ওরা বড়োই গা-ঘেঁষা,পায়ে ধুলো মাখা;
মানবতা চোখে দেখো যীশুরই তা বাসা।-
পাড়ভাঙা নদীবাঁকে
নামে কমলা গোধূলির স্নান,
রূপসজ্জার শেষপর্বে
পরিযায়ী কলতান।-
ঘরবন্দী মুঠোর জলীয়বাষ্পদের ছুটি দিলাম আজ,
রোদ যা দিলে এনে চারআনা গোছের
যেন বিশ্রী পরিমিতির সূত্রপাত!
ঘোড়ারক্ষুরে মাখামাখি কলকাতার শীত,
তবুও তুমি কি একলা?
বেখেয়ালি ভাবের মায়ায় বুঝলে পুরোদস্তুরই মেঘলা।
আমিও আঁকি ক্যানভাসে হিম,
বরফগোলার কমদামি রঙে
হাসি পায়;
এমন ছোঁয়াচে হাওয়ার আনাগোনায়
ঠান্ডা এসেছে প্রেমিকের ভোর দেখা জানলার কাঁচে।
-
অর্থহীন বিবেচনায় ভেসে গেছে
সস্তার দেহ সকল,
ত্রাহি ত্রাহি আকাশ ফাটা কান্নায়
গিলতে বসেছে ঘরে ; মশারির মানসিক স্বাস্থ্য |
আধখোলা কাপড়-জামা লক্ষীছাড়া অবস্থায় ;
শুধুই কিনা জল নিয়েছে বুকে টেনে...
কোথায় পরিজন? কোথায় গলির চেনা মোড়?
ভয় পেয়েছে অদৃশ্যের
দুর্গন্ধের নেশা শিয়ারের ঘুমে,
নীলরঙ জমেছে চিমসে চামড়ার খাঁজে...
পবিত্র ফোঁটার কি দুর্দশা !
জানোয়ারের উৎসব দেখছি দিকে - দিকে
আজ বুঝি অসাড় শরীরগুলোর পরিচিত চায়?
মনে হয় এক একজন দলছাড়া তিমি |
আকুতির জীবন তীর্থের ঘাটে ঘোরায়
সর্বত্যাগী আত্মার স্মৃতি ফোঁপায়...-
সমাজমিতির গোলকধাঁধায়
রু-গ্ন-ম-নে-র স্বস্তি কোথায় ?
হিসাববিহীন চিন্তা-সৈন্যের
ভেংচি-নাচন মেঘলা বেলায় |
রক্তবাহী ধমনীচাপে হিংস্র মা-ই-গ্রে-ন
আলগা লাগে ,
একফালি রোদ
সুদের লোভে ; বেচাকেনা অথৈ জলে !
মুখোশ সরে মা-টি-র-ধ-রা-য় ;
ঠুনকো বিবেক কান্না শোনায় ,
আরশিনগর লালন ভাবায় ;
মনের মানুষ পরকে শুধায় |-
আকাশ জুড়ে প্রত্যাশা আজ
একহাত কালোরঙা ঘুটঘুটে রাতের ;
ফ্যাকাশে অনাদর ততক্ষনে গড়িয়ে গেছে
ওই, আলকাতরায় পা ধুয়ে দেওয়া ছাদে |
নিরুদ্দেশের ঠিকানা যে সেটাই...
প্রত্নতাত্ত্বিক চিলেকোঠার মস্তিষ্কে চলছে
ভেলকি কারবার,
সাথে কম্পাসের কব্জায় বাসা বেঁধেছে বুঝি
আস্ত গোলকধাঁধা !
হিমালয়ের ধ্যানে চাপ-চাপ রক্ত উড়ে বাষ্প,
উদ্দেশ্য ছিল স্বস্তিটুকুই...
বয়স্ক শহরের বাতেলায় আমরা কি কেউ নেই?
ভ্যাবাচ্যাকা মুখে সবাই নেয় খোঁজ
এঁঠো উদগার দমিয়ে আমি তো শুধু হাসি |
-
শ'খানেক ঘুম উড়িয়েছি বাদামের খোসার মতো,
খাবি কাটা কান্নায় গোড়ালিটাও
ভোরের বিছানায় ভেজা |
তবু মোটা হরফের তলায় পিষে,
দুহাত মেলে কলঘরের ওই কালোয়
আজও কবিতা মাখিনি |
সাবেকি গন্ধটার মৌরি-মিছরি এড়িয়ে
ছোঁয়া বিশাল এক রোদ ;
বল্গা হরিণের নিরুদ্দেশ ভাবনার ঘাম
প্রেমিকার সান্তনার কপাল নকশার সিঁথিতে|
শুধুই ভেবেছি,
কিন্তু খসে পড়া আতার পাতায়
শামুকের বুক চিড়ে তো আর হাঁটিনি ;
জমানো সব আয়ুরেখা শুধু তোমাকেই দেবো |
ঈদের চাঁদ সাজবে রোজ ...?
-
লাঞ্ছিত পাগলা ভিসুভিয়াস শাসিত সাম্রাজ্যের ঘাড়ে চাপে,
ছাই মাখে পাথুরে পেটের দেওয়ালে ; কমলা আগুন ভাঁজে |
গুড়-গুড় শব্দে বিলাসী দিবানিদ্রায় মজে পম্পেয়াই মৃত্যুপুরী,
প্রকৃতির নাড়ি পেঁচিয়ে আঁকুপাঁকু করে সুপ্ত ওই লাভার খনি |
আঁধার চাদরে সীমানা হারায় আকাশের নীলকন্ঠ স্মৃতিপথ,
সমুদ্রে ফাটল পাললিকস্তরে ; আর্তনাদের সেকি কলরব !
ফেনায়-ফেনায় বু-দ-বু-দে প্রাণ চলে বাঁচার আকুতি আন্দোলন,
কাঁদা-মাটি-ধুলো ; মণ-মণ জমে ভয়াবহ ইতালির সাতকাহন |
তামশা আজ অলিতে-গলিতে থরে-থরে সজ্জিত ধনীর কবর,
মানব পুতুলের মরণ ঝুলন ; ভূখণ্ডের মোহময়ী লুপ্ত শহর |
-
মোহের ওই কলঘরে শিকল ফাঁসে বাউন্ডুলে প্রাণ,
অভিমান গোমড়ায় প্রশ্রয়ের সে অতীতখানা ঘেঁষে |
কুড়িয়ে মাখা অসুখে বসন্তের গোধূলিও বুঝি ম্লান,
ছিটেফোঁটা কান্নার বিকিকিনি জানালার কার্নিশে |
কঁকিয়ে ওঠা নিঃশ্বাসে আজ নয়ানজুলি সাজে স্মৃতিঘর,
মুঠোবন্দী খড়কুটোয় তাই ডাকাবুকো প্রেমের অবস্থান |
শেষেরবেলা মাতোয়ারা মুখোশ আলিঙ্গনের স্বজনপোষণ,
খেয়া-পারের অক্ষম দায়িত্বহীনতায় বাউলও দেখি ছাড়ে ঘর |
খেজুর হাঁড়ির ভুসোকালি ছুঁয়ে থাকে নববধূর গালে,
আলতা রাঙা পায়ে নয়নতারার বৈকালিক জলসাঘর |
এলোমেলো শব্দজোড়ে বেমানান কবিতা উড়ে বেড়ায়,
সরল মস্তিষ্কের সেই অন্তঃপ্রকোষ্ঠে ষড়যন্ত্রে তা পড়তে হয় |-