মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়   (মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়...)
614 Followers · 63 Following

read more
Joined 3 July 2019


read more
Joined 3 July 2019


নিজের জন্য নিজেকে চিঠি....

-



আরাত্রিকার প্রজ্জ্বলন
-------------------------------

আবছায়া আলোতে দিলে যে দেখা,
কে তুমি ! সন্ধ্যার মেঘ রূপে হানিলে বৃষ্টিধারা...
ঊষর পিঞ্জর ভাঙি ঐ জাগে তৃণ সমাগম;
আরক্ত ধূলিতে হাসে মিঠে শবনম !

ভাঙে নিদাঘী পাষাণ, তব বর্ষিত বেহাগরাশি
বুঝি মল্লারে ওঠে ধ্বনি দুরন্ত পূরবীর...
সহসা কোন লিপি পেলো স্তুতি গৈরিক সেতারে -
জ্বলিল আরাত্রিকা যেন নিমগ্ন আঁধারে !

-



এ বৃত্ত বিষাক্ত বন্দর
----------------------------

আমার বৃত্তে কালাহারী মরু, মানচিত্র ছাড়খার...
সবুজ পেয়েছে ব্যার্থ উপমা, ব্যাসার্ধ ছুঁয়েছে অঙ্গার !

আমার বৃত্তে নগ্ন ফিনিক্স ; মৃত্যু মিছিলে হাঁটে,
খঞ্জন খোঁটে লোহিত মাটি স্রোতস্বতীর প্রতি বাঁক হতে প্রতি বাঁকে !

আমার বৃত্তে মেঘের নালিশ, রোজ রৌদ্র প্রস্রবণ...
পরিসীমা বাঁধে উপহাসীলতা, কেন্দ্রে ধূমায়িত ধুম্রকরণ !

আমার বৃত্তে দ্রাঘিমার জ্বর, ঐ অক্ষের ভরাডুবি
তঞ্চন তার হয়েছে ব্যাহত ! বুঝি সমতার মুলতবি...

আজ আমার বৃত্ত নির্বাণ আঁকে, কক্ষপথের নীড়ে !
বিশল্যকরণীর মেলেনি তো খোঁজ এ বিষাক্ত বন্দরে ।

-



বিশ্বাস
-------------------
সুক্ষ্মতারই নির্ণায়কে আঁকছে ছবি হৃদ্যতা,
রেখায় রেখায় উঠছে ফুটে দৃঢ় কালির চিত্রটা !
তবু লাগলে পরে ঠুনকো বাতাস এ মানচিত্রের রদবদল -
খান খান এই রাজ্য জুড়ে তখন দেশদ্রোহীর শোরগোল !

এমনতর পলকা কাঁচেই ভিত্তি গড়ে অচলায়তন
যার এপিঠ ওপিঠ দুই দিকেতেই কেবল সুক্ষ্মতারই অনুমোদন ।
ভঙ্গুরতায় নেইকো স্থিতি নেই অস্তিত্বের ক্ষুদ্র অনু ;
হৃদ্যতারই প্রেক্ষাপটে 'বিশ্বাস' মৌলিক এক পরমানু ।

-



ক্ষণজন্মার ক্ষুদ্র জঠর,
অস্থিততায় খেলছে ভ্রুণ !
বিবর্তনিক বাচালতায় -
সাজছে তুণীর অমোঘ তূণ...

মিথ্যে আগল শূন্য দ্বারে,
হাসে চৌকাঠেতেই স্বর্ণযুগ...
নিশ্চয়তা টলটলে জল !
তবু শবনমী নূর গাঁথছে সুখ ।

-



সর্বস্ব বর্ণাঢ্য...
-----------------------
তুমি দেখেছো নির্ঝরের দুরন্ততা,
যে চপল্যে সে ভিজিয়ে যায় অনায়াসে দু উপকূলের বঞ্জরভূমি !
কিন্তু কখনও কি দেখেছো তার গভীরে পরতে পরতে বরফভাঙা শীতলতা !
হিমশৈত্যের জর্জর ভারে অবয়বহৃত সে নির্ঝরিনীর দুস্থাবস্থা...
গভীরের ভারী হয়ে আসা নীরবিন্দুর তিরস্কারি তর্জমায় শুধু অনউচ্ছ্বাসের খতিয়ান -
বারবার মাপে তার দুরন্ত আবহ কটাক্ষের ভঙ্গিমায় !

তুমি দেখেছো সাতরঙা পিপলির চাঞ্চল্য,
যে চাঞ্চল্যে মাটির বুকেও ফোটে ক্ষুদ্র রঙধনু তারুণ্য সবুজ গভীরে !
কিন্তু কখনও কি দেখেছো অসহ্য কন্টক আবরণে তার অস্পৃশ্যতা কি নিদারুণ !
কি নিদারুণ অসহায়ত্বে সূচাগ্রে বাহিত জীবন আশ্রিত তন্তুজ পরিবৃত্তে,
জীবনের আস্ফালনে জীবন শায়িত যেন নিস্পন্দ দরিয়ায় অকাল শীতঘুমে
এক আয়ুস্কাল মাপে কেবল ক্রমাগত অধিকৃত প্রহর নিদ্রিত মন্ত্রণায়...


আদতে উপশমহীন সর্বস্ব বর্ধিত বর্ণাঢ্য বৈশিষ্ট্যে -
ইতিবৃত্তীয় উপকথা বাঁধে সহিষ্ণু শৃঙ্খলে, আঁকে দুর্জয় ভোর তিমির পরিশিষ্টে ।

-



আয়ুরেখায় স্তরীভূত রঙীন পলেস্তারা,
বর্ণাভ দেউল বর্তায় হাজার সরণী,
আর্শিতে অক্ষি মাপে তিস্তার পরিসর -
মানচিত্র বদলায় মিথ্যে প্রদর্শনী !!

তবু তঞ্চনে লাগে জট বিমূর্ত বেহাগে,
ধৃসর পাণ্ডুলিপির নিতি বিষাক্ত দংশন...
খোয়া যায় দুন্দুভি, মুক্তির সমতট -
যাপনের জিঞ্জিরে বাজে হৃদির ক্রন্দন ।

-



দিব্য আলোকবর্তীকা
---------------------------------
জীবন বেঁধে গেছে অস্তরাগের আলোয়,
তার সেই সুক্ষ্ম রাঙা সংকীর্ণতম পথে দেখেছি গুলমোহরের নীড় !
যেন পৌষের শীতলতাময় আঁধার মাটিতে একখণ্ড রক্তিম জ্যোতিষ্ক -
হিমকাতর অন্তর শুষে উদ্দীপিত করে চলেছে অনন্ত আনন্দয়...
সে শোষণে আছে মাধূর্য, আছে উন্মাদকারী তৃপ্ত অবক্ষয়,
আছে শত শত শকাব্দের প্রমাদীয় হাহাকার ।
যে পথিক অনির্বচনীয় শ্রান্ততায় আশ্রয় নিয়েছে তার স্পর্শকাতর কোমলতর কক্ষে -
সে জানে, এ অস্তরাগের পাড় টপকে আর ফেরা হয়নি তার,
আর দেখা হয়নি অমাবস্যায় বুভুক্ষু চাঁদের ক্রন্দন...
দেখা হয়নি বিপর্যয়ী প্লাবনে শাওনের অস্থির রূপ !
কেবল বাউলের গান বাজে তার কর্ণকুহরে -
স্বচ্ছ গৈরিক প্রেমার্ত ভৈরবী....

জীবন বেঁধে গেছে অস্তরাগের আলোয়,,
বিশেষণহীন এক অবিশ্লেষিত ধারায় ।

-



সন্ধিক্ষণেই দিনযাপন
-----------------------
জীবনকে কি ছেড়ে যাওয়া অতোই সহজ !
ঐ যে মেহগনির রাঙা পাতায় জন্মদাগ এঁকে দিলো দুঃখলিপি জন্মান্তক,
আজন্মের লাল জঠোরে তৎক্ষণাৎ উঠলো জেগে বৃদ্ধভ্রুণ;
তার অতর্কিতে কান্না শুনি প্রহরান্তক -
কিন্তু তাতে কিবা ভাবনা তার !!
সবুজের রন্ধ্র বেয়েই বেড়ে ওঠা নিত্যদিন...
শত সূর্যাস্ত সূর্যোদয় অথবা অনুরক্ত রাঙা গোধূলির আলো মেখে,
তবু হৃদ গহীনের হলুদ খামে ছাড়পত্র দিব্য লেখা !
ঠিক যেমন তরঙ্গায়িত নীলার্ণব গল্প লেখে প্রতিক্ষণে,
সৈকত চুমে আঁকে সমাপতনের দগ্ধতা...
তেমনই সন্ধিক্ষণে ভাসছে জীবন,
বিভাবরীর আয়না পেতে গুনছে "তারা" জল থৈ থৈ পরগনায় -
ওঠানামার নাগর দোলায় দোদুল্যতায় দুলছে দুলুক,
নাহয় ছেদবিন্দু টানুক ইতি 'ছেড়ে' যাওয়ার জল্পনায় ।

-



আলোর স্রোতে ভেসে
---------------------
আলোর পরিবৃত্ত আঁকতে আঁকতে খোয়া যায় কক্ষপথ !!
অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচন তখন দাবিহীন...
সমতল ভেঙে সমানুপাতের পথে দাঁড়িয়ে কেবল এক নগ্ন অন্ধকার যুগ,
অবগুণ্ঠনহীন একা, ভীষণ একাকী...
শত প্রশ্ন চিহ্নের দাবানলে পুড়ন্ত তার কস্তুরী ঘ্রাণ,
দগ্ধ চক্ষু উদ্ভ্রান্ত উদ্দাম ঊর্ণাজালে -
প্রতি দেহ ভঙ্গিমায় কেবল বিজাতীয় বিদ্রূপ !!
যেন আত্মার মুখোমুখি প্রতিবিম্বিত মাংসল পরিসর;
তার শ্রাবণ সিক্ত জঠর আজন্মের কালাপানি,
শীতল থেকে শীতলতর -
তবু অস্থি কবচে সভ্যতার অনিন্দিয় আস্ফালন
কি ভীষণ নির্দয় নিষ্ঠুর !!

আলোর মুদ্রনে গাঁথা গ্রন্থন নিস্পৃহ, ধূসর আবর্তে !!
কাঁদে কালজয়ী ইতিহাস, বিবর্তনিক বিষম শর্তে ।

-


Fetching মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় Quotes