এমনি করেই জড়িয়ে ধ'রো আঁধার,
একলা শরীর যদি শিউরে উঠে তোমার।
—কুনাল-
তুমি চেয়েছিলে আমি চেয়েছিলাম
থেমে যেন না যায় এ যুদ্ধ।
পরিণামে তুমি আজ অন্যের
আর আমি পেলাম তোমার ভগ্নাবশেষ।
—কুনাল-
সুখ বুঝেছি তোমার থেকে
তোমার হাসি আর খুনসুটিতে।
আর যতটা দুঃখ আছে
চলো বেচে দিই ওদের কাছে।
তা দিয়ে কিনবে কী?
কেন, পাঞ্জাবি আর বেনারসী।
ও সব কী করবে শুনি?
বিয়ে করব তুমি আমি।
ধুর! যাও দেখি।
যাব তো, তোমায় নিয়েই।
ঊঁ! শখ যে ভারী,
বুড়ো বয়সে ভীমরতি।
তোমার জন্যেই তো বুড়ো হয়েছি,
আগে কেন আসনি।
—কুনাল
-
আমার সাজিতে সাজিয়ে রেখে
পেয়েছি অনেক সাজা,
পরাজিত আমি ওগো অপরাজিতা।
কী কঠিন পাঁজরে
রেখেছ তোমার হৃদয়,
শত তরবারি আমার
যে খন্ড-বিখন্ড হয়।
শেখাবে আমায়–
কোমল হৃদয় কিভাবে পাষাণ রয়,
অকূল দরিয়া কেমনে শুকাতে হয়?
—কুনাল-
এই শ্রাবণে আবার দেখা
তোমার সাথে আমার,
এবার থেকে আঁচল ধরে
থাকব আমি তোমার।
পারবে না আর দূরে যেতে
অমন করে ছেড়ে,
আঁচল ধরে টান দিয়েছি
পালাবে কেমন করে!
নেই তো বুঝি জানা?
তবে থেকে যাও আমার কাছে
আর করোনা– না,না।
অনেকখানি আদর
আর অনেক ভালোবাসা,
আহ্লাদে আটখানা
তোমার আমার হিয়া।
এমনি করেই জড়িয়ে রেখো
তোমার মূল দিয়ে,
আমরা দুজন পরাশ্রয়ী
দুজন দুজনার তরে।
—কুনাল-
— এই ছেলেটা আকাশ পানে কিরে?
— ওই দেখো না মেঘের সাথে ও-ও যাচ্ছে চলে।
— কি হয়েছে তাতে, যার যখন সময় আসে
না চাইলেও ছাড়তে হয় তাকে।
— একটি বার ডাকি— না বৃষ্টি, যেও না তুমি।
— পিছু ডাকিস কেন, ব্যস্ত হবে যে সেও
তার চেয়ে এমন করে চেয়ে দেখাই ভালো।
— তবে যে ও বলেছিল,
আমার ছাড়া আর হবে না কারও!
— সে কথা সে রেখেই গেছে
তোর বৃষ্টি তোর-ই আছে।
গভীর হয়ে চাইলে তাকে
আসবে নেমে চোখের কোণে।
তারপর ওই ঠোঁটের ফাঁকে,
নোনা জলে সে যে আছে
ছোঁয়া দিয়ে বলবে তোকে।
— আমি তবে পাব তাকে!
— হ্যাঁ রে পাগল,
তোর বৃষ্টি তোর চোখেই রবে। —কুনাল
-
ভালোবাসা এই রকমই হয়।
আবেগ যখন পাঁজর ভাঙে,
ঠোঁট-টা বুজে রয়।
—কুনাল-
ভালবাসার কাঙাল তবু
লুকিয়ে রাখো ঝুলি,
ফকির হয়েও রাজার সাজে
আহা! কি নিখুঁত তুমি।
দিনের শেষে একলা ঘরে
যখন ফিরে দেখো,
রাজা-পারিষদ সবাই গেছে
তুমিই শুধু আছো।
জল আসে না চোখে?
হাঁপ ধরে কি বুকে?
ঘনঘন দীর্ঘশ্বাসে
মাথা টিপটিপ করে?
আচ্ছা, জানালা দিয়ে দখিনা বাতাস
আগের মতই বয়?
বিছানা কি আর আবেগ দেহের
সোহাগ মেনে নেয়?
এই যে রাজন!
বলছ না যে কিছুই, মৌনব্রত বুঝি?
না কি ভেবেছ
নিরব থেকেই সব প্রশ্নের উত্তরে দেবে ফাঁকি?
—কুনাল-
চাইলে তুমি নিয়ে যেতাম
বৈঠা বেয়ে গাঙে,
দেখতে তুমি সোনা মেঘে
কেমন করে বকের হাট বসে।
বেলে-ভোলা কেমন করে
জালের ফাঁসে আঁটে,
মাল্লা হাঁকে কেমন করে
তারই ঠারে-ঠোরে।
ঝোপের ফাঁকে কেমন করে
শেয়াল উঁকি মারে,
কেমন করে গাছের ডালে
বোড়া নিদ্রা সারে।
সাদা পানি কেমন করে
রাঙা হয়ে ওঠে,
আধ খাওয়া চাঁদ কেমন করে
ডুবকি মেরে ওঠে।
—কুনাল
-