হাত বাড়িয়ে বা মুখ দিয়ে ঠোঁট ছুঁয়ে শরীর ধরা যায়,
মুক্তের মতো হৃদয় ছুতে প্রানের গভীরে যেতে হয়।-
লেখায় মিশে গিয়ে শান্তি পাই।
আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ জানাই আমার যা তা... read more
কান্ডহীন গুল্ম বা লবা
রফিকা সুলতানা
ঝাঁকে ঝাঁকে সোনালি স্বপ্ন চোখের তারায়,
যা পূর্ণিমার আকাশের মতো তারাময়।
এক গ্রামীণ মেঠো ঘাস লম্বা লম্বা গাছ দেখে কল্পনায় বাগান বাঁধলো,
শিশিরের নদীতে নেয়ে বসন্তের সুবাস গায়ে মাখলো।
রোজ রাতে কামিনী রজনীর বেড়ায় ঘিরলো খেয়ালী বাগান,
শুধু ভুলে গেলো তার বদনের ধরণ,
গন্ধহীন বর্ণহীন কান্ডহীন গুল্ম বা লতা।।-
বেগুনি রঙা দেওয়াল
রফিকা সুলতানা
দেওয়ালের রং বেগুনি করলাম,
নীল আকাশের বুকে মাথা রেখে ঘুমোতে চেষ্টা করলাম,
বাগানের লাল গোলাপের পাঁপড়ি ছিঁড়ে ঘর সাজালাম,
সবুজ পোশাক পরে সকাল দেখলাম,
গভীর রাত সমুদ্রের গর্জনের সঙ্গে বুকের ব্যথা মিশিয়ে বাতাসে উড়িয়ে দিলাম।
এতো কিছু করলাম কেবল নিঃশ্বাসের সাথে ঠান্ডা শান্তি টেনে নেবো বলে,
মাঝে মাঝে আকাশি বেশ নেব ঘুমালে ।
কই কিছুই হলো না তো।
আজও আমি আগের মতো মানুষ রঙা,
সবুজ তো দাগ লাগলোনা আমার গায়ে।
বেগুনি রঙেও শ্যাওলা জমলো,
তবুও ঘুম আসলো না।
চিনচিন করা বুকের ঘরে মেঘ জমলো,
বৃষ্টি নামলো তবুও আগুন নেভানো গেল না।।-
ফিরতি কোনো শান্তি হাওয়া বুলিয়ে যাক প্রাণের ছোঁয়া,
পথ হারিয়ে দিক পেরিয়ে বসন্তের পলাশ মাখা রঙিন ভেলা ,
দিক নামিয়ে ভাঙা নীড়ে।
ঝাঁকে ঝাঁকে প্রজাপতি কৃষ্ণচূড়ার রং পরে ঘর বাঁধুক আমার ঘরে ,
হলুদ রঙা পরাগ খেয়ে ওরা রাঙিয়ে যাক দেওয়াল বেয়ে ।।-
বকুল
সেদিন যখন কিনে আনা হয়েছিল আমগাছটি ,
আমি অবাক হয়েছিলাম তাকে দেখে।
ওতো শিশু, কিভাবে দেবে ফল?
ভয় থেকে এলো ভালোবাসা,
আমি যত্ন নিলাম তার ।
সময় গড়িয়ে গেলো ,
এবং আমারো ডালে জন্ম নিলো পাতা।
এই বসন্তে বকুলে বকুলে ভরেছে আমের ভুবন,
আর আমার দেশে বরফের পাহাড় ।।-
সে
রফিকা সুলতানা
ওরা যারা আবেগে বলে,
"ভালোবাসি" ।
তাঁরা ভুলে যায় ভালোবাসির মানে,
আবেগ আর ভালোবাসা এক নয়।
ওরা ডুবে যায় ছলনায়।
এই দুনিয়ায় কারো প্রানে প্রান মিলিয়ে মরে যাওয়া মোটেও সহজ নয়।
বুকের ঘরে মানুষ পুষতে রক্ত শুকিয়ে যায়।
ওদের এই সব কি হয়?-
আমি মানুষ
ভোর হতেই জেগে গেলাম ,
ভয় নামক অনুভূতির দখলে আমি।
মনে ইচ্ছে আমার কেউ নেই,
কেউ নেই ভালোবাসার।
অচেনা অজানা জন সবাই পর,
বেঁধে দিয়েছে অদৃশ্য শিকলে মন।
আমি মানুষ,
কোনো বাবা মার সন্তান ,
আমারও শখ আছে আকাশ ছোঁয়ার ।
রোজ লড়াই করি বাঁচার,
পর কে আপন ভেবে ভালো থাকবার।।-
সূর্যোদয়ের রেশ দূরের ফাঁকামাঠে কুঁড়েতে মেঠ বধূর মুখে,
তখনও নিদ্রায় পাড়া।
সে ঠিক চেনে প্রভাতের পায়ের শব্দ,
গভীর রাতে অসুস্থ ছেলের পাহারা দিতে দিতে ক্লান্তিবোধ বলেনি ঘুমো তাঁকে।
লাল টকটকে সকালে তখনও কুয়াশা,
শীতের ছোয়ায় উঠোন ভিজে।
তার চোখের নিচে জীবন যুদ্ধের ইতিহাস কালো কালিতে লেখা,
গাঢ় ঘুম পাতায় পাতায় আঁকা।
সবাই ভুলে গিয়েছে ওই পল্লী মায়ের কথা,
হাড় আর চামড়ায় মোড়া ফেকাশে মুখের ব্যথা।
ওরা সকাল এনেছে নিজেদের জন্য,
ভুলে গিয়েছে সূর্যোদয়ের রেশ গোটা জীবনে খুব সামান্য ।।-
কোটি কোটি বছর পেরলেও থেকে যায় প্রানের অস্তিত্ব,
খুব জানতে ইচ্ছে করে ,
"দেখতে পাওয়া যায় কি ভালোবাসার জীবাষ্ম"?-