** অন্তরসত্বা **
---------------------------
খেলাঘরে আমি খেলেছি যে খেলা,
তুমি কেন তারে দাওনি সাথ সারাবেলা।
খেলা যে এক স্নেহময়ী মায়ার বাঁধন,
সেই বাঁধনে কেন আমায় করো নি আপন?
বাহিরের খেলায় কেন তুমি ডাকলে না আমায়
আমি কি এতই সহজে কেবল ভুলবো তোমায় ?
স্নেহের মোড়োকে মোড়া এই কুশল খেলাঘরে
কেবল আমি চেয়ে রই তোমারি তরে।
সময় পেরিয়ে সন্ধ্যা ঘনায় দিনান্তের পর,
পুরাতন স্মৃতিচারণ হৃদয়ে রূপসী হয় এককি আপন।
আচ্ছা তুমি কি আমার অঙ্গনে মায়াবী একজন ?
কমলের পাপড়ি দিয়ে রাঙিয়েছি হৃদয়ের সিংহাসন।
কই সই কোথায় গেলে তুমি ?
নাকি পুনরায় সন্ধ্যাতারকায় বিলীন হয়ে গেলে ?
আমার গড়া স্নেহের সিংহাসন জোড়া দেবে কে ?-
স্বপ্নসরূপিনী
-------------------------------
হৃদয় মন্দিরে মেঘ জমেছে আঁধার করে আসে,
আমায় কেন আলিঙ্গনে রাখো তোমার বাহুযুগলে।
প্রিয় যদি রাখ নাহি মনে নাইবা কহিলে কথা,
আমিও কেবল অনুভবন করিব তোমার আকুলতা।
রিক্ত আমি, নিঃস্ব আমি,তোমায় দেবার কিছুই নাই,
আছে শুধু মোর ভালোবাসা এইটুকুই তোমায় দিলাম তাই।
তোমার প্রেম বহিতে পারি এমন সাধ্য হয়তো মোর নাই,
এজীবন কেবল তোমার আমার শুধু মিলন হওয়া চাই।
কঠিন এই মায়ার বাঁধন ছিন্ন করতে নারি,
যতই মুক্তি পেতে চেষ্টা করি ততোই বন্ধন হয় ভারী।
ভালোবাসা মোর ক্ষুন্ন হয়নি ধংসের মুখে এসে,
বার্তা পাঠানোর পেয়েছি সময় সুদূর প্রিয়র দেশে।
হঠাৎ প্রেমের হলো সমাধি নবীন স্বপ্ন ফুরিয়ে যায়,
স্মৃতির ময়ূরী কাঁদে বিচ্ছেদ বেদনার আশংকায়।
দূরের পানে মেলে আঁখি কেবল আমি চেয়ে থাকি,
পরাণ যে আমার বেড়ায় কেঁদে,আসবে কবে মোর স্নেহের সাথি ?
কলমের কালি ফুরিয়ে গেছে স্নেহেরদীপ হল ক্ষীণ,
তোমার প্রতি মোর প্রনয়ের আশা ফুরাবেনা কোনোদিন।।-
**মায়াবিনী**
-----(৩)-----
এই কি তোমার মায়াবী প্রেম?
এই বুঝি সেই স্নেহের মধুরতা?
বৃথা তবু কেন মোরে দিলে,
চিরদিনের মিথ্যে নবীন আশা!!-
**মায়াবিনী**
-----(২)-----
প্রিয় যদি নাইবা পেলাম
তোমায় মোর শূন্য হৃদয়ে,
চিরযৌবন আমার ব্যর্থ রবে
কেবল তোমারি শয়নে স্বপনে।।-
** মায়াবিনী **
----- (১) -----
প্রিয় যদি রেখো মনে,
নাইবা বললে কোনো কথা
তবুও হৃদয় শূন্য রব আমি,
কেবল তোমারি নিরবতায়।।-
সুখের অন্বেষণ
-------------------------
সুখের লাগিয়া এঘর ত্যজিনু,ছাড়িয়া গিয়াছি গলি,
ভাবিয়া ছিলাম বাহিরেই সুখ,ভুল ছিল সকলি।
কল্পনার ই রথেতে করিয়া,পক্ষীরাজের ঘোড়াতে চাপিয়া,
সকলি ভুলিয়া চলিয়া গিয়াছি,সুখের অন্বেষণে।।
সুখ সুখ করিয়া কাঁদিয়া মরিয়াছি,দুঃখেরে করি হেলা।
কর্তব্যের প্রতি অবহেলা করিয়া,সম্পর্কের স্কন্ধ কাঁটিয়া,
দুঃখকে জয় করিব ভাবিয়া,ভীরুর মতোন পলায়ে গিয়াছি,
সুখের অন্বেষণে।।
ভিখারির ন্যায় দ্বারে দ্বারে ফিরি,
সুখ রত্ন কে খুঁজিয়া মরি,
এখন আমি বুঝিতে পারিয়াছি,
প্রকৃত সুখ তখনই পাইব,পরোপকার ও কৃচ্ছ সাধনে।।-
** মায়ের নিরঞ্জন **
-------------------------------
প্রথম দিন কি আনন্দ, প্রায় একটা বছর পর
আবার এলাম তোদের কাছে, নিজের আপন ঘর।
সেজেগুজে আমরা সবাই প্যান্ডেলেতে বসে,
নানান জায়গা থেকে লোকে মোদের দেখতে আসে।
পূজোর থেকে আড়ম্বর তোদের একটু বেশি,
ভক্তি, শ্রদ্ধা দেখিনা তেমন,তবে খরচ রাশি রাশি।
এত আলো এত শব্দে ঘুম আসে না রাতে,
তোরাও দেখি সারারাত ঘুরিস নানা প্যান্ডেলেতে।
ভেবেছিলাম গল্পে গল্পে কাটবে এই কয়েকটি দিন,
এত লোক এত আয়োজন তবুও যেন জনমানবহীন।
কেউ আসে না কাছে মোদের কেউ বাসে না আর ভাল,
মাকে নিয়ে তোরা ব্যবসা করিস,আমার এটাই মনে হল।
একা একা বসে থাকি, কেউ আর বলে না কথা,
অত মন্ত্র,তন্ত্র লাগে না আর ভালো, কেবল মাথায় ধরে ব্যথা।
এইতো কটা দিন তোদের সাথে আনন্দ করতে চাই,
একা মোদের রাখিস না ফেলে তোদের যেন পাই।
মা বলে ডাকিস যখন, কাছে তো একটু আয়,
দূরে দূরে থাকিস কেন ? আমার খুব কষ্ট হয়।
এত আদর এত যত্ন চার-পাঁচ দিন ধরে,
তারপর তোদের মাকে জলে ফেলিস কি করে ?
আমি তো তোদের মাটির মা তাই নেইকো আমার মন,
তোরা কিন্তু তোদের মাকে এমন দিস না বিসর্জন।।-
অন্তরের ভাবনা
*************************
হঠাৎ সেদিন ভোরের পূর্বে রাতে ঘটলো এক বিরল স্বপ্নদর্শন,
দিব্য রমনী এক সম্মুখে দাঁড়ালো এসে সদা হাস্যে নিয়ে আমন্ত্রণ।
যেতে হবে তোমায় আমার সাথে সোনার রথে চড়ে আমার স্বপ্নপুরী,
যেথায় তিন লোকের উজার করে দেওয়া আলোয় ফোটা সব পুষ্পকুঁড়ি।
রঙিন পাপড়ি ভরা সুগন্ধ বিলিয়ে দেবার তাগিদে তোমার অপেক্ষাতে,
গুনছে প্রহর উড়ন্ত ভ্রমরের গুঞ্জনে মেতে নিশার কালো ঝরানো প্রাতে।
যেখানে হাজারো পূর্ণিমা সোনায় মোড়ানো গোধুলিতে করে অবগাহন,
যেখানে নাম না জানা রঙবেরঙের সহস্র প্রজাপতির ডানায় হয় স্বপ্নপূরণ।
আমি অবাক বিষ্ময়ে অপলকে তাকিয়ে থাকি চেয়ে,কে গো তুমি অপরূপা?
হাতে সোনার রশি সোনার রথে বসি হাস্যবদনে আমারে করো কৃপা?
আমি তোমায় চিনেছি যথেষ্ট হে কবি শ্রেষ্ঠ, আমার স্বর্গ আজ কবিতা শূণ্য,
তুমি হবে সভাকবি সেথায় আমার রাজসভা তোমার কবিতায় হবে পরিপূর্ণ।
হে কবি ওরাও কবিতা লেখে সুর ছন্দ ব্যতিরেকে নিরস নিষ্প্রাণ গদ্যে,
মন ভরেনা তাতে সকাল সন্ধ্যা রাতে সঙ্গীতের লয় হয় ছিন্ন বিনা ছন্দে।
ফিরিয়ে দিওনা খালি হাতে আজকের এই সোনালী প্রাতে জাগো হে মহান,
বাড়িয়ে দেওয়া হাতে উঠে এসো স্বর্নরথে ফিরে চলো পেতে যোগ্য সম্মান।
নতুন প্রভাতের স্বপ্নদর্শনে তোমার সমৃদ্ধ মনের বুননে গাঁথো কবিতার মালা,
আগামী আগমনীর ভোরে সাজাও ছন্দে ও সুরে তোমার আরতির ডালা।-
** সুহাসিনী **
--------------------------
অপরূপ কোমল তোমার ঐ অধর জোড়া,
আকন্ঠ চুম্বনে চিরতরে হারিয়ে যাই ভালো লাগার মহাসমুদ্রে।
কেবল মনে হলেই তো আর হয় না সব কাজ,
কিছু কিছু মনবাসনা থাকে যেগুলি দিনের আলো দেখে না।
আবার কিছু কিছু অলীকল্পনা থাকে যা ফলপ্রসু হয়না,
সবই যেন সঙ্গোপনে রয়ে যায়, না পাওয়ার ব্যর্থতায়।
হয়তো একটা তীব্র উন্মাদনা রয়ে যায় শেষমেশ।
যে ভাবে কোনো অবুঝ পতঙ্গ আগুনে ঝাঁপ দেয় -
সেই ভাবে ছুটে যেতে মন চায় তোমার স্নেহের আঁচে।-
শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মহারাজ
শিক্ষক পারেন গড়তে সমাজ, শিক্ষার আলোকে মুড়তে,
ছাত্র সমাজের কর্তব্য হলো একটু সন্মান প্রদর্শন করতে।
সারাটা জীবন বিলিয়ে দিতে শিক্ষক করেন না কৃপনতা,
মানুষের মতো মানুষ গড়ার কারিগর ছিলেন তারা সর্বদা।
শিক্ষক বিনা জ্ঞানের আলো পায় না কখনো পূর্নতা।
শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবন উজ্জ্বল হোক,
শিক্ষকের মনের এই তো ভাবনা।
পিতা মাতার পরে কোন ঈশ্বর যদি থাকেন,
তিনি হলেন শিক্ষক আর নেই কেউ অন্যথা।
ভালো থাকুন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক,
আপনাদের চরনে শ্রদ্ধা নিবেদন করে চলি সর্বদা।
আপনাদের দানে পেয়েছি এই জীবন,এটাই মোর পরম সার্থকতা।
দায়িত্ব ছিল মানুষ তৈরির,
নিযুক্ত প্রহরীর মতো দায়িত্ব পালন করেছেন সর্বদা,
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রার্থনা সভায় আপনার উচ্চারিত বাণী,
মোর হৃদয়ে এনেছিল জীবনে সাফল্যের এক মানসিক দৃঢ়তা।
আপনার সঠিক শিক্ষার দীক্ষা গ্রহণের ফল জীবনময় ঘিরে আছে নিত্যতা।
মিথ্যা নয় সদা প্রাণবন্ত সত্যতা।
সঠিক শিক্ষা, সুপরিকল্পিত জীবন দর্শন, চিনিয়ে ছিলেন আদর্শতা।
পাঠ্যসূচীর বাইরের অনেক শিক্ষায় বঞ্চিত করেনি এই ছাত্র শিক্ষকদের সখ্যতা।
কিন্তু শিক্ষাদানের মধ্যে ছিল না যে কোন অলসতা।
আপনাদের আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত যেন না হই এই মোর ছোট্ট প্রার্থনা,
ঈশ্বর আপনাদের ভালো রাখুন সবসময়ই এই মনের বাসনা।।-