কিছু বলবো, কিন্তু কি বলবো, কেই বা শুনবে তা। কিছু শুনবো, কিন্তু কি শুনবো, কেই বা বলবে। আজ হাসবো, কিন্তু কেনো হাসবো, কার সাথে হাসবো? আজ কাঁদবো, কিন্তু কেনো কাঁদবো, কার বুকেই বা মাথা রাখবো? আজ ভালোবাসবো, কিন্তু কাকে? কেই বা আমার ভালোবাসায় সাড়া দেবে? এমন সময় হটাৎ দৈব বানী হলো, শুনতে পেলাম একটা গান ভেসে আসলো --- একা-একা বাঁচতে শেখো প্রিয়। নিজের সাথে কথা বলতে শেখো প্রিয়, নিজেকে ভালোবাসতে শেখো প্রিয়, ভালোবাসতে শেখো প্রিয়। ভালো থাকতে শেখো প্রিয়।
-
কিছুদিন ধরে তাপমাত্রা পাঁচ ডিগ্রীর আশে পাশে ঘোরা ফেরা করছে। ঠান্ডাটা যেনো খুব বিধছে আজ কাল। অফিস শেষ, তাড়া হুরো করছি অটো ধরে বাড়ি ফিরবো বলে। বিজয়নগরে দাড়িয়ে আছি, এক বৃদ্ধ অটাওয়ালা এসে দাঁড়ালো। গন্তব্য বলতেই উঠতে বললো। অটো চলছে মিডিয়াম স্পিডে কিন্তু ঠান্ডা হাওয়া যখন শরীরে লাগছে মনে হচ্ছে এক একটা তীর বিদ্ধ হচ্ছে। হটাৎ ই বৃদ্ধ অটো ড্রাইভারটি অটো থেকে মুখ বের করে বললেন," বিধাতার অনেক কৃপা, যে আজ সূর্যদেবের দেখা মিলেছে"। আসলে প্রায় আট দশ দিন পর আজ রোদের দেখা মিলেছে। ধারেই বলেছিলাম, আমিও মুখ বের করলাম অটো থেকে আর মনে হলো যেনো রোদের পরশ নিয়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদ গ্রহণ করলাম। সত্যিই অনুভূত হলো, দিনদিন যেনো যান্ত্রিক মানব হয়ে চলেছি। দেখতে মানুষ হলেও মানুষের সব গুণাবলী IUCN এর রেডলিস্টে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যত্ন ঠিক ঠাক না করলে যেকোনো দিন তা ডাইনোসরের মত বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ঈশ্বর ঠিকই আছেন আর তাই তিনি মানবতার বিভিন্ন গুণকে বহাল রাখার জন্য এই ভাবেই কাউকে না কাউকে পাঠান আমাদের কাছে।
-
যদি বলি থেকে যাও, তাহলে কি শক্ত করে হাত টা ধরবে? যদি বলি চলে যাও, তবে কি মুখ ফিরিয়ে চলে যাবে? নাকি আমাকে জাপটে ধরে বলবে কি হয়েছে তোমার..... আমি হয়তো প্রথম প্রথম তোমাকে দূরে সরিয়ে দেবার বৃথা চেষ্টা করে অবশেষে তোমাকে জড়িয়ে ধরে খানিকক্ষন চোখের জল ঝরিয়ে নিয়ে বলবো অনেক ভালোবাসি তোমাকে। তুমি আমার কখনো পিঠে কখনো চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলবে," আমি জানি তুমি অনেক ভালোবাসো আর এও জানি তুমি কখনোই আমাকে মন থেকে দূরে যেতে বলতে পারো না"। আমি বললাম ক্ষমা করো, আমাকে বোঝার চেষ্টা করো আর এভাবেই পাশে থেকো সবসময়।
-
হটাৎ একদিন অফিস থেকে জলদি ঘরে ফিরে এসে তোমাকে খোঁজার চেষ্টা করে চলেছি নিরন্তর।অনেকবার ডাকাডাকি করলাম, কিন্তু তুমি সেই আসছি বলে কখনো রান্না ঘরে,কখনো বাচ্চাদের সাথে, কখনো আমার মা বাবার কাজে ব্যস্ত তুমি। আঁধ ঘণ্টা ধরে ডেকে ডেকে অবশেষে শোবার ঘরের হেলানো চেয়ারে গা এলিয়ে দিলাম।কিন্তু মনে তখনও স্বস্তি নেই।অবশেষে রাগ করেই ছুটে গেলাম তোমার কাছে।এ ঘর ও ঘর ঘুরে অবশেষে পেলাম তোমায় রান্নাঘরে, যেখানে তুমি তখন তোমার আদরের ছেলের জন্য গাজরের হালুয়া বানাচ্ছ।আমি বিরক্তির সুরেই বললাম এতক্ষন ধরে ডেকে চলেছি তোমার একবার আসারও অবসর নেই, অন্যদের জন্য তুমি ফ্রী, কিন্তু আমার জন্য তোমার কোনো সময় নেই।তুমি বললে,' বুড়ো বয়সে যতসব আধিক্ষেতা।এটা শুনে আমি তোমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম, তুমি বললে, " আরে কি করছো, সবাই দেখে ফেলবে যে"।আমি বললাম যে দেখে দেখুক কিচ্ছু যায় আসে না, আমি আমার অর্ধাঙ্গিনী কেই তো ধরেছি।তুমি লজ্জা পেয়ে বললে," হটাৎ এত আদর, আবার কোনো ভুল করেছো নিচ্চই"।হটাৎ করে আমার চোখ থেকে গরম বৃষ্টির ধারা অবিরাম ঝরতে লাগলো, তোমার গলায় তা অনুভব করে তুমি খুন্তি ছেড়ে আমাকে ওপাশ করে মুখটা দেখেলে আর বললে," কি হয়েছে তোমার?"আমি বললাম প্রমোশন হয়েছে উচুঁ পোস্টে।তোমার চোখেও তখন জল, বললে;'এটা তো খুব খুশির খবর, কাদঁছো কেনো।'আমি বললাম ধন্যবাদ আমার পাশে থেকে আমাকে মোটিভেট করার জন্য, ধন্যবাদ আমার সাথে কাঁদার জন্য।
-
শহরে আর থাকবো না বুঝলে। মানুষের ভিড় আর ভালো লাগে না। ভাবছি সব ছেড়ে পাহাড়ে যাবো। চারিদিকে পাহাড়, জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ি ঝর্ণার পাশে একটা কুড়ে ঘর বাঁধবো। পাহাড়ি কাঠ, ফল, মূল, শাক সবজি নিয়ে জীবন ধারণ করতে চাই। আর সেখানেই জীবন কাটাতে নয় যাপন করতে চাই। যেখানে সংবিধানের ফান্ডামেন্টাল রাইট্স কাউকে বোঝাতে হবে না বা গণিতের সময় আর দূরত্বের কঠিন গাণিতিক সমাধানও করতে হবেনা, অর্থনীতি তে মুদ্রাস্ফীতি বাড়লো না কমলো তা নিয়ে নচিকেতার গানও শুনতে হবে না, অতীতে কোন রাজা ভালোবাসা ব্যক্ত করার জন্য কত বড় ইমারত বাড়ালো বা কার সাথে karate কুমফু করলো কিচ্ছু মনে রাখতে চাই না আর। সকালে ঝর্ণার জলে কলকলানী তে ঘুম ভাঙতে চাই আর সন্ধ্যার পাখির কলরবে নিদ্রায় মগ্ন হতে চাই। আর যদি দু মুঠো কিছু জুটে যায় তাহলে তো আর কিছু বলারই নেই। মোদ্দা কথা একটু শান্তিতে বাঁচতে চাই।
-
বুঝলে তো পেরোচ্ছি, আর এগোচ্ছি। কোথাও উঁচু তো কোথাও নিচু, কখনো ডানদিকে কখনো বামদিকে। কোথাও কাঁকর আবার কোথাও তুলোর মতন সবুজ ঘাস। পেরিয়েই চলেছি। অনেক ক্ষন হয়ে গেলো। আর কতটা চলতে হবে আমি জানি না, কিন্তু এটা নিশ্চিত যে আমি পেরোবই। দোয়া করবেন আর পাশে থাকবেন।
-
বন্ধুর বিয়ের পর অনেক দিন বাদে আজ বার্তা দিলো কেমন আছিস ভাই। আমি বললাম, কিরে বউ এর সাথে ঝগড়া হয়েছে নাকি হটাৎ মনে পড়লো! আমি বললাম সমস্যা হলে বল ফোন করছি। সে বললো না ভাই এখন হবে না, বউ ঘুমিয়ে আছে এখন চা করে বউ কে ঘুম থেকে ওঠাবো। আমি বুঝে পাইনা ছেলেরা বিয়ের পর অতি প্রেমে আসক্ত হয় নাকি ভয়ের পাহাড় অতিক্রম করে। রঘুবীর মোরে রক্কা করো...
-
বুঝলে তো ইদানীং প্রেমে পড়েছি। কার সাথে? আরে মানুষ টানুস নয়। মানুষের সাথে অ্যালার্জি হয়েছে। তাই ওদের দিকে আর ঝোঁক তেমন নেই। তাহলে.... আরে বাতাসের ধুলো কণা সেদিন নিজের প্রেম ব্যক্ত করেই ফেললো। বুঝলে তো কেমন যেনো মায়া মায়া ভাব তার , তাই আমি আর না বলতে পারলাম না। ঠিকই চলছিল। বেশ জমে ক্ষিরের মত অবস্থা। কিন্তু ওই, বেশি ভালোবাসলে যা হয় আর কি.. অদ্ভুত ব্যবহার করছে কদিন ধরে। সে বলে তার নাকি চোখে চুমু না দিলে আদর সম্পন্ন হয় না। যাক গে এই আদর খেতে খেতে আমার ঘেমে নেয়ে অবস্থা আর কি। না পারি ছাড়তে না পারি রাখতে। তাই মাঝে মাঝেই বৃষ্টি নামে ভালোবাসার মেঘে। যাক গে কষ্ট হয় বটে, অবশেষে শান্তি তো আসে....
-
মানুষ মানুষ খেলবো না,
মানুষ হয়ে বাঁচবো না।
মানুষ নাকি সবই পারে, এই কারণেই
মানুষের ভিড়ে আর ভিড়বো না।
মানুষ, মানুষ চিনবে না।-
মা, বুঝলে তো ভুলই করেছি। তোমার কথা শুনিনি। ক্ষমা করো। তুমি বলেছিলে, শহর তোকে স্বচ্ছন্দ দেবে কিন্তু শান্তি কেড়ে নেবে। অলীক স্বপ্ন দেখাবে, কিছু পড়ে আবার বাস্তবের মাটিতে আঁচড়ে দেবে। তোমার কথাই ঠিক হলো বুঝলে মা। ইদানীং শহর আর মানুষের ভিড়ে দম বন্ধ হয়ে আসছে, মাথা খুব ব্যথা করছে। একটু শান্তি চাই এখন। তোমার কোলে আবার ফিরতে চাই। তোমার হাতের স্পর্শে আবার সুখ নিদ্রায় মগ্ন হতে চাই। তোমার খোলা আকাশে একটু প্রাণ ভরে অক্সিজেন নিতে চাই, ঘন অরণ্যে হারিয়ে যেতে চাই, সীমানা ছাড়া মাঠে যেদিক সেদিক দৌড়তে চাই, তোমার বিশুদ্ধ নদীতে ক্লান্তির ময়লা ধুতে চাই। অবশেষে শুধু তোমার কাছে থাকতে চাই।
-