ছেলেটা আর মেয়েটা একসাথে বসে ময়দানের সূর্যোদয় - সূর্যাস্ত দেখত , একসাথে নাট্যমঞ্চে থিয়েটার দেখত।
নন্দনের সন্ধ্যার আড্ডা,কলেজ স্ট্রিটের রাস্তা ধরে হাতেহাত ধরে হেঁটে যাওয়া , সরোবরের বৃষ্টিভেজা বিকেল আর তাদের সবচেয়ে প্রিয় গঙ্গার তীরে বসে সাহিত্য , সংস্কৃতি, প্রেম , রাজনীতি , জীবনের এতো বৈচিত্র্য নিয়ে কথা বলতে বলতে কেটে গেছে অনেকটা সময়। মার্চ থেকে ডিসেম্বরের অন্তহীন পথে বন্ধুত্ব নিজের অজান্তেই বদলেছে ভালোবাসায় , সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার অভ্যাস বদলেছে প্রয়োজনীয়তায়।
মেয়েটা একদিন বললো - একেই কি প্রেম বলে ?
ছেলেটা লাজুক হাসি মুখে তাকিয়ে ছিল ভিক্টোরিয়ার গা ঘেঁষে অস্ত যাওয়া সূর্যের দিকে আর দেখছিল সেই সূর্যের লাল আভায় রাঙা হয়ে উঠেছিল মেয়েটার মুখ ।-
এযাবৎকালে আমি তোমার জন্য যত কবিতা লিখেছি ,
তাদের আজ দিলেম ছুটি , তারা ঠিক খুঁজে নেবে তোমায়
আমার অভিমান আর অনুতাপের অগোছালো অক্ষরে মিশেছে
বৈশালীর সন্ধ্যা , কপোতাক্ষ , ছায়ামানব ।
পৃথিবীর তিন ভাগ জলে যেভাবে মিশে যায় জীবনের নোনা স্বাদ ।
তুমি জানতে পারো নি , তোমার জন্য লেখা
প্রতিটা কবিতা আসলে এক একটা আস্ত সমুদ্র ।।-
কোন অধিকারে ? এই ক্ষয়িষ্ণু বুকে ,
জলেস্থলে -- স্থাবরজঙ্গমে
অনাবিষ্কৃত সূর্যের রক্তরশ্মি ,
পুড়িয়ে দেয় সমস্ত চিহ্ন ।
কোন অধিকারে ? এই কম্পিত ধমনীতে ,
পথে প্রান্তরে -- গল্প কবিতায়
উপেক্ষা ও অবজ্ঞার লেলিহান শিখা,
অস্থির করে তোলে এ রক্তপ্রবাহ ।-
কোলাহল আজ পড়ন্ত রঙে মেশে ,
আকাশের বুকে কোন সুর যেন বাজে
বাতাস বইছে সবুজ ঘাসের ফাঁকে
জীবন ছুটছে অযথা নানান কাজে।
কৈশোর বুঝি যৌবনে দিল পা,
মনের মধ্যে বেদনাবিধুর আলো
কোথায় গেল শৈশবের সে দিন ?
চোখের কাজলে নোনাদাগ অগোছালো।
স্মৃতির বোঝা আজ হয়েছে বড্ড ভারী,
শাড়ির ভাঁজে জমেছে সেফটিপিন
ভাবি ,কোথায় তোমায় নিয়ে যাব আজ,মন?
কোথায় মিটবে তোমার আশৈশবের ঋণ !
-
ছোটবেলা থেকেই আমি বাবা-মা,জেঠু-বড়মা,দিদি- দাদাদের একান্নবর্তী পরিবারের মাঝে বড় হয়েছি। সবার থেকে ছোট হওয়ায় স্নেহ-ভালোবাসা অথবা আদরের কোন অভাব কোনদিনও বুঝতে পারিনি। কিন্তু বয়স যখন 15 বা 16 তখন আমার মনের ইচ্ছা গুলোর বহিঃপ্রকাশ করার একমাত্র জায়গা ছিলিস তুই। আমার কাউকে না বলতে পারা মনখারাপ অথবা কোন আনন্দ-উচ্ছ্বাস কখনো কিছু চাপা ইচ্ছে সব তোর কাছেই বলতাম। আমার আজও মনে হয় আমাকে যদি কেউ সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারে সেটা তুই। অন্যকে কষ্ট না দিয়ে নিজের ভালোলাগাটুকু নিয়ে কতটা আনন্দে বাঁচা যায় তোর কাছ থেকে শিখেছি। বড্ড ইমোশনাল হয়ে যাছি বল, আসলে লিখতে বসলে আমার আবেগ, কলমকে থামাতে পারেনা। আর তোর জন্মদিনে তো পারবেই না তাও বাকি কথা তোলা থাক কোন পড়ন্ত বিকেলের ওই চায়ের আড্ডাটার জন্য। শুভ জন্মদিন দাদা, তোকে মন খারাপ করে থাকতে আমি কোনদিন দেখিনি। কষ্টগুলোকে কি করে এতটা চেপে রাখিস শুধু অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ? জানিনা ,তবে এটা এখনকার দিনে ক'জনই বা পারে। ভালো থাকিস , treat টা কিন্তু পুজোর সময় নেব। আর কথা বাড়াবো না , এবার যা; মায়ের হাতের পায়েসটা খেতে হবে তো।
শুভ জন্মদিন দাদা ❤️❤️-
শেষের দিনেও না হয় শুরুর কথাই বলো,
সেই ফেলে আসা শৈশব দেখবে? চলো;
আগামীর স্বপ্নগুলো আরও একবার দেখে নেব
ফেরার পথে সময় হলে ওদের একটা বই কিনে দেব।
চক,ডাষ্টার, ব্ল্যাকবোর্ডের কাছে গেলে
ওরাও হেসে বলবে, “এতদিন পর তুমি এখানে?”
তুমি কিছু বলতে গিয়েও থমকে যাবে
পিছনে ফিরে দেখবে,লাস্টবেঞ্চের দুষ্টুমিগুলো
অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংটাকে চক্কর দিয়ে
অফিসফেরত লোকেদের ক্লান্তিতে মিশে যাচ্ছে।
মাঠদাপানো ছেলেটার দস্যিপনা,নিয়ম ভাঙ্গার আনন্দ
গলির মোড়ের কিছু অসম্পূর্ণ প্রেম,
এসবও ভেসে উঠবে তোমার ভাবনায়।
তুমি তখন কাঁদো কাঁদো চোখে বলবে
“আর একবার কি ফিরে পাবো না দিনগুলো ?”-
কার পায়ের আওয়াজ শুনতে চাও তুমি এই উদাসীন জীবনে ? কার বিচ্ছেদ শোকে নিজেকে মিশিয়ে দিচ্ছ হাওড়া ব্রিজের ধারে পরে থাকা ওই শুকনো পাতার ভিড়ে ?
কিসের বেদনায় একাকী ময়দানে বসে তুমি শোনো রবি ঠাকুরের গান? কার নিমিত্তে নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় গঙ্গার ধারে বসে প্রার্থনা করো ? কার প্রতীক্ষায় সারা সারা রাত তাকিয়ে থাকো অস্তমিত তারার দিকে ?
দুঃখই কি তোমার জীবনের একমাত্র ভিত্তিপ্রস্তর ? তুমিও কি জীর্ণ, শুকিয়ে যাওয়া লতা-পাতাদের মত মুহূর্তের আনন্দে-দুঃখে; বিষাদ-বেদনায় ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছে মাটির সাথে ?-
তোমার ডাকে ফিরবো ভাবি আবার , কিন্তু ফেরার তো আর কোনো রাস্তা খোলা নেই । সব রাস্তাতেই ছোট ছোট গলি থাকে , সেই গলির ফাঁকে নাকি লুকিয়ে থাকে যত্ন - ভালোবাসা ।
এখন সেই গলির মুখ গুলো অন্ধকারে ছেয়ে থাকে , বড়ো আবছা দেখায় স্মৃতিদের । ওগুলো আমাদের পিছুটান নয় , ওগুলো আমাদের হারিয়ে যাওয়া।তোমার ডাক শুনে তো কোকিল ও ডেকে ওঠে , তোমার ডাক শুনে আমরা সবাই ফিরে তাকাই । দূরে
সূর্যের স্তিমিত আলোয় চোখে পরে বৃষ্টিভেজা মাঠে কিছু ছেলের দৌরাত্ম্য আবার কখনও শনিবারের সন্ধ্যার সিনেমা দেখার আনন্দ , রবিবারের সকালের শর্টপিচ।
জুনিয়র সেকশনের শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন থেকে প্রথম ক্লাস 8 এ নিয়ম ভাঙার স্বাদ ; রথযাত্রার , দোলযাত্রার অনাবিল আনন্দ , কিছু রাগারাগি- কিছু হাসাহাসির মাঝেই লুকিয়ে আছে নরেন্দ্রপুরের বন্ধন।
আর এই বন্ধনের টানেই তো সব কিছুর মাঝেও প্রত্যেক বছর একটা REUNION এর আপেক্ষায় থাকা ❤️ ।
*ভালো থেকো নরেন্দ্রপুর*-
আমাদের ভালোবাসার রাজপ্রাসাদে
এভাবেই থেকে যাবে তুমি। কাগজে নাম না
লিখে হৃদয়ে লেখার কথা তো তুমিই বলে
গেছ , সে নাম আজও রয়ে গেছে।
আজও শাওন রাতে অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি একলা বোধ করলে গগন মাঝে শশী কেই খোঁজে , ছুটে যায় জলসাঘরে। আমাদের এই একলা থাকার দিনগুলোতে তোমার গান থাকে ছায়া হয়ে। বাঙালি খাদ্যরসিক , তাদের মনে ভজহরি মান্নার স্থান আজীবন তোমার ।
কফিহাউসটা আজ বড্ড একলা, সেখানে নেই আর সাতটা পেয়ালার আড্ডা। শুধু ফাঁকা আসর আছে আনাচে কানাচে , আর “সে আসরে ইমন তুমি ” ।।-
পায়ে পায়ে বয়স বাড়ুক,
শিমূল পলাশ ফিকে হোক শেষ রাতে।
তবু বারোটা মাস বসন্তই থাকুক
আর দুমুঠো আবির থাকুক অপেক্ষাতে ।।-