হাজার নালিশে বালিশ ভেজে, প্রতিরাতে চাঁদের সাথে আড়ি।
সকাল হলেই মুখোশের আড়ালে বিরহের শোক,চলে সামাজিকতার বাড়াবাড়ি।-
আমের মুকুলে কুশি আম,বুকভরা আঘ্রাণ,
রবির প্রথম কিরণমালা,চৌকাঠে দেয় আলপনা,
একতারাটার টুংটাং,নতুন দিনের আহ্বান।
বুকের ভিতর জ্বলুক আলো, বিদায় নিক সকল কালো,
হিংসা,দ্বন্দ্ব,মারামারি, অপরের ভাঁড়ারে কাড়াকাড়ি,
নিপাত যাক,শুণ্য হোক, তবেই জীবন কাটবে ভালো।
দিয়ে এক মুখ মিষ্টি হাসি,সকলকে বুকে জড়িয়ে ভালোবাসি,
মাছ পান কুলো পাখা, বাঙালির নতুন বছর হোক সুখ মাখা॥
-
সময় কাল দিন ক্ষণ কিচ্ছু জানাও নি,অভিমান নিয়ে অজ্ঞাতবাস!
কেন? কিসের জন্য পেলে আঘাত, বল নি, পাই নি এতটুকু আভাস।
প্রতীক্ষা চোখে অনন্তকাল অপেক্ষা,
একাকীত্ব্রের বেদনায় সেই তোমায় নিয়েই বাস।
তাই সই.. কখনও তো জানতে পারবো তোমার উপেক্ষা,
ততদিন বুকের বামে তোমার সাথেই যন্ত্রণার বাগানবিলাস॥-
কি জানি বসন্ত কি আছে শহরে?
এখনো তো দেখি ফাটা ঠোঁট আর রুক্ষ ত্বকের ছবি দিয়ে,
নিয়নের আলোয় ঝকঝক করে বিলবোর্ড গুলো।
কৃষ্ণচূড়ায় লাল নেই, বাতাসে ফাল্গুনের ছোঁয়া নেই,
তপ্ত গ্রীষ্মের আভাসে দোল খেলার উৎসাহ নেই,
কি জানি আবিরে বুঝি ভালোবাসার ছোঁয়া নেই!
-
মেঘলা পাহাড় জানে মনখারাপের মানে,
মেঘের পালক পাঠায় ছুঁয়ে দিতে গালে।
বাদলা হাওয়া গান গেয়ে যায় কানে কানে,
আউল মন বাউল হয়, ছুট দেয় তার পানে।
সব অভিমান জমা হয়ে আছে নীল খামে,
অসহ্য যন্ত্রণা প্রতিনিয়ত বাড়ছে বুকের বামে॥-
শুকনো ঠোঁট ভুলেছে সেই স্পর্শ,
দূরে দূরে দূরে সে আজ বহুদূরে,যেন কয়েক আলোকবর্ষ।
আরশিও নিন্দুক পরশি,কাজল লতায় কাজল ভয়ঙ্কর অন্ধকার।
সব একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ, বুঝিনা বিষাদ আর হর্ষ।
তিস্তার জলে পা ডুবিয়ে চোখ বন্ধ করে,অনন্তকালের অপেক্ষা..
কান পাতি..ভোরের আলোর বন্দীশ,
ঠিক এই ছবিটাই তো কানে কানে বলতিস॥
-
সম্পর্কটা আজও বাড়িতে সবাইকে জানাতে পারলি না,
অথচ নিয়ম করে সব দিবস গুলো,
কানে কানে ফিসফিসিয়ে করতে ভুলিস না উইশ।
কতোবার বলেছি, থাক না, জানি তো, বলতে কেন হবে?
যখন চুলগুলো সব সাদা হবে, দাঁতগুলো নড়বড়ে,
বয়সের ভারে ঝুঁকে যাব, তখন বারবার বলিস।
চাই না বছরের দু’চারটে দিন,মার্চ আট বা চোদ্দই ফেব,
সবসময় পাশে থাকিস, প্রয়োজনে তান্ডব করিস..
যেমন করেছিল দেবাদিদেব মহাদেব॥-
মধ্যরাতে আচমকা বেজেছিল ল্যান্ডলাইনটা,
বুক ধড়ফড় করে উঠেছিল।
নতুন জায়গা,নতুন চাকরি,ওদিকে বাড়িতে একা মা..
কি জানি বাড়ির খবর আসলো নাকি!
হ্যালো.. কেটে গেল! আবারও..বারবার বেশ কয়েকবার,
নাহ্ বাড়ি থেকে নয়। বিরক্তির সাথে বললাম অসভ্যতা হচ্ছে?
কথা না বললে, রিং করার কি দরকার!
মাফ করবেন, আমি বললেও আপনি শুনতে পাচ্ছিলেন না!
বুঝলাম দূর দেশ থেকে…দূরভাষের সমস্যা! গলায় ছিল কিছু একটা..
দু’এক কথায় কথা বাড়লো,
বললাম দিন ঠিকানা,করুন কাজ,সকালে দেব পৌঁছে আপনার বার্তা..
বৃদ্ধা মা,কি মিষ্টি ব্যবহার খানি,মুখ দেখে মনে হলো কেটেছে বিনিদ্র রজনী।
চিবুক ছুঁয়ে আদর করে বললেন কি নিশ্চিন্তিটাই না করলে..
আমার সাথে খেয়ে যাবে,শুনবো না বাহানা।
আজ থেকে যখন খুশি এসো,আমি তোমার নতুন জ্যেঠিমা!..
ঠিক সন্ধ্যায় বাজলো ফোন,ওপারে সেই কন্ঠস্বর,
মনে মনে যেন অপেক্ষাতেই ছিলাম,ভাগ্যিস জ্যেঠিমাকে দিয়েছিলাম নম্বর!
অচেনা মানুষটির সাথে কাটে কতো বিনিদ্র রজনী,
রাতের চাদরে,তীব্র আশ্লেষে, মাদকতা জড়ানো কন্ঠস্বরখানি॥-
ঝিরিঝিরি বাতাসে,পলাশ শিমূলের জঙ্গলে,গুনগুন সেই গান,
ধামসা মাদলের তালে তালে,জংলা ওই দীঘির ধারে,
নাচের ছন্দে মন হারিয়েছে পুরো গ্রাম।
আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ॥-