়'। যত দিন গেল আনন্দের গতিপথ গুলো কেমন যেন বদলে গেল বয়সের ভারে।
লোকজন কোলাহল ভিড় এখন আর ভালো লাগেনা মনে হয় দূরে নীরবে কোথাও সময় কাটাই......!!-