নদীর এক ঝাঁক মাছ তোমার চোখে সাবমেরিন, তুমি বললে।
আমি তাকিয়ে দেখছিলাম ফেরিঘাটের তাড়াহুড়ো, তোমার চাহনি।
অনেক শেষে স্রোত ডিঙিয়ে মাছরাঙা রং মাখা আকাশ তোমার, দেখেছিলাম।
বিকেল গড়িয়ে আলো তখন ফানেলের মধ্যে থেকে চুঁইয়ে পড়ছে।
গোটা শহরটা ভীষণ ভাবে পুড়ছে,তবু কংক্রিটের অসাড়তা- ভেন্টিলেশন্ ...
বাকরুদ্ধ, বারুদ বার্তা - যুদ্ধে তুমি গেলে আর এলে না, ফিরলে না !
তোমার গায়ের সুগন্ধ, নিব ভাঙা কলমের গায়ে ফোঁটা ফোঁটা হয়ে জমে;
অথবা কাগজে- কার্বনে বিবশ হয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছি, কত...বার।
তোমার পৃথিবী যুদ্ধ ভুলেছে, তবু তুমি নিশ্চিন্তে নেই যতটা থাকার মধ্যে ছিল।
যুদ্ধকামী খাঁচা ছেড়ে যেদিন তোমার মত ডানা পাবো, আমাদের দেখা হবে...।
আসলে এ হওয়ারই কথা ছিল, হয়ত কার্বন ডেটিং এ বা অন্য উপায়ে ...
-
দূরে চোখ যায়, যতদূর চোখে হারাতে পারি;
তোমার ইনিবিনি চুল বিনুনি ছড়িয়ে থাকে পেঁজা মেঘেদের গায়ে।
নৈঋতে নৈঃশব্দ্যে কোন নারীর ধমনী স্রোতে তুমি নিরন্তর ছুটে যাও...
একটা পানকৌড়ি শুধু একলা চেয়ে থাকে, দানাপানির তাগাদায়।
চোখ আরো দূরে যায়, চোখে হারায় সব;
একটা সাদা-সুতো নদীতে গিঁট বেঁধে কুসুমরঙা দিগন্ত জলকেলি করে!
প্রিজম চোখে সাত রং চলকে পড়ছে,দুই চোখ আকাশ হয়ে উঠছে...
মনে হয়, এত প্রেম শুধু ওখানেই,যেন কিউপিডের শরসন্ধান !-
এইতো সেদিন দেখলাম, খোঁড়া কাকার ভাঙাচোরা দোকানের সামনে মাছধরা নৌকাটা উল্টো হয়ে আলকাতরা মেখে রোদ পোহাচ্ছে।
ইঁদুরে মাটির আল ধরে ধানক্ষেত পেরিয়ে সবুজ সোঁদা গন্ধ পাই,আর উইঢিবি বুকের ভেতরে ভয় ধরিয়ে দেয়, ক্ষয়-খরা- আকাল যমের ভয়!
অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মোড়া রাতগুলো তেমন নিয়মেই নিকোটিন আর লুসিফেরিন নিয়ে রোজ এসে কালো আর আলো হয়ে হিমোগ্লোবিনে মেশে।
রাত হলেই কারা যেন হেঁটে যায়- নীলচে ছবিগুলো লাল হয়ে যায়।পিডোফাইল্ অসুখটা ওদের আগেই মগজে জন্মেছে, সব নেকড়ে-হায়নার দল।বারুদ,আগুন,বিষ,ছোরা নিয়ে ওদের যাতায়াত।
রাত হলে অনেক ঘরেই আলো আর কালোর বৃত্ত দুই মেলে না বোধ হয়, কেননা ছায়ামূর্তি গুলো যেন কাঁপা-কাঁপা..আবেগ নেই.. তীব্রতা নেই কিচ্ছু নেই.. আছে শুধু লালসা ...রাতটা নিশি হলেই বাইরে'টার মত ঘরেও তখন বন্যতার ছায়া এসে থামে, ভোগ করে ...
প্রতি রাতে অনেক হতাশা আজো তবু হ্যাঙারে ঝুলছে..দুমড়ে মুচড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে.. অনেক বাঁচার স্বপ্নরা আজো চাঁদ দেখে, নক্ষত্র দেখে ..তবু তারা অনেক মৃত নক্ষত্রের দলে পথ হারিয়েছে। অনেক প্রেম আছে এ রাত গুলোতে..
অনেক চুমুক নেওয়া বাকি। বাকিটা... একটা ঘুম আর না হলে অসীম মৃত্যু...-
এইতো সেদিন দেখলাম, খোঁড়া কাকার ভাঙাচোরা দোকানের সামনে মাছধরা নৌকাটা উল্টো হয়ে আলকাতরা মেখে রোদ পোহাচ্ছে।
ইঁদুরে মাটির আল ধরে ধানক্ষেত পেরিয়ে সবুজ সোঁদা গন্ধ পাই,আর উইঢিবি বুকের ভেতরে ভয় ধরিয়ে দেয়, ক্ষয়-খরা- আকাল যমের ভয়!
অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মোড়া রাতগুলো তেমন নিয়মেই নিকোটিন আর লুসিফেরিন নিয়ে রোজ এসে কালো আর আলো হয়ে হিমোগ্লোবিনে মেশে।
রাত হলেই কারা যেন হেঁটে যায়- নীলচে ছবিগুলো লাল হয়ে যায়।পিডোফাইল্ অসুখটা ওদের আগেই মগজে জন্মেছে, সব নেকড়ে-হায়নার দল।বারুদ,আগুন,বিষ,ছোরা নিয়ে ওদের যাতায়াত।
রাত হলে অনেক ঘরেই আলো আর কালোর বৃত্ত দুই মেলে না বোধ হয়, কেননা ছায়ামূর্তি গুলো যেন কাঁপা-কাঁপা..আবেগ নেই.. তীব্রতা নেই কিচ্ছু নেই.. আছে শুধু লালসা ...রাতটা নিশি হলেই বাইরে'টার মত ঘরেও তখন বন্যতার ছায়া এসে থামে, ভোগ করে ...
প্রতি রাতে অনেক হতাশা আজো তবু হ্যাঙারে ঝুলছে..দুমড়ে মুচড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে.. অনেক বাঁচার স্বপ্নরা আজো চাঁদ দেখে, নক্ষত্র দেখে ..তবু তারা অনেক মৃত নক্ষত্রের দলে পথ হারিয়েছে। অনেক প্রেম আছে এ রাত গুলোতে..
অনেক চুমুক নেওয়া বাকি। বাকিটা... একটা ঘুম আর না হলে অসীম মৃত্যু...-
বহুযুগ ধরে বহুমুখী হয়ে তুমি পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছ
আঁকাবাঁকা সে মেঠোপথ, নুড়ি-কাঁকড়ের লাল পথ;
কখনো হেঁটে যাও, সফেদ-ফেনা নীল সমুদ্রের উদ্বাস্তু ঢেউ-পালে
কখনো বা খয়েরী মধ্যাহ্নে বা চোরকাঁটা- কানাগলি শহরে;
আকাশ পথেও তোমার কখনো-সখনো যাতায়াত,
ফটকিরি চাঁদের কলঙ্ক গায়ে মেখে নকটার্ন ছবি আঁকো আর ভাবো;
অক্ষ-দ্রাঘিমা সবেতেই, কোথায় বাদ দিই তোমায় বলতো ?
কত কবি শব্দকোষ ভরিয়ে তোমার কঙ্কালে অবয়ব গড়তে চেয়েছে।
ভরি ভরি গয়না দিয়ে তোমায় সাজাতে চেয়েছে, তুমি সেজে উঠেছো।
কত মরুভূমির উট তোমার বুকে মৌসুমী খুঁজেছে, তুমি তা দিয়েছো;
তবুও তোমার শ্রেষ্ঠ রূপ-রং এখনো খুঁজে চলেছে ওরা, আর আমিও।
সে রূপ তোমার, কখনো কেউ আগে দেখেনি, শুধু কল্পনায় ঠাহর করি!
হয়ত তুমি আদিম কোনো পাহাড়ে, হাঁটুতে মুখ গুঁজে বসে আছো!
সে রূপ আমি বহুদিন খুঁজে যাই, আর তুমি এক পৃথিবীর মায়াবী সম্মোহন...!-
এক পৃথিবীর কোথাও ঘন অন্ধকার, কোথাও এলোপাথাড়ি স্তব্ধতা;
কোথাও এলোমেলো শব্দ-শিকলে কাতরানো অযান্ত্রিক যন্ত্রনা;
ভোরের জাফরান সূর্য,
প্রতিবার আকাশ দেখে।
আকাশ থেকে আকাশে ছড়িয়ে দেয় নীলাভ ছায়াবীথির ছোঁয়া,
পাখিদের পাখায় পিস্টন গতি ওঠানামা করে,সে-আমি যেমন ;
একটা সৃষ্টি জন্ম নেয়,
কাব্যজননে-স্পন্দনে
সেই সৃষ্টি,সেই ভ্রূণ রক্তবীজের মত রোজ মরে,আবার জন্ম নেয় সংযোজনে ।
-
গতকাল খুন হয়েছে, আচ্ছন্ন নীরবতার সাদা চামড়ায় এলিজি লেখা;
অমানিশায় অধরা কুমোরচাকা চাঁদ কাদামাটি- মেঘ মেখে শুক্লা বুনছে।
কাঠ-পিঁপড়ের হুলে অসাড়, ব্যথা-বিকেলে কালসিটে চোখ-রাস্তাধুলো;
কাল-সময় মরেছে, তবু --টিকটিকির কাটা লেজের ছটফটানি তার !
আদিম কোনো স্বপ্নের গায়ে ধারালো করাতের দাঁত, বিষফোঁড়ার গরল;
স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা নিহতের পাশে মাথা কুড়ছে অপদার্থ কুয়াশার আলো।
সেই এলিজিতে লেখা হল রক্ত-চন্দন-সুগন্ধী আতর আর রজনীর মালা;
রংধোয়া পাথর আর কাঁটা ফুলের মাঝে অবিকল তোমার হাতের দাগ... !-
সেই আগুন পাখির মিসিং লিঙ্ক,হয়ত আজও খুঁজে পাওয়া যাবে কোনো পাথরের গায়ে কিংবা কোনো মিউজিয়ামে কাঁচের ফ্রেমে খুলি-কঙ্কালের মেটামরফোসিস্-এ। সূক্ষ্মতা- স্থূলতার মাঝে আরো একটা পর্দা ঘোমটা টেনে বসে আছে। খালি চোখে, ম্যাগনিফাইং গ্লাসে বা কোনো মাইক্রোস্কোপে তা দেখা যায় না, বোধ করি। কাঠঠোকরা পাখিটার ঠক্ ঠক্ করা ঠোঁটে নিরন্তর, মরিয়া চেষ্টায় কীটের বুকে যে ছটফটানি, সেটার খোঁজ খুব একটা কেউ রাখেনা। সেই ভুসোকালিতে ভরা চিমনির গা বেয়ে ভোজ-পিশাচের যজ্ঞ, তা কি ভুলবার! টিনের কৌটোতে রাখা শৈশবের শবস্মৃতি আর পুকুর-ডোবায় যে ব্যাঙাচিদের বুদবুদ; সব কোথাও একটা গিয়ে তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে।তালমিল খুঁজতে গেলে ক্রসওয়ার্ড পাজল্ এ হুমড়ি খেতে হয়। হ্যাঁচকা মেরে জেলের জালে মাছ না ওঠায় যে আফসোসের বিড়বিড়ানি -- সবেতেই যেন একটা চাপা আগুন মিশে আছে। দুহাতে দু-কান চেপে ধরলে একটানা শব্দ শুনতে পাই, সেটা নাকি রাবণের চিতার গনগনে আগুন জ্বলার শব্দ--জানি ওটা একটা মিথ্ তবুও যে অনির্বাণ যা ধিকিধিকি বা কোথাও দাবানলের ঝলসানিতে জ্বলছে, তাকে নেভাবে কে ?..
স্পষ্টত, সেই মিসিং লিঙ্কের রহস্যভেদী জাল অ্যালকেমির মতোই সত্য এবং তা পরাবাস্তব চোখে এসেই ধরা দেয়, যেখানে আলো একইসাথে বৃত্ত-বক্ররেখায় মিশে যায় ...-
তারপর... সেই নদীর পাড় কতবার ধসে যেতে দেখেছি; এককালে কোনো কিশোরীর হারানো পায়ের নূপুর, অভ্রের মত চিকচিকে নোনা বালিতে উদ্ভ্রান্তের মত খোঁজ চালিয়েছি। আদিম একটা রাস্তা আবিষ্কার করেছিলাম, যে রাস্তা দিয়ে জিপসিরা চলাফেরা করত। সে রাস্তায় এখন দুর্গমের বাস, আদিম শয়তানের খোঁয়াড়। পোষ না মানা ঘোড়ার জিনের মত জীর্ণ অসুখ। সেখানে যেতে কোনো ভয়-ই ছুঁতে পারেনা। ছ্যাঁদা কলসির পাশে আরো কয়েকশো-হাজার কলসি জড়ো হয়েছে। ছাই-পাঁশের কালি দিয়ে তিলক এঁকে এদিক -ওদিক অনেক ভন্ড সাধু তুলসীতলায় আস্তানা নিয়েছে। তারা অর্থ খোঁজে, অনর্থ বোঝে না।হালফিলে অনেক কথা বলা হয়ে ওঠেনা, হাইফেনে কথা হারিয়ে যায়। মরণ ফাঁদে,অন্ধকারের বিনিময়ে আলো বিকিয়ে যাওয়াটাই এখন একমাত্র কাজ।
সেই ফচকে, বেগুনী, পেঁজা মেঘটা নতুন করে নোটবুক লিখছে। আগুন পাখির আর একটা রূপান্তর,আর একটা জন্ম সার্থক। তবে এখনো তার একটা বিষয় জানা হয়নি, কোথায় তার মিসিং লিঙ্ক ...?-
কথাদের ফাঁকে বিরাম চিহ্ন থাকে, চিত হয়ে শুলেই তারা এসে মাথার কাছে বসে। একদিকে চাপা কথারা আর অন্যদিকে চিহ্নগুলো দাঁড়িপাল্লায়, বুকের ভেতরে ওজন বাড়ে। কতবার মোমের লাল-হলুদ শিখায় তর্জনী চালিয়ে দেখতে চেয়েছি, সেই ওজন খানিকটা কমে কিনা। অ্যালামান্ডা, কালো ধুতরো'রা উঠোনে বেড়ে উঠতে থাকে, ক্রমশ উদ্বিগ্নতায় তাদের মুখ গোমড়া। ছুটির অবকাশে চালচুলো ছেড়ে, তারা পাশ কাটাতে চায় হিংচে, কলমি, থানকুনির জট। রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে দেখেছিলাম, ছ্যাঁদা মাটির কলসি দিয়ে জল চুঁইয়ে পড়ছে; চেলা কাঠগুলো ঘি এর স্বাদ পেয়ে বীভৎস আনন্দে জ্বলে উঠলো। তারপর পরে থাকল চারকোলের স্তুপ, যা দিয়ে জনা সাতেক ছেলে কপালে তিলক আঁকল ... আর ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিল। প্রতিবার এমন ঠান্ডা ছাই আর নদীর পাড়ের জলমাখানো বাতাস অনুভূতির সাহস জুগিয়ে, জুড়িয়ে দেয় বুকের বাম দিকটা।
বেগুনী রঙের একটা ফচকে মেঘ নোটবুক হাতে যেন লিখেছিল ...আয়ুকাল.. নিশ্চিহ্ন কাল... ছাই থেকে আবার এক আগুন-পাখির জন্মান্তর ...-