হঠাৎ বহু বহু দিন পর কাঙ্খিত নিস্তব্ধতা,
শ্মশানের মধ্যরাত, পৃথিবীতে একা।
ধিক্ ধিক্ চিতার আগুন জ্বলে শেষ,
তন্ত্রে নামায় ভৈরবী মহাকাল নৃত্যরত।
-
আমিই সেই নারী...
যে অত্যাচারীত হতে হতে শিখেছি নিজেকে বাঁচাতে ফোঁস করতে হয়...
শিখেছি নিজের মূল্য নিজেকেই নির্ধারণ করতে হয় যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে...
আমি কন্যা হয়েছি, মনবিহারীনি হয়েছি, স্ত্রী হয়েছি, মা হয়েছি...
আমি শিক্ষিতা হয়েছি, জলে স্হলে অন্তরীক্ষে বিচরণ করেছি আপন ক্ষমতা বলে...
আমি অর্থবতী হয়েছি, টাকাকে কড়িকে হাতের মুঠোয় করেছি...
আমি স্বাবলম্বী হয়েছি দিনে দিনে একটু একটু করে...
আমার পূর্ব নারীরা গর্বিত আমায় দেখে, চোখে আলোকলতা..
আমি ক্ষমতার জোড়ে সত্য মিথ্যা বিচার ভুলেছি অর্থলোভে মানবতার ধ্বজা ধরে...
জন্ম দিয়েছি সেই সন্তানের, যে সঠিক শিক্ষার অভাবে আজ অত্যাচারী পশুতে পরিণত...
আমি আধুনিক হয়েছি, সন্তান শিখেছে মনীষীদের কেমন করে কুৎসায় জর্জরিত করতে হয়...
রবীন্দ্রনাথ অত বড় কেন হবেন, টেনে হিচড়ে তাঁকে কর্দমাক্ত করেছি...
আমি দেশপ্রেম দেখানোকে 'আদিখ্যেতা' নাম দিয়েছি...
আমি পুরুষকে ছাড়িয়ে যেতে অধিকতর নির্লজ্জ হয়েছি...
পুরুষ আজকাল হার মানতে শুরু করেছে নিজের সম্মান বাঁচাতে, ঘর বাঁচাতে...
আমি সেই নারী...
নারীত্বকে বিষর্জন দিয়ে আমি কঠিন তপ্ত শলাকা,
লেলিহান শিখায় জর্জরিত করে
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে আমি নারীবাদের
জয় ঘোষণা করেছি......-
বিস্বাদ/মহাশ্বেতা/২৬/২/২১
তসলিমা নাসরিন, তোমার “স্বাদ” কবিতাটি পড়লাম,
“ আমার একটা ঘর আছে”
তুমি বললাম, কারণ তোমাকে এতোদিন আমার সব অপ্রাপ্ত
বাসনার প্রাপ্তি সুখ বলে ভাবতাম।
তোমার কবিতার শেষ লাইনটা পড়ে কেমন দু:খ হল।
তুমিও!!
তবে তোমার সাথে আমাদের মতো অসহায়দের কি পার্থক্য রইল।
তোমার এতো সংগ্রাম তবে এদিনের জন্য?
কেন তুমি দুর্বল হবে?
কেন তুমি সেই সুখে ভাসবে যে সুখ আমাদের নিয়তির মতো
অসম্মানে, পরাধীনতায়, গ্লানিতে, কালিমায় কলুষিত করেছে দিনের পর দিন।
সুখে থাকার জন্য আমাদের অবিরত চেষ্টা করতে হয়।
সুখ আমাদের মরীচিকার মতো তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় অবিরত।
সুখ ধরার চেষ্টা করতে করতে আমরা আত্মসম্মানহীন, জড়বস্তুতে পরিণত হয়েছি,
পায়ের ঠোক্করে ঠোক্করে বাজনা বাজা বাসনের মতো।
নিজের সম্মান বিকিয়ে দিয়ে সম্মান দিয়েছি,
আমার সুখ শুধু কড়িতে কিনতে চাওয়া সেই - তাকে।
আজো প্রমান করতে হয় আমি সম্মান দিই, ভালোবাসি।
মনে ভয় অনন্ত, পর হয়ে যায় যদি আপন,
আমার অক্ষমতা প্রকট হবে।
ভালোবাসার পরাজয় হবে।
হবে কি?
সত্যিই তবে আপন?
সুখ তবে কোথায় পাই!!
পাগলীনি তকমায় আমি বেশ আছি ভেবে
আমি খুব খুব খুশি থাকি।
আমায় যে আজো বোঝেনি বলে আক্ষেপ করে
অচেনা আমি তার ঘরে আজো থাকি,
আজো থাকি আমি,
ঘর নেই আমাদের , তাই , তাই ,
শুধু কি তাই?
তাকে আমি দোষ দিই নি কোনো দিন,
আমার বন্ধু ভেবে, আমি প্রকাশ করেছি আমার তৃপ্তি-অতৃপ্তি,
ভেবেছি, সে বুঝবে? ভালোবাসি, ভালোবাসে, তাই।
ভুলের সপাট চড় নিজ গালে দিয়ে হয় চৈতন্যর উদয়।
সে বুঝেছে আমার অসন্তুষ্টি তার অপারগতার পরিচয়।
তাকে আমি দোষ দিই না, সমাজ বুঝিয়েছে তাকে।
অসন্তুষ্টের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ ও সমাজের নীতি।
তুমিও তবে এমন- ই চাও।
অলীক সুখের ঘরে ভাসতে চাওয়া আমার তোমাকে আমি সে অধিকার দিই নি।
একান্তই যদি চাও, তবে তোমার তুমিকে আমায় দাও।-
দামি মদ পানের সময় টাকার হিসেব করা নিচু শ্রেণীর মানসিকতা বলে মনে হয়। ভিখারীকে দিতে গেলে মনে হয় আমার কি টাকার গাছ আছে? স্ত্রী কে দিতে গেলে মনে হয় ওর বাপের কি হুন্ডি আছে? স্বামীকে দিতে গেলে মনে হয় ধার দিলাম, জানি ফেরত দেবে না। গৃহকর্মীকে দিতে গেলে মনে হয় কাজ ভালো করে করে না। বাজারীকে দিলে মনে হয় ব্যাটা প্রচুর লাভ করল!! 😃😃😃 সিগারেট খেতে খরচ বেশী হলে মনে হয় , কি আর হবে? কত দিন ই বা বাঁচবো।
সিগারেট সেবনই বৈরাগ্যের পথে এক ধাপ উত্তোরণ । 🤔🤔🤔
ঠিক না ভুল বলছি বুঝতে পারছি না। চার পেগের পর এমনি ই বুঝতে পারি না। তবে ভাবছি সিগারেট টা শুরু করবো 🙄 যদি বৈরাগ্য আসে:-🥱-
এখন নাকি ট্রেন চলছে। এবার ট্রেনের তলায় মাথা দেওয়ার কেস বাড়বে। হুট করে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আমার চটি পড়ে যাওয়ার মতো লাইনে গলে যাওয়াও বাড়বে। দেওর বলল সবাই নাকি বেড়াতে যাচ্ছে ট্রেনে চড়ে। আমি অনেক দিন ট্রেনে চড়ি নি। জানালার ধারে বসে হাওয়া খাই নি। আলিপুর ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে যাওয়ার সময় ট্রেনের দরজায় হাতল ধরে দাঁড়িয়ে লাইন ঘেঁসা ঝুপড়ি গুলোর দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া দেখি নি। একদিন ঋষি বঙ্কিম লাইব্রেরি থেকে ফেরার সময় নৈহাটি তে চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে আমার চটি ছিঁড়ে গেল। পড়ে যাচ্ছিলাম। দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা একজন মধ্য বয়স্ক ও একটি স্কুল ড্রেস পড়া ছেলে (এগারো বারো ক্লাস হতে পারে)আমাকে হিঁচড়ে তুলে নিয়েছিল। চোখের সামনে এক ঝলক কালো অন্ধকারের মতো মৃত্যু দেখা দিয়ে গিয়েছিল। সবাই আমাকে খুব বকছিল। আমি ভিতরের খবর বাইরে আসতে দিই নি। কি করা যায় ভেবে না পেয়ে বত্রিশ পাটি বার করে হাসছিলাম। ওতে ওরা আরো বিরক্ত হয়েছিল। সবাই আমাকে চিঁড়িয়াখানার জীবের মতো করে দেখছিল। সবাই কে তো আর বলা যায় না এই ট্রেনটা মিস্ হলে পরের একজোড়া অনার্সের ক্লাস মিস্ হবে। ক্লাসে পড়ানোর সময় সব শিক্ষক শিক্ষিকাদের বা প্রফেশরদের চোখ ঘুরে একবার আমাকে দেখে নিত। এটা আমি ছোটবেলা থেকেই খুব উপভোগ করতাম। অবশ্য কলেজে কোনো দিন ক্লাস মিস্ করেছি কিনা মনে পড়ে না। আমার কেমন অনৈতিক মনে হতো।লাইব্রেরীতে গিয়ে একচোট পুরোনো বই এর গন্ধ শোঁকা(বানানটা ভুল লিখলাম কিনা বুঝতে পারছি না) আমার মনটা ভরিয়ে দিতো। কতো রাতের পর রাত জেগে বই পড়ে গেছি। সম্ভবত গত বছর সামান্য একটা পুজো বার্ষিকী কিনেছিলাম, এখনো পড়া হয় নি। যে আমি ছিলাম সে আমি নেই। এর জন্য কি আমিই কেবল দায়ী? কতটা বদলালে মানুষ নিজেকে হারায়। কতটা বদল হলে অস্তিত্বের সংকট দেখা দেয়? কতটা বদলালে নিজেকে অচেনা লাগে? কতটা বদল হলে মৃতের উপর মাছির ভন্ ভন্ শব্দ তাড়া করে ছুঁটিয়ে মারে?
২০ নভেম্বর, ২০২০
রাত ২.০৯-
হেলা ঘর খেলা ঘর
ঠেলা দোর হাওয়া ঝড়
নিশিরাত পাতা ফাঁদ
বাঁকা চাঁদ নদী খাত
নি:ঝুম চারিপাশ
নিশিথের হা হুতাশ
দোল দোল হিল্লোল
নদী বয় খলখল্
উজানের পথে হায়
নায় বাওয়া বড় দায়
মেঘ জমে আকাশের
মুখ খানা হতাশের
দুর দুর বুক ধায়
মন বলে হায় হায়।
মহাশ্বেতা
১৭/১১/২০
রাত ১২:১১-
ওদের কথা বলতে দিয়ে মূক বলে যাই।
ওদের কথা লিখতে গিয়ে কলম হারাই।
ওদের সাথে নিত্য দিনই ঝগড়া ঝাটি।
ওদের সাথে আবার কেমন ভাব জমাটি।
দুই লাইনের গল্প কথার সঙ্গী ওরা।
বিদেশ বিভূঁই ওদের সাথেই ঘোরা ফেরা।
রোদ্রু এলে ওরা কেমন ঝিমিয়ে পড়ে।
আবার কেমন মেঘলা বেলায় ঘুমিয়ে পড়ে।
আমি কেবল ফাঁক ফোকরে লুকিয়ে দেখি।
মুখটি টিপে, হেসে খানিক ভরসা রাখি।
জাগলে আবার নতুন করে ঝগড়া হবে।
গেরস্থালির সঙ্গে তখন ভাবটি যাবে।
ওরা আমার পুতুল ঘরের খেলার পুতুল।
খেলতে খেলতে এখন আমি ছোট্ট পুতুল।
মহাশ্বেতা
১৭/১১/২০২০-
আমিই সেই নারী...
যে অত্যাচারীত হতে হতে শিখেছি নিজেকে বাঁচাতে ফোঁস করতে হয়...
শিখেছি নিজের মূল্য নিজেকেই নির্ধারণ করতে হয় যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে...
আমি কন্যা হয়েছি, মনবিহারীনি হয়েছি, স্ত্রী হয়েছি, মা হয়েছি...
আমি শিক্ষিতা হয়েছি, জলে স্হলে অন্তরীক্ষে বিচরণ করেছি আপন ক্ষমতা বলে...
আমি অর্থবতী হয়েছি, টাকাকে কড়িকে হাতের মুঠোয় করেছি...
আমি স্বাবলম্বী হয়েছি দিনে দিনে একটু একটু করে...
আমার পূর্ব নারীরা গর্বিত আমায় দেখে, চোখে আলোকলতা..
আমি ক্ষমতার জোড়ে সত্য মিথ্যা বিচার ভুলেছি অর্থলোভে মানবতার ধ্বজা ধরে...
জন্ম দিয়েছি সেই সন্তানের, যে সঠিক শিক্ষার অভাবে আজ অত্যাচারী পশুতে পরিণত...
আমি আধুনিক হয়েছি, সন্তান শিখেছে মনীষীদের কেমন করে কুৎসায় জর্জরিত করতে হয়...
রবীন্দ্রনাথ অত বড় কেন হবেন, টেনে হিচড়ে তাঁকে কর্দমাক্ত করেছি...
আমি দেশপ্রেম দেখানোকে 'আদিখ্যেতা' নাম দিয়েছি...
আমি পুরুষকে ছাড়িয়ে যেতে অধিকতর নির্লজ্জ হয়েছি...
পুরুষ আজকাল হার মানতে শুরু করেছে নিজের সম্মান বাঁচাতে, ঘর বাঁচাতে...
আমি সেই নারী...
নারীত্বকে বিষর্জন দিয়ে আমি কঠিন তপ্ত শলাকা, লেলিহান শিখায় জর্জরিত করে
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে আমি নারীবাদের জয় ঘোষণা করেছি......
-
একটি হাসি মুখ কারো জীবন বদলে দিতে পারে..
একটি হাসির শব্দ কেমন আপন করে নিতে পারে..
বর্ষার রিন্ ঠিন্ কেও হার মানাতে পারে..
প্রজাপতির ডানার চেয়েও উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে..
জীবন জয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ উন্মাদনা হতে পারে..
শিশুর মতো নির্মল, আর পবিত্র হতে পারে..
প্রাণের আদর, মনের আরাম, উৎযাপন করতে পারে..
-
বৃষ্টি
মহাশ্বেতা
বৃষ্টি, তুমি এসো, ভিজবো অতলান্ত।
দু'হাত মেলে খিলখিল করে হেসে উঠবো।
জল থৈ থৈ পায়ে নেচে বেড়াবো।
বৃষ্টি, তুমি এসো, ভিজবো অতলান্ত।
আকাশের দিকে মুখ তুলে ধরবো।
দুই নদী মিলবে তোমার জলধারায়।
বৃষ্টি, তুমি এসো, আমি কাঁদবো।
৩৷৮৷২৹১৮
-