তোমার হরিণ চোখ বড্ড টানে
- রাজু গরাই ৪ঠা মে ২০২৫
সাঁঝবেলার ঐ প্রদীপ খানির পানে
চেয়েছিলাম কৌতুহলে আপন-মনে
তারায় ভরা শুক্লপঞ্চমীর রাত।
রাধাচূড়া ডালের ফাঁকে চাঁদ জেগে রয় গগনমাঝে
অনুভবে বুঝি, কে যেন রেখেছে হাতে হাত !
শরমে তাহার মুখটি রাঙা রতিসংগীতে,
প্রণয় চেয়ে হাসে বোঝায় ইঙ্গিতে।
কাঁপিছে নীরবে অধর দু-খানি,
কৌতুহল মৌন হৃদিচঞ্চল উল্লসি বুকে টানি।
প্রেমের আলোকে বেঁধেছি বাতাসে কানাকানি,
সংগোপনে শুধু হয় না জানাজানি।
সে হাসির ছটাই বুকের নদী ঢেউ তুলেছিল অজান্তেই,
দক্ষিণ হাওয়ায় আলুলায়িত কেশ দুলেছিল নিরুত্তরেই।
তাই কি !
তোমার হরিণ চোখ বড্ড টানে হই আত্মহারা,
ডুবেছে নোঙর একাকী দাঁড়ায়ে নাচে রক্তধারা !-
💥 জন্ম ৩০শে কার্তিক 💥
🔥🔥কবিতা পড়ে তবেই কমেণ্ট... read more
অসুখ
- রাজু গরাই ২০শে এপ্রিল ২০২৫
বিষন্ন ক্ষুধার্ত দুটি নয়ন
অথচ মুখে একদম রুচি নেই,
রুগ্ন চেহারা দিন দিন জীর্ণ কঙ্কালসার
যে মানুষটা সংসারের মেরুদণ্ড!
ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে বুকচিতিয়ে আগলে ছিল...
সেই নিষ্পাপ প্রেমে বড্ড উদাসীনতা
শব্দের ভেতরে কেবল'ই রুদ্ধশ্বাস ভিড় করে।
মন্বন্তর শেষে
একদিন দেখেছিল মাঠ ভর্তি সোনার ফসল।
বেচাকেনা জীবনের শেষ অধ্যায়ে দামহীন মূল্যবোধ!
গায়ে জোর নেই -
কঠিন অসুখ ভালোবেসেছে স্বার্থ ছাড়াই!
চেনা মানুষ গুলো সযতনে বিকায়, হেরিছে হেলায়।-
মুখোশের ভিড়
- রাজু গরাই ১৮ই মার্চ ২০২৫
যা দেখি, তা কিন্তু সত্য নয়
সময় সময় বুঝি শঠ, ভ্রম।
মেনে নিলেও দেখি -
অভিনয়ে সেরা মুখোশের সম্ভ্রম।
খাদ্য পানীয় বস্ত্র যেখানে যা কিছু
নয় নয় তা ভিন্ন,
খায় বা খাওয়ায়
মুখোশের ভিড়ে স্বার্থ প্রমোদ-এ অভিন্ন।
আমি তুমি সে
কেউ তো প্রেমিক সেজেছি অসত্যের অভিপ্রায়ে
সত্য বন্দি কি তাই ফুটপাথে !
ধর্মও তাই বিক্রি হয় উলঙ্গ রাজার নয়নাশ্রু গড়ায়ে।
এই রাজা তোর কাপড় কোথায় ?-
আবার দেখা হবে
- রাজু গরাই ১০ই মার্চ ২০২৫
হঠাৎ কোনো একদিন
না চাইতেই দেখা হয়ে যাবে আমাদের, কোথাও ।
একসঙ্গে অনেক গুলো বছর বিশ পঁচিশ ত্রিশ
ফজরের নামাজ শেষে নয়তো পড়ন্ত আলোয়
দুঃখ শোক ছাড়ায় মধুর মায়ায়
একদিন কোথাও,
দেখা হবে আবার ।
সেই নিষ্পাপ মুহূর্ত আসবে নয়নকূলে।
তোমাকে জানিয়ে রাখি,
কেউ না জানুক, আমি জানি, নয় ভুলে -
মিঠে কড়া নিখুঁত হাসি ফুটবে গগনমূলে।
সেদিন আঁখিপাতে থাকবে না ব্যাজার
মনে তে রবে না কোনো ভার
কেবল দু-চোখে ঝিলিক দেবে স্মৃতির উচ্ছ্বাসে
ভ্রু-ভঙ্গীর বাঁকা মহাবেদনা মিলাইবে, অশ্রুজলোচ্ছ্বাসে।
কোনো একদিন, জানি আবার দেখা হবে ।-
চৌম্বকের সম মেরু পাশ কাটিয়ে সেতুটির বুকে নামে আলুলায়িত সন্ধ্যা
আইপিএল ম্যাচের চিৎকার থেকে দূরে,
বুকের বাঁ-পাশে যে ধ্বনি ক্রমাগত স্পষ্ট হয়-
শুক্লএকাদশীর চাঁদ জানে যে শহর আমার,
সেখানেই দাঁড়িয়ে ফাগুন দিনভর কোকিলের নরম সুর শোনায় ।
মন জানে তুমি নেই, তবুও অপেক্ষা করে তোমার...
এই বুঝি তুমি এলে !
কতটা অবুঝ হলে পাগলিটাকে ভুরি ভুরি ভালোবাসা যায়
কতটা অবুঝ হলে সংশয় ছাড়াই সমস্ত কোষ মিলেমিশে যায় ।
তুমি বুঝলে না বলেই অজানা শোক গ্রাস করে একান্তে !
যদি ফিরে আসো দেখবে স্মৃতি ছুঁয়ে প্রতিটা মুহূর্ত আটকে তুমুল ছন্দে
সহস্র মানুষের ভিড়েও দুটি হাত ঠিকই চিনবে ঐ যে রাই, আনন্দে ।-
বোঝেনি তুমি
- রাজু গরাই ২৮শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫
যে অধিকার অঙ্গীকারে ফিরালে দ্বারে
সে অধিকার কোন মায়াবলে নিই ফিরায়ে!
শত যাতনা সহ্যে দিবস রজনী করি পার
আমার আলয়ে শুধু মেঘের ঘনঘটা, বজ্রপাত বারংবার।
দূরে গিয়ে তব ও মন প্রাণ ওষ্ঠাগত আঁধার ঢাকে
চাতক চাতকীর প্রাণে আকুল আর্তস্বর, পথের বাঁকে।
পেয়েছো কি শান্তির বাণী প্রচারের দীর্ঘ আলোয়
বুনোঘাস লতায় পাতায় মর্ম বোঝে, পার হয় সময়।
তাই তো ফুটপাথের বিবর্ণ আলোয় দেখেছিলেম নির্জন পথে
দরজায় অভুক্ত ভাদ্রের হাহাকারে কড়া নেড়েছিল অবহেলা
শুধু অবহেলা !
পলাশ রাঙানো একুশটা বসন্ত পেরিয়ে গেলেও বসন্ত উঁকি দেয়নি একটিবারও
জল কাদা ঘেঁটে বার বার ফিরেছে ফেলে যাওয়া ঐ স্মৃতি !-
নিঃস্ব হৃদয়ে দাঁড়িয়ে
- রাজু গরাই ২১শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সেই কবে থেকে উতলা হৃদয়ে
দু-চোখের নীচে নিস্তরঙ্গ সন্ধ্যা বয়ে গেছে কত ।
এই বুঝি তুমি এলে -
চোখে চোখ রেখে বলবে 'ফিরে এলেম গো'।
অথচ দেখো, তোমার দেখা নেই !
দরজায় দাঁড়িয়েছে ফাগুন গুটি গুটি পায়ে।
পলাশের রূপ গাঢ় হচ্ছে ক্রমাগত...
শুধু দীর্ঘশ্বাস বয়ে নিয়ে যায় ঝিমানো দুপুরের ক্লান্ত বাতাস
স্পর্শকাতর ছোঁয়া নির্লিপ্ত থাকে ।
অলিখিত কাব্যের ভেজানো ডানায় বৈধ অন্ধকার নির্ভর,
চিহ্ন ছাড়াই বুকের গভীরে জমা হয় শোক তাপ জর্জর !
পথ ভুলেও যদি ফিরে আসো,
দেখবে, ভাঙা মনের ঘরে সেদিনও দরজা উন্মুক্ত !-
বুঝতে পারি না
- রাজু গরাই ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আমি দেখি শতবর্ষের অপেক্ষা শেষে,
ছাতা মাথায় হাঁটছো বিকালের বৃষ্টিমুখর রাজপথে -
অথচ, তুমি বলেছিলে বৃষ্টি অনেক ভালোবাসি ।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ স্মরণ করতে গিয়ে বলেছিলে
একবার আমার দিকে ঐ গভীর চোখে চেয়ে দেখো
তোমার না বলা কথারা কত্ত ভাষা পাবে
আমি রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে দেবো আশ্বাস
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আগলাবো বিশ্বাস।
অথচ, মেঘলা পাহাড় জানে তুচ্ছ কারণে তুমি বিবাদে রত হও !
বড্ড ভয় হয় এখন
প্রখর সূর্যের তেজ মাথার উপর,
ছায়া ঘেরা পথের পাশে দাঁড়ায়ে বুঝতে থাকি
তুমি বলো ভালোবাসি, বুঝতে পারি না...
যদি মুখের উপর দক্ষিণা বাতাসের দরজা বন্ধ করে দাও !-
সুখ
- রাজু গরাই ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ভুল হয়ে যায় না, মানুষ সব ভুলে যায় !
কত না বলা কথার সম্ভাবনা।
তোমায় এক আকাশ ভালোবেসে না পাওয়া -
যোগাযোগের অনিয়মে বিদ্ধ হত বুকে,
দুর্ভাগ্যের বজ্রানলে সম্পর্কের দ্বন্দ্ব মুখে মুখে।
মুখোমুখি চোখাচোখির নীরবতা
পরিচয় পত্রের সার্থকতা...
ভুলে যাওয়া কি এতটাই সহজ ?
বলো, পারবে ভুলে যেতে ?
ঐ অহংকারের অলংকার খুলে
বলতে পারো,
পৃথিবীতে নানাবিধ সম্পদের প্রাচুর্য থাকা সত্ত্বেও
সুখী হতে "কেন চেয়েছি শুধু তোমায়" ?-