একটা গল্প লিখব তোমার নামে
মস্ত বড় পাহাড় হবে অভিমানের সুরে;

যে সমস্ত মায়াবী
পাতার গায়ে লেগে থাকে বৃষ্টির জলের মতো -
তারাও দেখবে তোমার নামে কত কিছু হতে পারে এই মেয়েটাও !

আসলে তোমার কাছেই সবটুকু
নিমিত্ত রাগে কিচ্ছুটি এসে যায় ?

-

মিশে যাচ্ছে,
বোগেনভিলার আদরে
ক্রমশ রোদ্দুর হয়ে মিলিয়ে যাওয়া
ভালবাসার শহর/
আমার হলদে শাড়ি, পাড়ার মোড়ে
একটানা রিক্সার হর্ন, সাথে
এলোমেলো আলাপ/
শেষে পেলাম একটা গোটা গল্প,
যাতে ছিল রোমাঞ্চ গুচ্ছ!

কিন্তু সে তো বুঝত না,
আমি আলাদা
ভালোবাসি সুখের চাদর, একরাশ
সূর্যমুখীর ছলনা এবং
ঝড়ে পড়া অঢেল স্নিগ্ধতা,
কেবল তার মায়াবী চোখের
ভাষা খুঁজব বলেই/

-

হুহু করে জানলার ফাঁক দিয়ে
অসুখের বৃষ্টি আর শব্দরা
একসাথে ভেসে আসে/
অভিমানে ভিজে গিয়ে আলুথালু
হাতে গেঁথে বসে নোটবুকে/

আমি ভিজেছিলাম একপশলা বৃষ্টিতে
গোটাকতক গোলাপ হাতে,
একটানা ঝোড়ো হাওয়ার শেষে
ছিঁটেফোঁটা শান্তি আর বিশ্বাসে!
কালো মেঘে ভরা থাক
তার ভেজা গায়ের গন্ধ, দমবন্ধ চিৎকার
আর ভুলে ভরা বারোমাস/

ভালো থাকুক; ওইসব একান্ত গল্পেরা
যারা ভালোবাসেনা চিরকাল/

-

নীরবতা সহজ নয়,
এই খোলা মনের
সময়ের প্যাঁচ, আঘাত ও মৃত্যুর/
সেসব পিছনে ফেলে দিলে
আমার দেখা হবেনা
অতৃপ্ত ক্ষুধার মতো
তোমার আফসোসকে!
শেষের পাতায় আকাঙ্খা থেকে যাবে
তোমার হাত ধরে
কোনোদিন দেখা হয়নি
কবিতার মায়াজাল!

এই দুঃখ মেনে নেবো না বলেই
শুষ্কপরাগে লালিত
আমার অর্ধশেষ-মন!
তাতে অতসীর চোখের মতো
মিশে যাচ্ছে আধা আধা তন্দ্রাফুল,
ঠিক অমনভাবে ধ্বনিত হয়েছিল
শেষবারের মতো সুরসারেঙ্গী/

-

মেঘের বাড়ি
--------------------
মেঘের শরীরে চির ধরেছে
বক্ষ মাঝে দেদার ম্লান
শক্ত করে ধরবে জানি,
সুর বদলের অন্য গান।

হাওয়ার সাথে মেঘলা বেশে
উড়ছে তোমার কাজলাবাড়ি,
দিনযাপনের ভরদুপুরে
বাগানবিলাস করছে আড়ি।

নীল দীঘিতে ভাসছে পালক
উপচে পরা রাত্রি হাতে,
মিথ্যে নয়, আজ এসেছি
কেউ না জানুক, তুমি তো সাথে।

-

অস্থির নগরের একপ্রান্তে ঢেউ আজ
বালির প্রলেপ মেখে তার পাশে বসে কারা?

আনমনা চাঁদ যেনো ভেসে যায়
হুঙ্কারে শুনি কেঁদে যায় ওরা।
তবু মন চায়,
আমিও তোমাকে ছুঁয়ে দেখি চোখ বুজে
আলতো ঠোঁটে জল কুড়িয়ে আনি
দু - এক টুকরো করে।

-

তোমার জন্য নদী হবো বলে,
হারিয়ে যায়নি আজও
অকাল শ্রাবণ ভিজিয়ে গেলো
মেঘমল্লার সাজিয়ে তোমার নামে।
দুরন্ত এই সাঁকো বেয়ে
ধরেছি তোমার হাত
ছাড়লে তুমি হঠাৎ করেই
এই স্রোতের সাথ।

-

অবাক হয়ে চেয়ে রই খাতার দিকে
আশেপাশে নেই কেউ,
অস্ফুটে আঁকা দুঃখগুলো দুমড়ে মুষড়ে পড়ে আছে
ওই কাঁপা হাতের শিরায়।
আজ আবার ঝিমঝিম শরীর,
নীল নাইটবাল্বের আলোয় এক জরাজীর্ণ পৃষ্ঠায়
একটা, দুটো করে আস্তে আস্তে গোল পাকাচ্ছে শব্দ
হাতে ধরা সাতদশকের অস্ত্র উলম্ব ' পার্কার '।

টাইমমেশিনের গোলকধাঁধায় আটকে পড়ে
হাজার হাজার রতন খুঁজে পাই,
পৃথিবীর আলো, জল দখল করে নেয় তারা;
সাথে এক সমৃদ্ধ জীবন,
আর অন্তহীন সুখ।

সহস্র অনুভূতি অভিভূত হয় আমার ঐ
একটুকরো আচ্ছাদনে
এক সায়রের নিচে লিখি অকাল বর্ষণের গল্প,
ছিটেফোঁটা কালি পড়ে আছে আর
এক আকাশ শান্তি খুঁজে পাই যেখানে
জীবনের শেষ পাওয়া মুছে যাক তারই কালিতে।
খুঁজে পাওয়া সম্পদ শায়িত থাকুক
অভিমানে, অনুরাগে
দোয়াতের আড়ালে।

-

তোমার জন্য নদী হবো বলে,
হারিয়ে যায়নি আজও
অকাল শ্রাবণ ভিজিয়ে গেলো
মেঘমল্লার সাজিয়ে তোমার নামে।

-

|| সুখী আমি ||
~~~~~~~~~~~~~~
দূরে, বহুদূরে নীল আলোর নিচে রাত্রি নামে
পাহারাদারের বাঁশি শুনে,
ফেরিকরা মাটির পুতুলের বায়না কমে।
বহুতলের নিচে দাঁড়িয়ে খান দশেক রাজারানি মাথায়,
এবার বাড়ি ফেরার পালা।
ভিজে মাটি, ভ্যাপসা দুপুর আর কনকনে নিশি
সারাবছর কপালের অক্লান্ত চাকা ঘোরে
মাঝে মাঝে গোটা দুনিয়ার চোখে
এক চিমটে ধুলো হয়ে বেঁচে রই।
লম্ফের আলোয় দুটো সীমাহীন অপেক্ষারত চোখ
আজ হয়তো নুনভাতের পালা ঘুচবে
একটু শাকপাতা জুটবে।
ছোট্ট মেয়েটার আবদার নেই, অভিমান নেই, দুঃখ নেই
আছে অবাধ বিশ্বাস।
হঠাৎ - ই বৃষ্টি নামে
দর্মার চাল চুঁইয়ে বিন্দু বিন্দু জলকণা,
তারই নিচে আজকের আহার পড়ে।
আমদের দিন নেই, মাস নেই
আছে শুধু কালকের চিন্তা।

তবুও শত শত উচ্চাকাঙ্খীর ভিড়ে আমিই ' সুখী '
এইটুকু আশা নিয়ে সাতরঙা রামধনু খুঁজি।

-