ধোঁয়ায় পোড়া স্মৃতির নেশার ঘোর কাটে নি এখনো
ঘুন ধরেছে সে সব দিনেও, বাদ যায় নি মনও...-
সেট স্কোয়ার ছাড়াই যে ত্রিকোণ তৈরী হয়,
তার অন্তত একটা শীর্ষবিন্দুকে
কম্পাসের কাঁটার ক্ষত সহ্য করতে হয়।-
কথার ভারে কথার হৃদয় ভাঙে,
কথাও বুঝি কোথাও জমে থাকে!
কথা ফুরোয়, নটে গাছটাও মুড়োয়,
কথার হিসেব কেই বা কবে রাখে?
কথা দেওয়া ছিল কোনোকালে সাঁঝবেলায়,
কথা শেষ হল বেলাশেষে অবশেষে;
কথার পৃষ্ঠে উঠলো কথাই যখন
কথা না বলে এড়িয়েই গেলে হেসে!
কথাদেরও বুঝি বাকি ছিল কিছু কথা,
কথার দাঁড়িপাল্লাতে কেউ নেই,
কথাকেই যদি অস্ত্র বানালে, তবে
কথার বাণেতে বিঁধলে যে নিজেকেই!
তার চেয়ে বরং সে সব কথা থাক,
কথার কথা অনেকেই যাবে বলে,
এবার তবে নিজের কথাও ভাবো,
কথার ভারটা কমাও কথা বলে।-
ততক্ষণে মনের গহীন থেকে অনুরণিত হয় -
"ভালোবাসিইইইইই, আমি ভালোবাসিইইইইই";
তারপর নিস্পন্দ নিস্তব্ধতা।
(বাকিটা ক্যাপশনে)-
জানলার ঘষাকাঁচে ঠিকরে পড়া
শীতের রোদ্দুরটার বেশ বয়স হয়েছে,
ওর কাছে বন্ধক রাখা আছে কুয়াশাচ্ছন্ন ভালোবাসা...
-
কেমন একটা হয়ে যাচ্ছি না!
"ভালো আছিস?" এর উত্তর "এই চলছে",
ভালো থাকছি কিনা নিজেও জানি না,
এমন একটা মিশ্র অনুভূতি কাজ করছে যে
কী করলে ভালো লাগবে বুঝতেও পারছি না,
রাত কেটে দিন হচ্ছে আর দিন কেটে রাত,
আমি তো এরকম ছিলাম না;
সবই ফ্লাকচুয়েট করছে, পরিবর্তন এত অসহ্য কেন!
ক্যালকুলেশনটা ঠিক মিলছে না।
আপনি, হ্যাঁ আপনি, চাইলে মানে ভালো না লাগলে
নির্দ্বিধায় লাইনগুলো নিজের মনের মতো সাজাতে পারেন,
চাইলে ক'টা শব্দ বা লাইন যোগ করতে পারেন,
আমাকে আনফলোও করতে পারেন,
কিন্তু ব্যাপার হল আমি ঠিক কোথায় আছি বলতে পারেন?
প্রিয় মানুষরা কাছে আছে, সাথে আছে,
কিন্তু আমি যে নিজেকে মিস করছি;
২৯ তারিখেও কি নিজেকে ছাড়া কাটাবো!
-
সকাল থেকে আকাশটা বড়ো মেঘলা,
এ বছরের স্বাধীনতা দিবসটা একটু অন্যরকম,
জাতীয় পতাকা তোলার হিড়িক নেই,
কুচকাওয়াজ বা প্যারেডের কম্যান্ড নেই;
মহামারীর প্রকোপে এই দিনটাও আজ জখম।
আলমারী থেকে লাল পাড় সাদা শাড়িটা বের করে আনি
না, কোনো অনুষ্ঠান নেই, স্কুল-কলেজ-ক্লাব নেই, জানি;
মনটা হু হু করে ওঠে, তিরঙা তিলক আঁকি কপালে,
মনে মনে গেয়ে উঠি 'বন্দে মাতরম', শীতল স্রোত বয়ে যায় রক্তের লালে।
বৃষ্টি এলো ঝমঝম করে প্রতি বছরের মতো,
সেই বৃষ্টিতে চারজন মিলে মাঠে এসে তুললো জাতীয় পতাকা,
ঘরের জানলা দিয়ে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকি;
খবর পেলাম, হাসপাতালের নার্স দিদি কোভিডে মারা গেছে নাকি!
অন্যান্য বছরের জমায়েতগুলোও তাই আজ ফাঁকা।
বিপর্যস্ত দেশের সীমানা জওয়ানদের রক্তে রাঙা হয়েছে কয়েকদিন আগেই,
দেশের ঘরে ঘরে প্রাণ বাঁচাতে কত দেশসেবক রাত জাগেই,
যদি এত রক্তবিন্দুতে শান্ত হয় মহামারী, মুছে যায় সব ব্যর্থতা,
তবে সেদিনই আবার সাজিও শহীদবেদী, সেই ভোরের নাম দিও 'স্বাধীনতা' !-
রাত শেষ হয়ে যাবে,
একরাশ রজনীগন্ধার সৌরভে সুবাসিত ভোররাতে -
নিভে যাবে দীপশিখা,
নুইয়ে যাবে শুভ্র, কোমল জুঁইয়ের পাপড়িরা,
ভেজা ভেজা চোখে শ্রাবণ নামাবে আকাশ
সূর্যোদয়ের আগে,
একটা দিন, একটা প্রজন্ম
পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগে,
সবুজ গাছগুলো, যারা মাথা উঁচু করে -
রবির কিরণে স্নাত হত,
তারাও সেই শ্রাবণে মাথা নুইয়ে -
শান্ত হয়ে ভিজবে,
অনেকক্ষণ, অনে........ক ক্ষণ;
তারপর আবার ভোর হবে,
নতুন পাখিদের কূজনে নতুন আলোয় -
নতুন দিন, নতুন প্রজন্ম জেগে উঠবে,
রঙিন ফুল পাপড়ি মেলবে;
সারা দিন ধরে হয়তো
শেষ রাতের শ্রাবণের কথা মনে পড়বে না,
কিন্তু আবার রাত নামবে,
শীতল হাওয়ায় কোমল জুঁইয়ের পাপড়িরা -
কোলে এসে পড়বে;
তখন শুধু আকাশের নয়,
আমাদেরও চোখ ভিজবে বারবার,
আর সেই জলে রোজ আরো উজ্জ্বল,
আরো হৃদয়গ্রাহী হয়ে উঠবেন কবি।-