বাংলা ভাষায় রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকেন
বাংলা ভাষায় পূজিত হন কাজী নজরুল
জসীমউদ্দীন বাংলা ভাষায় চেরাগ জ্বালেন
এপার ওপার বাংলা ভাষায় হয় মশগুল।
ফেব্রুয়ারি মানে শুধুই একুশ বুঝি
আটই ফাগুন গৌরবেরই অশ্রু ঝরায়,
বেঁচে থাকুক রফিকরা এই বাংলা ভাষায়
অস্ত গিয়েও আকাশ থেকে দীপ্তি ছড়ায়।
অমর হয়ে থাকুক তারা সব হৃদয়ে
মায়ের ভাষায় কথা বলি, তারাই কারণ
এই ভাষাতেই তাদের নিয়ে পদ্য লিখি
বর্ণমালা — অ, আ, ক, খ'র স্মৃতিচারণ।

-

হঠাৎ করেই চোখের পাতায় ঘুম নামলো এসে
হঠাৎ করেই দিন রাত্তির থামলো অবশেষে
কত হিসেব বাকী ছিল, হলো না তা সারা
কত খুশির জোয়ার আজও থাকলো অধরা।
কত স্মৃতির খোলামকুচি রইলো পথের পাশে
দিনের শেষে সেসব ছবিই থাকবে মনে ভেসে
হাত বাড়িয়েও ছুঁতে তুমি পারবে নাকো আর
তুমি - আমি সবই মায়া, শুধু মৃত্যু অনিবার।

-

এ শহর জানে তোমার আমার গল্প
এ শহর জানে আমাদের পিছুটান
এ শহর জানে সংগোপনের প্রেম
এ শহর জানে আমাদের ডাকনাম।
এ শহর জানে একলা হাঁটার সুখ
বুকের গভীরে সীমাহীন মুগ্ধতা
এ শহর তাই দিয়েছে উজাড় করে,
এ শহরে বাঁচে আমাদের রূপকথা।

-

হঠাৎ দেখা একটা একলা রাতে
দুটো ছাদ থেকে একটাই চাঁদ দেখা,
চাঁদ ছুঁয়ে চোখ মিলেছে আবছায়াতে
রাত জাগা তারা সাক্ষী শুধুই একা।

ছায়াপথ বেয়ে ফিরে আসা একা ঘরে
চিলেকোঠা ভরা স্মৃতিরা বড্ড দামী,
একশ' পাতার তোমার উপন্যাসে
নামহীন এক চরিত্র শুধু আমি।

ভালো থেকো তুমি আমার মনখারাপে
আমার ফাগুনে তুমি হয়ো নীল ফাগ,
জানালার কাঁচে রামধনু হয়ে থেকো
মেঘরং হয়ে গালে এঁকে দিও দাগ।

-

এলোমেলো ঘুন ধরা শহরে
অবাধ্য অগোছালো মন
হাত ধরা বৃষ্টির বিকেলে
দূরত্ব শুধু অকারণ।

তাকে নিয়ে নামহীন স্বপ্নের শুরু
শেষেও যে শুধু তারই নাম
ভিজে যায় মনের জানালা
খোঁজে চোখ তাকে অবিরাম।

মরীচিকা হয়তো সে শুধু
দেখা যায়, ছোঁয়া তাকে ভার
ডাকনাম জুড়ে তার বাসা
দিগন্তে ভয় হারাবার।

-

বাংলা ভাষায় মাকে ডাকি
বাংলায় গাই গান,
বাংলায় সাজে কথার ডালি
বাংলা ভাষাই প্রাণ।

ভালোবাসার এই দেশেতে
বাংলায় বাঁধি সুর,
সকল ভাষায় সম্মান রাখি,
তবু বাংলাই সুমধুর।

-

একটা আস্ত নির্ঘুম রাত কাটে
ঘড়ির শব্দ আর শ্বাস- প্রশ্বাস
বয়ে নিয়ে যাই প্রেমের ধ্বংসস্তূপ
এক ছাদ তবু দূরত্ব এক আকাশ ।

চেনা অচেনায় মিশে থাকো তুমি রোজ
এ মন তবুও প্রেমের বার্তা খোঁজে,
একঘেয়ে ঘর, একঘেয়ে হেঁটে চলা
হেরে গিয়ে আজ ক্লান্তিতে চোখ বোজে।

অভিযোগ নেই, নেই কোনো অনুযোগ
না পাওয়ার মাঝে প্রদীপ জ্বেলেছে আশা
সব কিছু শেষ হলেও দিনের শেষে
একদিন ঠিক ফিরবেই ভালোবাসা।

-

একরাশ ব্যাথা বুকে বেঁধে বেঁচে থাকা
ফারাক কেবল জীবন- মৃত্যু নামে
পিছুটান ছেড়ে কয়েকটা পা পথ
তারপরে শুধু শান্তির ঘুম নামে।

চেনা ডাকনাম, চেনা ঘর, চেনা স্মৃতি
বোঝা হয়ে জমে বুকের বাঁ দিকটাতে
ভুলে ভুলে ভরা একটা ক্লান্ত মানুষ
ঠিক পথ খোঁজে মৃত্যুর আঙিনাতে।

-

মেয়েটির বুকের ভেতর তির-তির করছে
এক সমুদ্র অভিমান গলা জল।
কাছের মানুষ দূরে চলে গেলে
দিনের আলোও চোখের সামনে আঁধার নামায়।
আর তুমি তো তার খোলা জানালা।
চোখের কোণে যখন তার বাষ্প জমে,
তুমিই তো তখন হিমেল বাতাস নিয়ে আসো।
আর আজ, সেই জানলা খোলা বারণ।


সে আর গিয়ে দাঁড়াবে না সেই জানলার ধারে,
আগল তুলে দিয়েছে সে মনের ঘরে।
জানলা খুলুক নতুন মানুষ নতুন ভোরে।
সমাধি হোক স্বপ্নগুলোর রোজ একটু করে।

-

রাস্তা জুড়ে 'ভাল্লাগে না' শ্লোগান আর মৃত্যু মিছিল,
বুকের ভেতর জমছে ক্ষত, করাল গ্রাসের
আজ সে বাতাস শ্বাসরোধী, যা মুছতো অসুখ
মুখের ওপর উঠছে আড়াল ভয়াল ত্রাসের।
একান্ত ক্ষণ হচ্ছে ক্রমেই বিষাদঘন
দিন গুনতে সংখ্যাও আজ কম পড়ে যায়।
পথে নামলেই বিপদ-পোকা বাড়ায় থাবা,
নিরাপদ আজ অন্দর, যার খোঁজ পাওয়া দায়।
পথের ধার বা একটা রোয়াক যাদের বাড়ি,
শীত গ্রীষ্মের ধার ধারে না যেসব শিশু,
নিরাপত্তা নেই কিছু আজ তাদের তরে,
লজ্জায় আজ মুখ ঢেকেছে ঈশ্বর, নবী এবং যীশু।

-