সন্ধ্যা হতেই ঝড়-বৃষ্টিতে—
রঙ ধুয়ে যায় রাস্তায়।
অনেক দোল দামি ছিল,
এখন বিক্রি হয় সস্তায়।
কথা কমেছে যত দূরত্ব বেড়েছে,
কল্পনা তোমায় কাছে এনে দিয়েছে।-
গঙ্গার পারে রাখা বেরঙিন অবয়বে ঈশ্বরের বাস,
রং চোটলে প্রয়োজন ফুরোয় ঈশ্বরেরও।
এখন—
ঈশ্বরের একাকীত্বের সঙ্গী একা বুড়ো বটগাছ।
বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর,
একাকী ঈশ্বর ও বুড়ো বটগাছ ভাবছে সমুদ্দুর।-
সে বলেছিল- পৃথিবী গোলাকার।
আবার আমাদের দেখা হবেই।
আমি বলেছিলাম- পৃথিবী দেখা সম্ভব।
আমাদের দেখা হলে তবেই।-
বেখেয়ালি
পাহাড়ের বুকে হাতে-হাত ধরে হাঁটছিলাম।
তুমি খুশিতে ছুটলে, ধরতে রঙিন প্রজাপতি।
তোমার কাণ্ড দেখে আমি হাসলাম,
ঠিক যেমনটা হয়ে থাকে সাদামাটা প্রেমে।
একসাথে পাহাড়চূড়ায় ওঠার খুশিতে
খেয়ালই করিনি—
তোমার মন কবেই ছুটেছ শহরের ভিড়ে
ধরতে সেই চঞ্চলপ্রিয় রঙিন প্রজাপতি।-
আমার ভিতর কী আছে? খুঁজিনি কখনও
তেমন কিছুই ছিল না দেখানোর।
কিছু কথা ছিল, কবিতা নিল তা কেড়ে
এখন পেয়েছি সময় ক্ষত শুকানোর।-
‘যতদিন বাঁচব, লিখে যেতে হবে’ এই ছিল আদেশ। স্কুলজীবনেই নিজের ভিতর থেকে কে যেন দিয়েছিল এই আদেশ। আমি বাধ্য ছেলের মতো এই আদেশ পালন করে চলেছি আজও। স্কুল-জীবন ও কলেজ-জীবনে যাকিছু কবিতা লিখলাম। চাকরি-জীবনে এসে বুঝলাম এতদিন যা লিখেছি তা কিছুই যথাযথ হয়নি। ফলত এতদিনের সমস্ত লেখালেখির মধ্যে থেকে বাছাই-করা কবিতার লাইন ও ভাবনা নিয়ে নতুন করে লেখালেখি শুরু করলাম। যোগ হল আরো নতুন ভাবনা। সৃষ্টি হল একগুচ্ছ নতুন কবিতা।
এরপর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ চারটি বছর (২০২০-২০২৩)। এই চার বছর শুধুই লিখে গিয়েছে অনলাইনে। অর্থাৎ এই YourQuote-এ। ২০২৪-শে গত চার বছর ধরে লেখা কবিতা একত্রিত করে প্রকাশিত হয়েছে ২টি বই। নাম- ‘আমার শূন্যতা মর্গের মতো ঠান্ডা’ ও ‘বুক বেয়ে নামে বৃষ্টিরেখা’। ২০২৫শে প্রকাশিত তৃতীয় কবিতার বই ‘বহুকাল কথারা ফেরেনি বাড়ি’।
প্রতিদিন নতুন কবিতা লেখার চেষ্টা করি, কখনো বিফল হই। কখনো হই সফল। বুঝেছি জোর করে কিছু লেখা যায় না। লেখালেখি চলে মনের গতিতে। ভাবনা-চিন্তা চলছে প্রতিদিন। লেখালেখির প্র্যাক্টিসে থাকতেই ডাইরি লিখছি। পড়ছি, শুনছি, ভাবছি- এই তিনটি কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখছি। চতুর্থ কবিতার বই লেখা শুরু করেছি গত মার্চ মাস থেকে। কারণ, ওই যে ছোটবেলা কেউ আমায় বলেছিল 'যতদিন বাঁচব, লিখে যেতে হবে।'-
নিখোঁজ
কানের পাশে যেই কাঠগোপালটি গুজে রাখো
তার যত্ন নাও সাবধানতার সাথে।
প্রতিদিন ভীড়ের মাঝে হারিয়ে ফেলছ—
আরেকটি কাঠগোলাপ, যা তুমি রাখো হাতে।
ভীড়ে যারা হারিয়ে গিয়েছে,
তারা সকলেই কি বাড়ি ফিরতে পেরেছে?
রোদ-জলে নষ্ট হাজার নিখোঁজের বিজ্ঞপ্তি।
কতজন অপেক্ষাতেই আত্মঘাতী হয়ে উঠেছে।
সহজলভ্য যা কিছু যত সুন্দর, গুরুত্ব তত নেই
লোকচক্ষুর নজরে সকলেই বেশ পরিপাটি
অন্ধকারে কবে কে কার খোঁজ রেখেছে?
লাল পলাশ যতই দেখি, মন চায় শ্বেত পলাশকেই।-