"বাবা, এবার আমায় রথের মেলা থেকে ভেঁপু কিনে দেবে না?"
ছেলের কথা শুনে চোখের জল আর বাঁধ মানে না নিপুণ এর।
প্রতিবছর জগন্নাথের মূর্তি গড়ার টাকায় বেশ ক'দিন ভালো করে খাওয়া হতো তাদের। তারপর বিকেল হলে মা-বাবা আর ছেলে মিলে রথের মেলায় যেত, পাপড় খেত, জিলিপি খেত আর খুব ঘুরে ভেঁপু কিনে বাজাতে বাজাতে বাড়ি ফিরত। আবার কখনো কখনো মেলাতেও ঘুগনির দোকান দিত আয়ের পরিমাণ একটু বাড়িয়ে নিতে। সেদিন তো আর ছোট নিপুণের আনন্দের শেষ থাকতো না! শুধু মেলায় ঘোরো আর খেলো।
কিন্তু হায়! অতিমারীর আবহে কোথায় রথের মেলা আর কোথায়-ই বা ভেঁপু! খাওয়াই তো জুটবেনা আজ তাদের। নিপুণ ভগবানকে ডেকে যায় একমনে।
এমন সময় পাড়ার ক্লাব থেকে কিছু ছেলে আসে। সঙ্গে কিছু ফল, সব্জি আর অন্ন। নিপুণের ছেলেকে কাছে ডেকে জিলিপি খাওয়ায় আর বলে, "রথের মেলা এবছর হয়নি ঠিক কিন্তু যাদের জন্য প্রতিবছর আমরা উৎসবের আনন্দে মেতে উঠি, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে এই ন্যূনতম আয়োজন। আশা করি, গ্রহণ করবেন।"
সকলে বিদায় নিলে নিপুণ আকাশের দিকে তাকিয়ে ভগবানকে ধন্যবাদ দেয়। ভেঁপু না হোক, পেটের জ্বালা তো মিটবে অন্ততঃ!
তাদের মতো মানুষদের বিপন্নতা থেকে উদ্ধারকারী এই সমাজসেবকরাই তাই
ভগবানের দূত তার কাছে।।
-