বাতাস যেদিক দিয়ে যায় সেদিকে কোনো ডাকঘর নেই।
ফকির পাহাড়ের গায়ে মিথ্প্রিয় পতাকা চেয়েছে নিশ্চয়তা।
তুমি রঙিন হয়ে উঠলেই সে আপেক্ষ মিটে যায় তার।
করাতকলে দুঃখ চিরে ঘুরপথে হেঁটে আসো।
পথ জুড়ে ছড়িয়ে আছে শিকার বৃত্তান্ত আর সমূহ পালক।
ভয়ার্ত শালিকের চোখে ছিঁড়ে যাওয়া ব্যথা
ক্রমে ভারী হয়ে এলে
গ্রামদেবতার থানে মানতের মত ঝরে পড়ো শোকে, বিশ্বাসে।
অথচ, আড়ালে দেখেছি কতবার
গেরস্থি চৌকাঠে আলপনা হয়ে ফুটে উঠতে
অনেক দিনের গানে।-
জলে নেমে যাও তুমি
ভিজে আসে দিনভরের ব্যস্ততা।
এমনই নরম এ আত্মসমর্পণ।
মৃদু দিন শেষে ভেসে যায় ছোট আলো।
হাওয়ার বিনিময়ে পাওয়া ছেঁড়া গান।
ম্লান চরাচর।
দায় নেই, তাও যেন থেকে গেছে সমূহ বাঁধন।
আমাদের মাঝখানে যে অনিবার্য স্রোত
তার কিনারে আসি রোজ, অবেলায়।
জেনেছি
যতটা জল লেগে আছে আমার হাতের তালুতে
ততটুকুই তোমাকে পাওয়া।-
ঘুম প্রহর
__________
শীতের কার্ডিগানে কিছুটা রোদ আটকে আছে।
আলগা আলো ও গল্পেরা পাশাপাশি, কিনারা ছুঁয়ে।
কলমের দাগে মিলিয়ে গেছে বিকেল।
পিয়ানোর গা বেয়ে শিশির ঝরবে এখুনি। টুপটুপিয়ে। আধভেজা ফুল।
কোথা থেকে কতদূর চলে যাই নির্জন জ্যোৎস্নায়।
মফস্বলের বিন্দু বিন্দু আলো কাঁপে।
দূরের শাঁখ, ভাঙা মেলা, মেয়ের হালকা লাজুক হাসি।
লালচে পাহাড়ে মেশে তুলো তুলো আদর।
পথে শুয়ে থাকা ধুলোবালি একদিন খনিজ হয়ে যাবে।
রাঢ় বাংলায় একটানা চিরল উৎসবে মাতবে হরিনীরা।
সেদিন কি অভিমান ছুঁয়ে তোমার ঘুম ভাঙাতে পারবো?-
কতোটা ছায়াপথ এখনো লেগে আছে তোমার ভেতরের ঘরে, অতন্দ্রিলা?
তোমার ট্রান্সপারেন্ট ওড়নার নীচে খেলা করে বেড়ানো মেঘরোদ্দুর
আর আজন্মলালিত রূপকথারা সন্তর্পনে মিশে যাচ্ছে সাতজন্মের প্রতীক্ষার সাথে।
হেঁটে যাও বড়ো রাস্তা বেয়ে।
ডান হাতে আইপ্যাড, বাঁ তে বই।
তোমাকে ধরতে চাওয়া গানগুলো বাজতে থাকে ট্রাফিক সিগন্যালে।
তার ভেতর দিয়ে কেটে কুটে এগিয়ে চলো তুমি, অসম্ভব নির্লিপ্ততায়।
দুটো একটা স্বপ্ন নিয়ে পালিয়ে আসি আমি ছায়াপথ দেখা মুলতুবি রেখে।-
সেইতো চলে যাবে জেনে
দেয়ালে গেঁথে রাখি ভ্রমণ বিষয়ক দিনগুলি।
একান্ত হাওয়ার কাছে যৌথ ছুটির অঞ্চল।
বিবাহপ্রস্তাবে তুমি কলমীর মত লাজুক,
মেঘসূত্রে গেঁথে চলো বলাকার চোখ।
আকুতিজলে পরবাসের নৌকো
দুলে ওঠে ভ্রমণস্বভাবে।
ভাবি কোনো বিকেলবয়সে তোমারই সহজ হাতে গেঁথে দেব
আলো - হাওয়া - জল।
তুমি চলে যাবে তাই শীত আসবে দু'মাস।
অরুণা ম্যাডামের স্কুল পেরিয়ে বেড়ে উঠবে হলুদ সর্ষেক্ষেত।-
আসলে নিজেকে কেটে ছড়িয়ে রাখছি ধীরে ধীরে
যন্ত্রনাখচিত মাংস, রক্ত থেকে ঝরছে সুবাস।
লোকেরাও উৎসাহে টুকরোগুলো তুলে রাখছে ঘরে
আমার শুন্যতা খেয়ে শিশুরা বেড়ে উঠবে কিছু মাস।-
গলেছ মুঠোর মধ্যে, জমেছ মেরুতে যেন হিম।
সংশয়ে ঢালু দিনে জঙ্গলের আনাচে কানাচে।
অতঃপর শিকারের গন্ধ খোঁজা হাতেরা আদিম
তোমার হরিণচক্ষে বিষ তীর গেঁথে দিয়ে গেছে।-
জীগ'স পাজ্ল
__________________
এইখানে পৃথিবীর শুরু। এখানে কোষে কোষে ছড়িয়ে পড়ে পোড়া ছাই, তামাকের স্বাদ। মহাকাশ গিলে নেয় সবটুকু ধোঁয়া। এইখানে বৃষ্টি পড়ে ব্রেনলাইনে। মোক্ষম বজ্রপাতে ছিঁড়ে যায় স্নায়ু। চামড়ার কালশিটে দাগে সেঁটে দিই ঘুন ধরা পিনকোড। ঘুম কমে যাওয়া শহরের রাস্তায় আস্তে আস্তে পুড়িয়ে ফেলি সমস্ত প্রতিধ্বনি। সেই পোড়াদাগ ধরে কোনো সকালে বুদ্ধের জন্ম। অথচ কারো জন্মের ওপর তার নিজের কোন হাত নেই। গভীরতর অসুখের দিকে উড়ে আসা ভয়ার্ত পাখির চোখে এ সম্পর্কিত কোনো বিবরণ থাকেনা। একথা আমি শতপথ ব্রাহ্মণ পড়েও জানিনি। জেনেছি নক্ষত্রের ছাই ঝেড়ে।-
এই মুহূর্তে আমার করোটির ভিতরে ঝাঁ ঝাঁ শূন্যতা, অন্ধকার।
শব্দহীন মুহূর্ত।
কবে যেন মরে গেছে সেই সোনালী নক্ষত্র।
শুধু সুদূর কোনো প্রান্তরে ক্ষীণ হয়ে আছড়ে পড়ছে তার স্বর।
অজস্র বৈশাখপীড়িত ফুলের মত
ঝরে পড়ে ধূসর বিষাদ,মাঝরাতের শিথিল নির্জনতা।
আমার দুই হাত কেবল প্রার্থনারত।-