মাথায় জটা পিঙ্গল নয়ন
ব্যাঘ্র চর্ম অপরূপ তার সাজ
কপালে যার তিলক চন্দন
তিনি শিব শম্ভু শঙ্কর নটরাজ

হাতে ডুমরু বাঁধা ত্রিশূল
শরীরে ছাই ভষ্ম আর রুদ্রাক্ষ
সর্বক্ষণ থাকে তার শিষ্যদের দল
ভূত প্রেত আরও যে থাকে যক্ষ

গলায় তার বাসুকি নাগ
সাথে থাকে ভৃঙ্গী ও নন্দী
সমুদ্রমন্থনের বিষ খেয়ে
করেছে নাম ধারণ নীলকণ্ঠী

মাথায় মুকুটের ন্যায় যার
মা গঙ্গা সদায় বয়ে যায়
ভালে চন্দ্র বিরাজ করে তাঁর
যাঁর ঊর্ধ্বে আর কেহ নাই

আকন্দ ধুতুরা বেল পত্র
এতেই যিনি থাকে সন্তুষ্ট
যাঁর কোপে বিশ্ব চরাচর
তিনিই যে আমাদের মহেশ্বর

দুধ ঘি আর থাকে পূজায় নৈবেদ্য
যার আশীর্বাদে উজ্জ্বল হয় ভবিষ্যৎ
যিনি হলেন আমাদের সবার প্রিয়
দেবের দেব তিনি হলেন মহাদেব।

-

নিঃস্ব ধূলিকণার মেঘে উঠেছে ঢেউ
স্মৃতির কোণার দ্বারে নড়েছে কানের দুল
মনখারাপির জল-কাজলে দেয় না সাড়া কেউ
একাকীত্বের আঁচলে তাইতো বাঁধা এ খোলা চুল

-

কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে যেই না সূর্য উঁকি মারে
আলো আঁধারি খেলায় তখনই একাকীত্ব গ্রাস করে

-

কংক্রিট জীবন বাইরে যেতে চাই মন
শহর জুড়ে বানায় কত ভগ্ন প্রেমের স্তূপ
চোরাবালির ঢেউ কেউ বোঝে না তখন
প্রেমের এপিফ্যানি যখন খনন করে কূপ।

ক্যাকোফোনির রাত চোখের বালির অজুহাত
আফিমের নেশায় লিখতে থাকে ইতিহাস
চোখে জলস্রোত আর গল্পের টানে রাত
এ ভাবেই কাটে কত পাঁপড়ির লীলার রাশ।।

-

যতই আসুক কালবৈশাখী
যতই আসুক বন্যা
বসন্তের ওই গান গেয়ে যায়
ফাগুনের মিষ্টি কন্যা।

গানের মধ্যে লুকিয়ে কথা
কজনই পাই তা বুঝতে
মনের ব্যাথা মনেই থাকে
কেই বা পারে মলম লাগাতে।

সময়ের মূল্যের ভার
কেউ রাখে না তার হিসাব
নিজের কাজে সবাই ষাঁড়
অন্যের কাজে ভালো হয় শাপ।

যাবার সময় হলে সব যাবে চলে
নিজের কর্মের ফল যাবে শুধুই ফেলে
ফল ভোগ সবার এ জীবনেই ঘটে
অপেক্ষার প্রহর গুনে জীবন শুধু খেলে।

-

শীতল পৃথিবী ক্লান্ত হৃদয়
এক চুমুকে সূর্যের গহন
দুর্গম গিরি চঞ্চল মন
যাওয়ার পথে আছে বারণ
এক পেয়ালা কুয়াশা ও ফ্রাস্ট্রেশন
মেটায় নিকোটিনের কত কালো বন

-

রোদ মাখানো ইচ্ছেরা সব গেছে আজ পুড়ে
সূর্য তাই একলা হয়ে বসে দিন শুধু গুনে
মেঘ বৃষ্টি এক হয়ে সব আপন সুরে নাচে
অমাবস্যার চাদরে তাই চাঁদের প্রাণ বাঁচে

মেঘ বৃষ্টির নাচ দেখে সূর্যের তেজ বাড়ে
চাদর খুলে চাঁদ তাই আপন নিশ্বাস ছাড়ে
চাঁদ সূর্য দুই বন্ধু মিলে আপন জাল পাতে
মেঘ সেই জালে শুধু পড়ে দিনে রাতে

এবার বৃষ্টির সূর্য ছাড়া কাটে না আর দিন
প্রকৃতির এটাই নিয়ম তাই চুকাতে হয় ঋণ
প্রকৃতির নিয়মে সূর্যের মুখে ফুটে হাসি
বৃষ্টি একলা হয়ে এবার কেঁদে ফাটায় বাঁশি ।

-

ছয় ঋতুর এক অপূর্ব বৈচিত্র্য
একে একে গান গেয়ে যায় বিচিত্র
এচোঁড়, সজনে, নিমের খেলা হল শেষ
পটল ঝিঙে ঢেঁড়স সব আসছে বেশ।

চৈত্রের কাঠ ফাঁটা রোদ ধূ ধূ করে সব মাঠ ঘাট
বসন্ত যায় চলে, পরিয়ে রঙিন কাপড়ের ঠাট বাট
কাঁচা আমের আচার এবার সকলের ঘরে ঘরে
দমাল হাওয়া বার্তা দেয় বৈশাখ আছে দ্বারে।

চৈতালীর কান্নায় বৈশাখী এলো সবার ঘরে
তার আগমনের কত আয়োজন সবাই করে;
বাজার যাওয়া,নতুন জামা,ঘর সাজা আরও কত কি
ইলিশ মাছ ও ভর্তার সাথে পান্তা ভাতে যদি পড়ে ঘি।

বাঙালির দোকান পুজো এই পয়লা দিনে
মন্ডা মিঠাই ফল থাকে অপূর্ব আয়োজনে
বাগানে থাকে বেল, জুঁই, টগর, বকুল, চাঁপা
আম,জাম, লিচুর সঙ্গে থাকে কাঁঠালের কাঁটা।

শহর জুড়ে করছে তাই বর্ষবরণের সাজ
পয়লা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানায় আজ
ছোটদের ভালোবাসা, বড়োদের জানায় প্রণাম
সবাই মিলে বরণে করি - এসো হে পয়লা বৈশাখের নাম।

-

শূন্য দিয়েই হয় শুরু,আবার শূন্য দিয়েই শেষ
শূন্য থেকেই শুরু এই সময় চলতে থাকে বেশ
ফুরিয়ে যায় রাত-দিন, ফুরিয়ে যায় ঠিক সময়
তবু কোথাও যেন থেকে যায় কোনো এক কালো ভয়
ভয় থেকে জল ,জল থেকে জয়, জয় থেকেই জীবন
জীবনের কাছে যেতে সময়ই যে হল মূল ধন
যাক চলে সময় ,আসুক ফিরে কত অসময়
লড়তে হলে যুদ্ধে মারতে হবেই চার নয় ছয়
তবু পাবো না তো কভু মনের মধ্যে ভয়
সময়ই দেবে ফিরিয়ে প্রতিটি জীবনের বই
এই আশাতেই বাঁচুক প্রতিটি অপেক্ষার বন
অবসান ঘুচিয়ে আসুক ফিরে তাদের ঘরের মন ।।

-🍁 শতাব্দী মাজি 🥀

-

বৃষ্টির অপেক্ষায় আছে প্রকৃতি
বিহগের আছে কত শত মিনতি
রামধনুর রং পড়েছে এ রক্তবুকে
হারিয়ে যেতে যে চাই তোমার সুখে
চোখ দুটি বিভোর তোমার নেশায়
নিয়ে যেতে চাও কি তোমার দিশায়??

ঘনিয়ে এল যেন এ কোন এক আলো
চাইলেও হবে না তো আর কালো
বাতাস ভরা ওই মধুর বৃষ্টির ছটায়
ক্যালেন্ডারে দিন গুনি এক আশায়
জানালা হতে দেখি বারে বারে সে পথ
আসবে কি আমার জন্য তোমার বাঁধা রথ??

-