তার কাছেই, যে কারন না খুঁজেই -
এক কথায় সব কিছুকে ego বলে দায় সেরেছিলো,
ফিরে এসো...
একা ঘরে কাঁদো, তারপর সব অভিযোগ অভিমানকে
শক্ত করে দড়ি দিয়ে বেঁধে তুলে দাও মনের সব চেয়ে উপর তাকে
ঘুরে দারাও, নিজের জন্য!
নিজেকে ভাঙো, নতুন করে তৈরি করো
সময়ের উপর ভরসা রাখো
সেই স্রোতে সব ঠিক হয়ে যাবে
শুধু এই মন খারাপের অছিলায় যে সময়টা অপচয় করবে,
তার হিসেব হবে না!!-
প্রায় সমবয়সী আরো কিছু সাদা ধুতি কাপড়ে জড়ানো শরীরের ভিরে,
তার সেই ছোট্ট খোকন সংসার আর অফিসের সব কাজ সেরে কখন আসবে,
না আসুক, জন্মদিন বা বিজয়ার দিন...
মা বৃদ্ধাশ্রমের টেলিফোনের দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে,
এই বুঝি ওপার থেকে সেই চেনা গলায় ভেসে এলো, "মা, আমার প্রণাম নিয়ো"
কিন্তু না, আসেনি, চাতকের মতো শুকনো প্রাণ নিয়ে ছটফট করতে করতে ঘুম এসেছে মায়ের চোখে
না না, মায়ের প্রতীক্ষা বৃথা যায় নি!
খোকন তার সব ব্যস্ততা ফেলে এসেছিল তো মায়ের কাছে
মে মাসের প্রথম রবিবার!
কেক আর ঝকঝকে মোমবাতির সামনে মাকে বসিয়ে
অনেক ছবি তুলে নিলো,
ফেইসবুকে বন্ধুদের সাথে ছবি কম্পিটিশন-এ জিততে হবে তো!-
বিন্দু বিন্দু জল পাপড়ির উপর জমে আছে
তার রূপ এখন আগুন ধরানো সদ্য যৌবন প্রাপ্ত একটা মেয়ের মত
একটু পরেই ক্যামেরার লেন্স বন্দিনী হয়ে ফেসবুকের পাতায় ঠায় হবে তার
সঙ্গে জুটবে দুকোলি গান বা কবিতার দুই পংক্তি
তারপর বাহবা জুটবে শয়ে শয়ে....
কিন্তু, এমন মোহনীয় হয়ে ওঠার ঠিক আগে,
যখন ভীষণ বৃষ্টির দাপট আর দমকা হওয়া তার প্রাণ টুকু কাড়তে বসেছিল
যখন ভীষণ বজ্রপাতে তার ঘাড় ভেঙে নুয়িয়ে পড়েছিল একেবারে মাটির কাছে
তখন কিন্তু তার এই প্রশংসাকারীরা-
কাচের জানলার ওপারে খিচুড়ি খাচ্ছিল জমিয়ে!-
এক চিলতে রোদ ঝরে পড়লো চোখের উপর,
ভাঙিয়ে দিলো কাঁচা ঘুমটা!
শিরা-কাটা যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে আজকাল ভোরের দিকে ঘুম আসে
তুমি বুঝি সেটুকু অসুখেও বাঁধ সাধলে?
আমি পাশ ফিরে কোলবালিশটা আরো শক্ত করে ধরেছিলাম
কোত্থেকে তোমার গায়ের গন্ধ ভেসে এলো...
হুরমুরিয়ে উঠে দেখি, টেবিল এর উপর বসে আমি ঘেমে জল, বন্ধ ঘরে ভ্যাপসা গন্ধ!
তাহলে... মেঘ, রোদ, কোলবালিশ, তোমার গন্ধ এসব?
অস্ফুট চোখে রঙিন কাচের গ্লাস গুলোর দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম,
"ও, আজও বোধ হয়, একটু বেশিই হয়ে গেছে!!"-
আমি কোনদিন ভালো থাকা খুঁজে পাইনি
সারাজীবন তোমার কলমে গজিয়েছে অতীতের শ্যাওলা জমা কষ্ট
কখনো তোমার বর্তমান উকি ঝুঁকিও দেয়নি লেখার পাতায়
প্রতিটা শব্দে প্রতিটা জ্যোতিচিহ্নে আমি আমাকে খুঁজেছি
হ্যাঁ, অন্ধকার রাতে তুমি ঘুমিয়ে পড়ার পড়ে, করুন ল্যাম্পের আলোয়
আমি অতিপাতি করে খুঁজেছি আমার নাম-আমাদের ভালোবাসা
তারপর, যেদিন দেখলাম, তোমার বেনামি কোনো এক কবিতার শেষ দুটি লাইনে লেখা...
"তুমি আমার অধরা স্বপ্ন, সেই মায়াবী নীল পরী
আজ এক অপরিচিতার নগন্য প্রেমে আমি সংসারী"
অপরিচিতা? আমি বুঝি আজও কেবল অপরিচিতা?
আমি বুঝেছিলাম, arrange marriage এর রুক্মিণী সেজেই তোমার সংসার করবো
শুধুই সংসার- ইট কাঠ পাথরের সংসার!!
তুমি বাড়ি ফিরবে, আমার রাধা ভাত খাবে, আমাদের ছেলেকেই পড়তে বসাবে
কিন্তু, একান্তে তোমার কল্পনায়...কোথাও আমি নেই
আসলে, কৃষ্ণের পাশে রাঁধার নামটাই সারাজীবন সমাদৃত!!-
হয়তো তাতে গায়ে হলুদের টোল পড়া হাসির সাথে সানাইয়ের সুর থাকবে না
থাকবে, ধূপের ধোঁয়ায় ভেসে আসা রজনীগন্ধার সুবাস
আমি জানি, সেদিন সব অভিমানের পাহাড় টলিয়ে তুমি ঠিক আসবে
চন্দন পড়ানো হলুদ রাঙা আমার মুখের উপর স্নিগ্ধ চাঁদের আলো যখন শেষ বারের মতো চুমু খাবে
কোথাও কি একফোঁটা মুক্ত চিকচিকিয়ে উঠবে তোমার চোখের কোনে?
আমার আলতা রাঙা পা আর তোমার বাড়ির চৌকাঠে ফেলা হলো না
তুমি কিন্তু, আমার পায়ের ছাপটা নিয়ো, নুপুর পড়াবে বলেছিলে, মনে আছে?
তখনও কি রাগটা ক্যান্সারের উপর না দেখিয়ে আমার উপরই দেখাবে?
নাকি, শেষবারের মত আমার আঙুলগুলো ছুঁইয়ে নেবে তোমার চোখে, ঠোঁটে গালে!-
সেবার বন্যাকবলিত বাংলার এর মেঘে মোড়া আকাশের আড়াল থেকে-
August এর শেষবেলায় একরাশ বৃষ্টি বন্ধু হয়ে ঝরে পড়েছিলো আমার কোলে...
তারপরের কয়েকটা august লজেন্স চালাচালিতে কাটলেও,
শেষমেশটায় august আসতে না আসতেই শুরু হতো হলুদ গোলাপের বায়না!
আমি অনেক খুঁজে ঠিক সময়ে হলুদের মোড়ক তুলে দিতাম পাপড়ির চেয়েও নরম হাতে...
কিন্তু, কবে যে december এর ভীষণ শীতের কামড় আর পশ্চিমী ঝঞ্ঝার এক ঝটকায়
ভেঙে গেছিলো শেষ august এর গোলাপ গোলাপ খেলা... বুঝতেই পারিনি!
আজ বর্ষবরণের নতুন চমক ফ্যাকাশে চিঠিগুলোর দিকে আঙ্গুল তুলে হাসে
আমার হৃদস্পন্দন আমারই অচেনা হয়ে কেমন অন্য শরীরে মেশে-
অদিতি জাত'র প্রেমে হিমরাজ মোহিনী হয়ে উঠেছে
আমাদের তো কথা ছিল, গোপন আদরের ছটায় তাকে হারিয়ে দেবো,
আমাদের তো কথা ছিল, নতুন শিশিরে পা ভিজিয়ে জলালপনা আঁকার...
আমি তো নুপুর খুলে খুব সন্তর্পনে এসেছি যমুনাকুলে, মানিনি কোনো বাঁধা,
কিন্তু, কোথায় এত ব্যস্ত তুমি? বোঝনা আকুলতা? "বনমালী, তুমি পরজনমে হইও রাঁধা"-