মেঘ
--------
কতবার তোর দেওয়াল ভেঙে আমি ইউরেকা পেয়েছি
বারবার...।
কোন আদরে কি সুন্দর উত্তাপ মেপেছিলি থার্মোমিটারে!
কতবার তোর ঘনীভবনে বন্যা পেরিয়ে নোঙর বেঁধেছি জীবন সাগরে,
আবার আয়না ভেঙে ঘুম পাড়িয়েছি বিভীষণকে।
অসমাপ্ত কবিতাগুলো আতঙ্কে আজ মহীরুহ পতনের।

এ মৃত মরুতে মেঘ আসে বারবার
পরোক্ষ বহু টান, মহত্ত্ব বেড়েছে কোকুনের খোলসে
আমি আমিত্বকে খুঁজেছি তোর অবাক অভিপ্রায়ে।

আজ আবার ছুঁয়েছি জিয়নকাঠি,
যদি আরো একবার বেঁচে উঠতে পারি
অক্লান্ত কালো বৃত্ত বেরিয়ে।
যদি আবারও উড়তে পারি জীমূত প্রান্ত অবধি,
তবে বুঝিস,
আমি ডাকবাক্স বদলে ফেলেছি।।

-

মরুগোলাপের সম্মিলিত ঐক্যতানে বিধ্বস্ত আহির ভৈরব,
দিগন্ত বিস্তৃত মরুপ্রান্তে মেঘের অভিমান।
বিক্ষত পাতা জুড়ে কলমের বিদ্রোহ বড়োই প্রাসঙ্গিক আজ!
হয়তো আমার চিঠিগুলো এখনও বাক্সে পচে মরে
তোর অবসরের অপেক্ষায়।
আমারও তো মাঝে মাঝে বৃষ্টি হতে ইচ্ছে করে,
ইচ্ছে করে সেই সাঁওতালি কবিতা হওয়ার
তোর আবৃত্তির অপেক্ষায়..।।

-

প্রেম?
সে তো বহুদূরের গন্তব্য!
আমি তো এক ক্লান্ত পথিক মাত্র।

-

অচেনার বহু পথ চেনার আনন্দ
পেয়েও না পাওয়ার বিপর্যয়,
ফেলে আসা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে আবারও।
কোকুনের খোলস ছেড়ে মথের আলোক গামী গন্তব্য
আমি কথা দিয়েছিলাম --- কথা রেখেছি।
আমি কথা দিয়েছি --- কথা রাখবো।
আরো একবার,
কথা দিলাম।।

-

তুমি গল্প বলেছিলে
আমি তন্ময় হয়ে শুনেছিলাম।
তুমি মেঘ হয়েছিলে
আমি চাতকের প্রহর গুনেছিলাম।
তুমি কবিতা লিখেছিলে
আমি তোতার বুলি আওড়েছিলাম।
তুমি জড়িয়ে ধরেছিলে
আমি জড়িয়ে পড়েছিলাম।
তুমি ঠোঁট ভিজিয়ে দিয়েছিলে
বুঝিনি , বিষ ঢেলেছিলে।

-

আমি কি স্বপ্ন দেখছি!
নাকি ভ্রম!না মায়া আমায় ঘিরে!
প্রতীক্ষার বিষপান করতে করতে
আমি নীলকন্ঠ হয়ে গেছি।

তবু, বহু অপেক্ষা পেরিয়ে
পারিজাত আমায় চিঠি লিখেছে ---
সে আসছে।।

-

মানিয়ে নেওয়ার দৌঁড়ে বড়োই ক্লান্ত।
অবসন্ন চাহনির অস্ফুট শব্দ।
না ঘুমোনো দুটো চোখ আর কৃষ্ণ বৃত্তের ব্যঙ্গ।
অমিল হিসেব।
বেহায়া প্রেম।
কাঙাল কলমের বৃথা ভিক্ষার ঝুলি।

-

ব্যস্ত কাল
অবসরের লেশমাত্র নেই
স্মৃতিমাখা মাস্ক আর পোর্ট্রেটের পাতা
বেহায়া প্রেম বাধ্য কলম
গোলাপি গেঞ্জি আর আকাশ রঙা জামার ঝাপসা গতকাল
অতীত নদীর চর আর সিক্ত ঠোঁট
তোমায় ছুঁয়ে থাকা আমার বিরামহীন বিরহী কলম

-

আমি কখনো বিহঙ্গের ডানা হতে পারিনি
আমার আকাশটা কখনো মহাকাশ দেখেনি।
অধীনতাই স্বাধীনতা আমার কাছে,
সে স্বাধীনতার কোনো অবকাশ নেই।

আমি বন্দি, সে মুক্ত প্রাঙ্গণ
আমি কৃষ্ণ, সে জ্যোতি
বৈপরীত্যের মিলন অপার্থিব বটেই,
তবে প্রণয়ের আকাঙ্খা প্রবল ছিলই
নিঃসন্দেহে...।।

অবৈধতার হোমাগ্নি আমাকে পোড়াতে পারবে না কখনো,
বহুদিন আগেই আমি আত্মাহুতি দিয়ে দিয়েছি।।

-

পাথুরে রাস্তার দমকা ধোঁয়ার আলিঙ্গন আর
দম বন্ধ হয়ে আসা মুখোশের চুম্বনে
বিরক্তিই কেবল নিজের করে নিল।

স্মৃতিরা বেহায়া বড়োই !অবাধ্যও বটে
তবে, রোমন্থনই নিশার জ্যোতি
অবহেলা বড্ড আপন,চক্ষু আড়াল করে না আমাকে!
জানো, এতেই আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি।

' তুমি ' নামের খোলা জানালায় আবার কপাট পড়ে গেছে।
আজকাল বড্ড শ্বাসকষ্ট হয়, বুঝলে
হাজার হাঁতড়েও এক মুঠো রোদ্দুর আমি ধরতে পারি না।
তুমি আসবে না জানি
তবুও অপেক্ষা করার বদভ্যাসটা ছাড়তে পারিনি আজও।।

-