।।বর্ণ।।
একলা চলা পথিক যে সে, সরিয়ে রাখে ঐ দুঃখ বিরাগ,
অধরা মেঘের ধারে সাজায় মেঘবালিকার স্বপ্ন সোহাগ;
পাহাড়ি ঝরণার মতো তিরতিরে, কর্তব্যে স্থির অবিচল,
সুগভীর অক্ষিপটে লেখা যে প্রেমের উপন্যাস অবিকল!
কাজলকালো চোখের দৃষ্টি অরূপ, তবু দৃঢ় তার চাউনি,
নিবিড় শীতলতা মাখা আকাশের মতোই উদার ছাউনি;
অদ্ভুত ব্যক্তিত্বময়ী, আস্ত তটিনী আগলে রাখে নিমেষে,
দহন ধরিয়েও ঠান্ডা করে দিতে জানে কোমল আবেশে;
স্বতন্ত্র আলোছায়ায় আবৃত সত্তা, স্পর্ধিত দীপ্তির দর্পণ,
জীবনের প্রতি তার অনন্ত নিমগ্নতাই রচে নিজস্ব দর্শন;
খুব মৌন, অথচ অন্যায় দেখলে প্রতিবাদী তার দস্তানা,
অপার স্নিগ্ধতার শিশির ছড়িয়েই শান্ত নীড়ের আস্তানা;
নির্ভীক সৌন্দর্যের বার্তা, জাফরানী জ্যোৎস্না ওই মাখা,
আজন্মকাল বয়ে চলা সঞ্চিত স্তব্ধতা তার মধ্যেই রাখা;
রক্তপলাশের মতো প্রেমিকা সে, লালচে আভায় মোড়া,
বই ভাঁজে বুকমার্কে অনুভূতির বাস আগা থেকে গোড়া;
তবে কি তার নেই বিষাদ? চোখের মেঘে নামে না বর্ষণ?
তার হৃদয়েও বিরহরা নীরব ছায়ানটে করে চলে কর্ষণ;
অবাধ মেরুর ঊষর যজ্ঞ, বালির প্রহর সেও তো গোনে,
তবু ঠোঁটের কোণে হাসির আঁচড় যে দুঃখবিলাস বোনে!
ওই জলছাপ-আঁখির প্রলাপ, মিলিয়ে যায় শুধু পলকে,
ভাঙতে চেয়েও সবটুকু গড়ে সে নিভৃত ভাবনার ফলকে;
প্রেমিকা থাকুক না এমনই, পথ চলায় ভালো থাকে যদি,
মননে জানি, সেই বর্ণও কোনো গল্পে বাঁধ ভাঙা এক নদী।
-