এই যে আমি ভালো নেই, এই কথাগুলো লিখতে বসলে কেমন যেন শান্ত হয়ে যায় চারিপাশ। যত শব্দ আছে এই পৃথিবীর বুকে, তাদের একে একে গিলে খায় শূন্যতা। সমস্ত আড়ম্বর আর বেঁচে থাকার বাহানা স্পিরিটের মত উড়ে গিয়ে ভ্যাকুম তৈরি করে চার দেওযালের ভীতর।
জানালার ধারে মেঘের বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়া চাঁদটাও গুটিয়ে নেয় তার জোৎস্নাকে। আমার পাশে তখন পরে থাকে কেবলই অস্তিত্বহীন একটা 'তুমি'।
এইভাবে কেটে যায় আরো একটা শতাব্দী, আবারো বিকেল নামে অ্যানটেনা ছুঁয়ে শব্দের বয়েস বাড়ে,আর ছন্দেরা মিলিয়ে যায় কোন অপার্থিব নিস্তব্ধতায়। শান্ত হয়ে আসে ধূসররঙা একটা জীবনসমুদ্র,যার বুকে কোন মুক্ত নেই,কোন মানিক নেই!
থাকার মধ্যে আছে কেবল হাজারখানেক মৃত ঝিনুক যারা পূরণ হবে না জেনেও স্বপ্ন বুনছে,বুনেই চলেছে ...
আঁধারের এই বিভৎসতা ভেদ করে ঘুম আসে না চোখে। ডাক্তার বলেছে, আমি নাকি ইনসমনিয়া রুগি। টেবিলের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ট্রাঙ্কুইলাইজার, জলপিডেম। রোজই থাকে, কেউ এসে কুড়িয়ে নেয় না, কেউ এসে আঁচল পেতে দেয় না।
বালিশের গায়ে হেলান দিয়ে বসে তারা গুনি, আমি যে নিদ্রাকে বড্ড ভয় পাই! সবাই বলে স্লিপ প্যারালাইসিস; ওরা জানে না আমার স্নায়ুতন্ত্রকে কেবল তুমিই বশ মানাতে পারো।
কলমের কালিটাও বিদ্রোহ শুরু করে দেয় হঠাৎ করে। মৃত পৃথিবীর বুকে আমি ছাড়া আর একটামাত্র প্রাণ - আমার হিজিবিজি লেখার ডায়েরির পাতা থেকে একটা পোড়া গন্ধ ভেসে আসে নাকে।
শব্দেরা কথা রাখেনা; তাকে বর্ণনা করবো বলে পাঁচ দশটা মেটাফোর হাতড়ে বেড়াই, কিন্তু খুঁজে পাই না। 'দুঃখ' আর 'তুমি'র অ্যালিটারেসনটা বারবার এসে ছন্দ কেটে দেয়! আমার সমস্ত ছন্দহীন কবিতার কারণ 'তুমি' এবং একমাত্র 'তুমি'।
আমি যতবার মেলে দিয়েছি এলোচুল, তুমি ততবার জন্নত এনে দিয়েছো আমাকে, ঝড়ের মত এলোমেলো করে দিয়েছো সময়, বুঝিয়ে দিয়েছো গোপনে, জিউসের কাছে যত বিদ্যুতশক্তি আছে তা কেবলমাত্র একটা পুরুষনখের সমান ।।