ছবিটা বার বার মিলিয়ে যায় এক গভীর স্বপ্ন আবর্তে।
যেখানে শুধুই মহাজাগতিক অন্ধকার, আর এক নিদারুণ আসা যাওয়ার অভীক্ষা।
চকিতে আলোর প্রবেশ ফিরিয়ে আনে সেই আদিম মানুষের রক্তহীন সাদাটে ক্ষয়িষ্ণু শরীরটাকে।
নরম মাটির ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ এই জীবন -
কেড়ে নেয় পৃথিবীর সব সাজ। হয়তো নীলচে সময়ের অন্তঃপুরে বাঁধা থাকে এই সাদা কালো মানুষের মিথ্যে ছায়াবাজি।
তবু এই মহাকাশ ব্যাপিত অন্ধকার কে সম্বল করে মানুষ আজন্ম কাল বেচেঁ আছে নিঃশব্দে।
তাই অস্তিত্বের আহ্বানে ফিকে হয়ে আসে সভ্যতা।
শালীনতা একটা অভ্যাস -
রাজার অহেতুক আস্ফালনে।
যেখানে রাতের গহীনতায় ফিরে ফিরে আসে তোমার আমার অলৌকিক উপাখ্যান।
তারও পরে যেথায় মানুষ পরিণত জল্লাদ।
সেখান থেকেই শেষবারের মতন উঠে আসছে পৃথিবীর অবসাদগ্রস্ত স্বপ্নময়তা।
-
সবুজ আলোর স্তব্ধতায় নির্ণীত আবাহন।
আতরের স্পর্শ পেরিয়ে
যেখানে জলজ ঘূর্ণন তারও দূরে
যেথায় সব তারারা একত্রে আগমনী গান গায়
ঠিক সেই নির্মীয়মান লেখচিত্রে তার আগমন।
যেমন থাকে প্রাণ জীবন কৌলিন্যে
হাজার নক্ষত্র অচেনা ছায়াপথে
অন্যথায় মনের অমূল্য সপ্নচ্ছটায়
তবুও একটার পর একটা চিত্রপটে তুমি প্রগতিশীল
সেই প্রগাঢ় মহিমায় জীবন যেন এক মায়াবী সময়ের আখ্যান।
জারুলের নমনীয় প্রকাশে ভেসে থাকে তোমার জাজ্বল্যামান উপস্থিতি
তাই কবিতার আড়ালে আজ ব্যক্ত হোক
তোমার আমার এই জীবনের আশ্চর্য কাহিনী।
-
চির উন্মেষের তরে যে পরিচয় -
আজ থাক সে কোন নতুন আবরণে।
আর সময়ের অহংকার!
সে থাক কোনো পোড়ো বাড়ির নির্লজ্জতায়।
তবু সে ছোট্ট স্বপ্নের বিস্ফোরণ,
নীল আকাশের নতুন আহ্বান।
আবহমান কাল ধরে যে উপহারের
প্রত্যাশী এই পৃথিবী।
তারও পরে যেখানে আকাশ মিশেছে
ভাবীকালের সাথে,
ঠিক সেখান থেকেই তার আগমন -
আমার এই ছোট্ট আঙিনায়।
-
হলদে আলোয় আবছায়া মন খুঁজছিল জলসত্ৰ -
তখন তুমি এলে সোনালী মেঘেদের আমন্ত্রণে।
যেখানে সাদা মানুষের ভিড়ে ঢেকে যায় শহরের আদিম পৌরুষ।
সেখান থেকে ভেসে ওঠে রাতের তারাদের অলৌকিক
কাব্যরথ।
তবু তো তুমি ছিলে-আছো ভোরের প্রথম আলোর স্পর্শে।
তাই হাজার হাজার মুখোশের সীমাহীন আস্ফালনেও-
বেঁচে থাকে তোমার আমার শহুরে স্বপ্নচ্ছটা।-
ধূসর একটা ছবি।
পড়ে আছে ভীষন অবহেলায়।
তবু সে রোজ আসে অলস শান্তির খোঁজে,
ম্রিয়মান ভিক্ষুক হয়ে বেঁচে থাকার যন্ত্রনা । তাও তো নিরুত্তেজ নয় এ বিশাল পৃথিবী ।
দু চোখ ভরে শুধু আবেগের প্রশস্তি।
জানি এ জীবন শুধুই এক অচল সময়ের গুঞ্জন,
যেখানে রাতপাখিরা অপেক্ষায় থাকে এক নিষ্ঠুর সকালের।
আর আমরা পেরিয়ে চলি একটার পর একটা অবহেলা।-
জোনাকিটা নিভজে আর জ্বলছে।
তাই পৃথিবীটাও নিভজে আর জ্বলছে।
আমি সময়ের সাথে যাত্রা শুরু করেছিলাম,
কিন্তু সময়ও এখন স্বপ্ন গুলোর সাথে ঘুমিয়ে পড়েছে।
আমি এখনও নামছি,
আমার গন্তব্য অনন্তকাল দূরে।
জোনাকিটা এখনও বেঁচে আছে,
তাই এখনও আমার চোখ বেঁচে আছে।
-
ফুলের মতো ছিলো যারা নিষিদ্ধ রাতের পাহারাদার,
আজ চিরবদ্ধ জীবনের অবসরে ফুটিয়ে তুলেছে -
এক অবসাধগ্রস্থ শহরের অচেনা রূপরেখা।
তবু মুখে বহমান স্তুতি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা,
উদ্বাস্তু কলরবের এই অজানা পরিসরে-
জিতে যায় সেই বহু প্রাচীন কামনার এক নিস্তেজ অবয়ব।-
সেই পাহাড়ের কোল থেকে নিস্তব্ধতা এসে-
বাসা গেড়েছে পৃথিবীর সমস্ত কোণায়।
প্রতি সকালের মতন আজও তাই-
আকাঙ্ক্ষার ঘরগুল ফাঁকাই পড়ে আছে।
কিন্তু সূর্য যে এখনও তার-
পূর্ব থেকে পশ্চিমের দিকে ছোটাছুটি থামায়নি।
আসলে কেউ মানা করেনা,
তাই আকাশ পথে রবির এখনও গমন-
হয়ে চলেছে প্রতি নিয়ত।
সেই কবে থেকে কেউ আর ভাবে না।
তাই প্রতিদিনের মতন আজও ডুবন্ত সূর্যের সাথে-
মিলন হল সন্ধার।
-
সূর্যের আভা এখন সোনালী।
রাস্তার ধূসর ধূলিকণা তারই আভাস দিচ্ছে,
সোনালী রং একটু পরেই হলদে হয়ে যাবে।
আর সেই হলদে আলোয়ে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে-
আমার শহরের মুখোশটা।
-