পৃথিবীতে হয়তো সম্পূর্ণ মূল্যহীন কিছুই না
রাস্তার ধুলো, তারও কাজ আছে ।
যা আছে, হয়তো তার কিছু গুরুত্ব আছে,
যা নেই তার কাজ শেষ।
তাই যে ফুরিয়ে গেছে, তার বিদায়ই মঙ্গল।
কারণ মৃতদেহ থেকে কেবল দুর্গন্ধই ছড়ায়।
স্মৃতিরা শুধু আজন্ম কাল বেঁচে থাকে
ওরা থাক, ওরা ভালো থাক।
বাতিল, ভাঙাচোরা একখানা মানুষ
অবহেলার আবর্জনায় পড়ে থাকা।
সেও একদিন বলে , "বিদায়"।।
-
রক্তের প্রতি কণিকায় কণিকায় মিশে কালকূট
কালো রক্তে তাপে গলছে শিরা ধমনীর গহব্বর,
মৃত্যুর চেয়েও যন্ত্রণাময় হৃদপিন্ডের স্পন্দন
শব্দের প্রতি তরঙ্গে নারকীয় আর্তনাদ।
সূর্যের সাথে প্রতিদিন মঞ্চের পর্দা উঠে,
শুরু হয় কোটি কোটি অভিনেতার অভিনয়
দিনশেষে পর্দা নামে।
ঘরে ফিরে যায় অসংখ্য লাশ
গ্রীন রুম জুড়ে পচা মাংস আর রক্তের গোপনে দুর্গন্ধ ছড়ায়,
অন্ধকার রাতে রূপটান চলে জীবন্ত মানুষ সাজার আপ্রাণ চেষ্টায়।
আরও একটা সকাল একটা গোটা পৃথিবী
হাসিমুখে বলে, ভালো আছি।
-
যদি একবার মরতে পেতাম,
বেশ্যা হয়ে জন্ম নিতাম।
রোজ শহরের শরীর ছুঁয়ে,
অগ্নিস্নানে শুদ্ধ হতাম।
মনের জায়গা শূন্য হত ,
শুকিয়ে যেত চোখের জল।
কুকুর যত মাংস খেত,
রক্ত খেতো বাদুর দল।
-
শরীর বেচি সস্তা দামে হাটে
ঘরের কোনে তোমরা বেচো মন
বাকির খাতায় গরমিল করো হিসাব
দেনাপাওনা আমরা মেটাই রাতে।
ওই শহরে, যেখানে সব ভালো
আকাশছোঁয়া ইমারতের সার
রাজপথের শেষে অন্ধকার এক গলি
বন্ধ ঘরে লালচে আভা আলো।
ব্যর্থ প্রেমের কাব্য কথার ছাপ
শুকনো গোলাপ ভেজায় চোখের জলের নুন
আমারও গল্প নোনতা ভীষণ রকম
ঘেমো শরীর বদলায় প্রতি রাত।
-
রোজ রাতের শেষে
ভোরের সূর্যের দেখা নিরর্থক লাগে
তবু রোজ ভোর হয়
পাখি ডাকে
আবার অপেক্ষা রাতের জন্য।।
-
প্রয়োজন আর প্রিয়জন ভীষণরকম সমান্তরাল,
প্রয়োজনের সাথে তাল মিলিয়ে প্রিয়জন গুলো বদলে যায়
প্রয়জনের খাতায় কখনো স্নেহ ,কখনো প্রেম,
মায়া, আদর, অর্থ, শরীর, সময়, মেধা সকলেই ভিড় করে।
কখনো ভীষণ রকম উৎশৃংখল, অবাধ্য বদমেজাজি মেয়েটাকে
বাড়ির প্রিয় মেয়ে হতে দেখিনি।
বেকার নেশাখোর ছেলেটা
কখনো পায়নি প্রিয় ছেলের তকমা।
নিত্যদিন রোগে ভোগা, সমস্যায় জর্জরিত
খিটখিটে প্রিয় বা প্রিয়তমাও ধীরে ধীরে অপ্রিয় হয়ে ওঠে।
সময়ের দাবি মেটাতে না পারলে প্রিয় বন্ধু
বন্ধুত্ব টুকু স্বীকার করে না।
জীবনের প্রয়োজন মিটে গেলে
শরীরেও পোকা লেগে যায়
আগুনে পুড়ে ছাই বা মাটির তলায়
অপেক্ষা নষ্ট হবার
কাছের মানুষগুলো চোখের জলে
ঝাপসা দৃষ্টিতে বাড়ি ফেরার রাস্তা ধরে।
-
আমি আমার একলা ঘরেই সুখী
তোমার থাকুক সাতমহলা কোঠা
আমার ঘরের সলতে প্রদীপ যত
তোমার ঘরে বাড়াক উজ্জ্বলতা।
আমি আমার ছোট্ট কুঁড়ে ঘর
স্বপ্ন আসা সেই ঘরেতে মানা,
তোমার ঘরের রঙিন সীস মহলে
ইচ্ছে যত মেলুক আবার ডানা।
আমি আবার একলা ঘরে রবো
সঙ্গী হবে অনেক কথার স্মৃতি,
তুমি আবার অতীত ভুলে বাঁচো
নতুন সুরে নতুন জীবন গীতি।
আমি আবার শান্তি পাবো মনে
গালের উপর জলছবিদের ছাপ,
যা ছিল সব উজাড় করে দিলাম
ভালো থেকো ,রইল আশীর্বাদ।।-
ওরা মানুষ, ওরা প্রতিমুহূর্তে বাঁচে
ফুটপাতের নোংরা কোনে,
হাত ছাড়া, হাত পেতে ওরা বাঁচে।
ওরা বাঁচে আগুন ঝরা দুপুরে
সস্তা বরফের রঙিন গোলা বেচে,
নির্জন রাস্তায় গলা চিরে, ওরা বেচে।
ওরা মানুষ, ওরা সকাল হলে জঞ্জালের
গাড়ি ঠেলে, দুর্গন্ধ আর মাছি ভিড় করে চারপাশ
স্টেশনের শৌচাগারে বসে তৃপ্তিতে ভাত খায় ওরা
ওরা মানুষ ওরা প্রতিমুহূর্তে বাঁচে।
স্বর্গের স্বর্গীয় দেবালোকের ঈশ্বরকে অবাক করে
ওরা মানুষ, ওরা মানুষের মতো বাঁচে, ওরা প্রতিদিন হাসে।।
-
-তুমি যে বলতে আমাকে না দেখে তুমি একদিন থাকতে পারো না, তবে দু'বছর থাকলে কি করে একটুও কষ্ট হয়নি ?
-আজ আমার কাছে নিয়ে যেতে এলাম তো।
-চলো আমরা চলে যাই। জানো রোজ তোমার কত অপেক্ষা করেছি গেটের সামনে, তোমার গাড়ির আওয়াজ শোনার জন্য কান পেতে দাঁড়িয়ে থেকেছি, কত ডেকেছি চিৎকার করে তুমি সাড়া দাওনি।
-সারা কি করে দিতাম ক্ষ্যাপা?
-আচ্ছা ,তুমি কি মিথ্যা বলতে? যে আমার চোখের জল তুমি দেখতে পারো না, তবে চলে গেলে কেন।
-ইচ্ছে করে তো যাইনি , আমার কাছে নিয়ে যাবো আবার, আর তোমার চোখে জল পরবেনা।
-তুমি মরে গেলে কেন বাবা?
-মৃত্যু তো মানুষের হাতে নেই বাবু।
-বেশ, চল আমরা যাই।।
-
সম্মান আর স্বাধীনতা পরিবারের ,
শরীর আর মন প্রিয় পুরুষের।
রক্তাক্ত একটা হৃদপিণ্ড নামের যন্ত্র
কয়েক ফোঁটা নোনা জল
হ্যাঁ মেয়ে , এইটুকু তোমার একান্ত নিজের।।
-