ঘোর-কলির পদাবলী-৩
এইতো সেদিন, রাধার বাঁশি বাজল যখন করুণ সুরে,
কোথায় তুমি ঘুমের দেশে, শ্যামের থেকে অনেক দূরে।।
সন্ধ্যা প্রদীপ নিভলে আমার অগোছালো এ সংসারে,
হংসধ্বনি বাজলনা আর , কেন কে তা বলতে পারে?
এইতো ক'দিন আগেও তোমার নামের পাশে সবুজ তারা,
জ্বলতে নিভতে আর জ্বলেনা, ডিজিটাল প্রেম দিশেহারা।।
দোহাই তোমার!
দোহাই তোমার!আর এসো না, রাত ফুরোতেই ফিরবে যখন, ;
কালশিটে দাগ ভালোবাসায় ; কাটাকুটি খেলবে জীবন ।।
-
ঘোর-কলির পদাবলী-২
যদি গন্ধ মাখা খামে,
বসন্ত এসে থামে,
কৃষ্ণচূড়া আগুন ঢেলে যায়।
বাঁশি কিংবা চারটি তারে,
কেন কে তা বলতে পারে,
মাধব আজও বাঁধা পরে যায়।।
দিনের শেষে ঘুম না এলে,
বালিশে একা স্বপ্ন ঢেলে,
সেই বাঁশিটাই গান শোনালো আজও।
কাব্যি হোক বা তুলির ছোঁয়ায়,
কিংবা সিগারেটের ধোঁয়ায়,
শ্যামের বুকে পিয়ানো হয়ে বাজো।।
অবশেষে ফুটলে আলো,
রাতের কথা ভীষণ বলো,
মনের ভিতর ঘরে ফেরার গান।
তেমনি এসো যেমন ছিলে ,
বাঁশির সুরে সুর মিলিয়ে,
মুখ ফেরানো তোমার অভিমান।।-
ঘোর-কলির পদাবলী-১
রাধা যদি বাঁশি হাতে,
এমন বাদল রাতে,
স্বপ্নেই বারবার দেখা।
মাধব ব্যাকুল হায়,
বৃথা স্বপ্ন কুড়ায়,
ফুরোলেই আবার সে একা।।
এভাবেই এক হবে,
স্বপ্ন ফুরাবে যবে,
শ্যাম নয় বাঁশি হাতে রাধা।
রাধা রাধা বলে তাই,
শ্যাম কাঁদে অসহায়,
পাগলিনি নয় আর রাধা।।
এভাবে আসছে ভোর
রাত ফুরানোর পর
ক্ষীণ সুরে প্রেম তবু বাজে।
ঘোর কলির এসময়,
গোপন এ প্রণয়
রাধা শ্যাম আসে নব সাজে।।-
শহর জোড়া মন খারাপের বৃষ্টি,
পাকানো কালো মেঘ, অগোছালো চুল, দাঁড়ি-
সব সাজিয়ে নিয়ে বসে আছি।
শুধু তোমার যাওয়ার অপেক্ষা!
যে গান গুলো লেখা হয়নি,
যে সুর কোনোদিন ছুঁয়ে যাবেনা,
একরাশ বিরহ পরিপাটি গোছানো আছে।
শুধু তোমার যাওয়ার অপেক্ষা!
ফিরে আসার কথা মনে হলেও ,এসোনা!
পথে ঘাটে ক্ষুধার্ত মানুষ দেখলে, যদি কান্নায় পায়;
ভঙ্গুর আর এক বিশ্বাসের সেতু গড়ব সেদিন,
শুধু হৃদয় ভাঙার গান লিখবে বলে,
আমার ভিতর সেজেছে গালিবের মেহফিল;
এবার তোমার যাওয়ার অপেক্ষা!!-
কথা ফুরিয়ে গেলে,
ঘুমহীন শহরে মিলিয়ে যেও!
আসছে বছরে আর প্রেম দেবোনা এতটুকু!-
তোমাকে দেখতে চাইলে অন্ধকার দেখি শুধু,
মেঘ ডাকলেই ছুটে যাই জানলার কাছে,
প্রতিবার বৃষ্টি আমায় কত গান এনে দেয়।
জানলার গ্রিলের ফাঁকে হাত টা বাড়াতেই ,
বৃষ্টি তোমার স্পর্শ দিল যখন,
বাইরে বেড়িয়ে সারা শরীর জুড়ে তোমার ছোঁয়া,
এ সর্বনাশা বৃষ্টি আমায় কাঙাল করেনি বহুকাল!
একটু একটু করে তোমার নিঃশ্বাসের গন্ধ পাই এখন,
কত ফুল ছুঁয়ে এসে আমার মনে এসে বসলে,
এভাবে একটু একটু করে মরে যাই আমি রোজ!
তোমাকে দেখতে চাইলে অন্ধকার দেখি এখন,
একদিন ঠিক এই অন্ধকারে মিশে যাবো আমিও!
-
এভাবেই বাঁধা থাকব তোমার সুরে;
যেমন বাঁশির সাথে লেগে থাকে হংসধ্বনি!-
চিঠি জুড়ে দুঃখ লেখা, স্বপ্ন লেখার ভয়।
মেঘের কালো চুল খুলে কে? বৃষ্টি সে তো নয়!
আমায় ছুঁয়ে বৃষ্টি এলে, ভিজবে অভিমান;
স্বপ্ন চোখে লিখেছো তুমি, ভালোবাসার গান!-
যদি এমন হতো,
বৃষ্টি আসলেই দৌড়ে ছাদে চলে যেত জীবন,
যদি এমন হতো নির্দ্বিধায় রাত কাটানোর স্বপ্ন গুলো তোমায় ছুঁত।
যদি এমন হতো, ঘড়ির কাটার পিঠে চড়ে বলতাম একটু অতীত ঘুরে আসি।
সেই অতীতে আড়াল থেকে তোমার বৃষ্টি ভেজা দেখতাম।
তোমার ভিজে চুল পিঠে লেপ্টে থাকা দেখতাম।
দেখতাম, গলা বেয়ে নেমে আসা বৃষ্টি কনা তোমার শরীরের উত্তাপে হারিয়ে গেল কোথায়।
তখন, ঠিক তখনই পিছন থেকে কোমড় জড়িয়ে কাঁধে মাথা রেখে , কানে কানে বলতাম,
শুনছ? তুমি আমার ঘুমপাড়ানি হবে?-
এভাবেই একদিন প্রেমে পড়ে যাব দুজনে,
সকাল গড়িয়ে বিকেল থেকে রাত,
হাজার হাজার মেসেজ এর মাঝে;
"কেমন আছো?"
"কি করছো?"
এভাবেই বার বার প্রেম আসে জীবনে!
এভাবেই একদিন প্রেমে পড়ে যাব দুজনে,
সাত সকালে পাখির ডাক ছাপিয়ে তানপুরা;
সরগম, পূরবী,
কোমল রে ,কোমল ধা , কড়ি মা!
এভাবেই বার বার প্রেম আসে জীবনে!
-