আজ কবিতার দিন.....
ঘুম ভেঙ্গে শব্দদের নিরন্তর বায়না,
ছন্নছাড়া সমাজে হাবিজাবি বার্তার আয়না।
সুশীল হৃদয় শীতঘু্মে, বাক্যগুলো অসমাপিকা।
শুধুই কল্পনায় চরিত্র সাজে, বিষয়ের ঘর ফাঁকা।
আজ কবিতার দিন....
কিছু শব্দ জোর করে জোট বাঁধে,
কে যে ওঠে কার কাঁধে?
প্রবল শাসনে জনতার আদলতে,
রঙ নিয়ে জোরাজুরি,অকাল দোলেতে।
আজ কবিতার দিন
প্রেমের আকাল, ন্যাকা বিরহ আবিচল,
আজ আছি কাল নেই,কবির চোখ টলমল।
পাতা ভরা নিকোটিন, ধোঁয়ার বাষ্পে জল রঙ্গিন।
ভালবাসা মরে মুঠোফোনে, কাব্যের ফেনিল।
আজ কবিতার দিন,
লিখে যাই মন খুলে।
স্বপ্নের বিহ্বলে,
যা শুধু কল্পনার চলে
কাকতালীয় যদি বা মেলে।
দোষ নেই মানুন ভুলে...
আজ কবিতার দিন............।
-
তারপর দিন শেষ হতে হতে বছর অস্তাচলে।
ডিসেম্বরের কবিতায় শীত পড়েনি...
নির্জনতা সরিয়ে দেখি তোমার শূন্য মুখ।
বৃষ্টি এলে বুঝি তোমার বুক চিরে কোনো নিঃসঙ্গ অতীত বয়ে যাবে,
কিন্তু শুষ্ক কিছু শব্দের চিৎকারে মাথা পর্যন্ত কুয়াশা মেখে ঘুমোতে যাই।
-
চলে আসে শীত,শুধু সময় পাল্টে গেছে।
যেভাবে তুমি পুরোনো দিন জুড়ে গল্পো বানাও,
যেভাবে ধ্বস নামে স্রোতের,
বৃত্ত ভেঙে ঢুকে পড়ে উত্তুরে হাওয়া বন্দরে..
সেখানে নিলামে আকাশ বিকোয় জলের দরে।
ঠিক যতটা অপরাধে তুমি আমি অবনত পৃথিবীর কাছে,
তার চেয়ে বেশি মানুষ বুঝলে,ঢেউ এসে
নদীর মৃত্যুকে মিথ্যে বানিয়ে দিতে না..
ঠিক কতদিন ছুঁয়ে দেখনি শিশিরকে?
ঠিক কতবার হারিয়ে গিয়েছে কুয়াশার ভিড়ে?
হাত পেতে ভাসিয়ে দিয়েছো ঠিক কতগুলো কাগজের নৌকোকে...
খুব শীত করেছে, কবে অনুভব করেছে?
আসলে এখন সময়ের দেশে অসময়ের ফসল বুনেছো।
শ্বাসমূল নাক বের করে আছি,অসহায় আত্মসমর্পণ!
ঝড় ওঠার আগে ফিরে এসো তীরে।
সন্ধ্যে নামার আগে কবিতারা নরম আলোয় জড়িয়ে ধরবে তোমায়...-
পালিয়ে কি বাঁচা যায়?
স্মৃতিরা পথ আটকায়..
পিছুটান,ভালো থাকার অভিনয় ।
একা হলে,আলোর মুখোমুখি দাঁড়াতেই হয়..-
ভেবেছিলাম আবার আসবো কখনো..
দেখলাম আকাশের গায়ে ঠেস দিয়ে, দাঁড়িয়ে আছে ক্ষতর চাদর জড়িয়ে।
গুঁড়ো গুঁড়ো সাদা ঢেউ চোখে ওপরের দিয়ে বয়ে যায়...
খানিক কপাল ছুঁয়ে, শেষে ঐ প্রলেপ দেওয়া নক্ষত্রের দিকে ছুটে চলে...
হাত পেতে খুচরো কিছু শীত ঋণ করি,
অন্ধকারের নেকলেস পেলে তোমাকে ভালো মানাবে।
বিধ্বস্ত শহর ছেড়ে গেছে অনেকক্ষণ...
এবার বৃষ্টি ঢুকে পড়েছে শরীর ছাড়িয়ে নিষ্ঠুর পাথরের বুকে...
কবিতারা আলো পেলে তোমায় খোঁজে।
ঠিক যতবার না আসার ভান করে অভিমান খাম বন্দি করি...
তারচেয়ে বেশি যুদ্ধ ভুলে তোমাকে সাজাই..
-
ফিরবে না আলো জেনে মুঠো খুলি,
অসংখ্য শব্দ কোলাহল ছেড়ে খাল-বিলে ডুব দিল।
এক নিঃশ্বাসে ওরা ইচ্ছেদের ভাসিয়ে দিল।
ঢেউগুলো সাঁতরে পর করে দিল সবুজের ব্যালকনিকে।
যে আকাশ তুমি ছেড়ে গেছো,
তার নিচে দাঁড়াতে পারিনা। বার বার মৃত কবিতাদের ভিজিয়ে দিতে থাকি।
এ শহর,বারুদ, মৃত্যু সবার পাশ দিয়ে ছুটে যাই।
মিছিলের স্লোগান মনে মনে বলি,
হারিয়ে যাবার ভয়ে ,
স্বরলিপি ভুলে যাই, সুবিধামতো জীবনের স্কেল পাল্টাই।
যদি আবার আলো এসে পুড়িয়ে দেয় মন...
-
মাঝে মাঝে তোমায় মনে পড়ে।
যদিও দেরাজ থেকে পাড়া হয় না স্মৃতি।
দূরে বিস্তৃর্ণ সীমানায় দল পাকায় ঢেউগুলো।
ম'ম করে ভিজে যাওয়া মাটির গন্ধ।
এক হাঁটু বালিতে মন দাঁড়িয়ে থাকে।
কবিতার খাতায় শব্দগুলো খসে পড়ে পর্ণমোচীর মতো।
কুয়াশার চাদরে তারা আদর খেতে চায়।
কখন যে সন্ধ্যে নেমে গেলো বুকের ভিতর।
অবহেলার আদ্রতায় ওখানে লুকানো আছে পাহাড়।
আলোর কাছে যতটুকু ঋণ ছিল,মিটিয়ে দেবার তাগিদ নেই।
আসলে ভাষা হারিয়ে গেছে বোবা কান্নার কাছে।
এ যেন বাতাসে শুয়ে আছে মেঘ অথচ মনে হয় ভেসে যাচ্ছে...
ঠিক যেমন তুমি-আমি দূরত্বে বেঁচে আছি।
নিঃশব্দে,নিঃস্ব হয়ে,একরাশ মুগ্ধতার বলিদান।
জেগে থাকি ঝাপসা কাচের ভিতর চোখ বুজে।
সব দেখেও কিছু দেখার উপায় নেই।
আসলে আঁধারে বোঝা যায় জীবনের জলছবি....
-
স্বপ্ন - উড়ানী মেঘ ভেসে যায় আবেগের স্রোতে।
তখনো বুঝিনি শিকড়ের বাঁধনে আলগা হাতের মুঠি।
ধেয়ে আসা ঝড় ঠিক তখন আমার গোটা শরীরে পাতা খসে যাবার ডাক দিয়েছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠে স্রোত গুলো আঁচড়ে পড়ার মত অনুভূতির দংশনে বার বার মরেছি।
তবু বেঁচে যাই সিদ্ধান্তের দোসর জেদের আলিঙ্গনে।
এক প্লাবনে ভালোবাসা মিছে,এক আগুনে হৃদয় পুড়েছে...
অকারণ কোনো সুর ভেসে যায় বিচ্ছেদের অবকাশে।
বাঁচার লড়াইয়ে নিঃসঙ্গতার কেমো থেরাপি মন খারাপ করায় না আর...
রোগটা ছোঁয়াচে ছিল না...
শুধু হাত পেতে তোমায় ছুঁতে চেয়েছিলাম..-
রোদ মুড়িয়ে আকাশ হাসে স্বস্তির নিঃশ্বাসে।
অথচ আমাদের পকেট ভর্তি ধোঁয়া,
বুকের ভিতর কুয়াশা জমে অজান্তে।
ঘটনা জুড়ে গেলে প্রতিবাদ করি।
এদিকে শেষ ট্রাম বিকেলবেলা চলে গেলো অভিমান বোঝাই করে।
হয়তো একদিন বিকেলে ঘুম বোঝাই করবে।
যেভাবে প্রতিদিন মেঘ ঝুঁকে পড়ে আমদের কাঁধে।
যেভাবে ফিকে হতে হতে সবুজ উঁকি দেবে কোনো যান্ত্রিক দেওয়ালে।
তোমার অভিমান,জেদ,মান,বাঁচিয়ে রাখা সময়,ক্লান্তি ,অজুহাত ,ব্যস্ততা,ব্যর্থতা...সব ফিরিয়ে দিও আমার কাছে।
তারপর না হয় ইমারত গড়ে নিও তোমার সাধের মনশহরে ।
আমি তখন অন্ধকারে তোমার ফিরিয়ে দেওয়া অহংকার দিয়ে বিপর্যয়কে প্রাকৃতিক করে তুলবো।
আমরা তো এমন নিঃশ্বাসে বেঁচে থাকতে চাইছি দুদণ্ড স্বস্তি পাবো বলে...
-
কটা গাছ পুষেচ মনের মধ্যে?
বাইরের দত্তক নেওয়া বাতাসে ভেসে বেড়াও?
ডানা ধার করা পাখির মতো,মেঘের মতো...
এই যে মেঘ,ঝড় ,বৃষ্টির ছবির গুলো কোথায় তুলে রাখো?
গল্পের আদ্রতায় ঘাম ঝরে কান্নার মতো।
দেখে বোঝা যায় না ক্ষত গুলো আড়াল করে রেখেছ।
পুরোনো রোদের ঋণশোধ,হৃদয়ের পৃষ্টে ঘূর্ণাবর্ত।
এখানে কোনো সংকেত কাজ করে না।
এ সমুদ্র ভেঙে প্লাবন হতে পারে নিঃস্ব করে।
তোমাকে একা করে মেঘ চলে যায় উত্তরে।
ওখানে বন্যা হচ্ছে,এখানে প্রিয়তম অক্ষর গুলো পুড়ে যাচ্ছে।
জানালায় ফুটে ওঠে তার ছায়া।
সময় পেলে এখনো পুষে রাখা গাছে জল দিও।
কংক্রিটের মেঝেতেও অর্কিড জন্মায়।
বেড়ে ওঠা পারদ গায়ে বৃষ্টি মেখে নিও।
জানি সারি সারি সরলরেখা বয়ে গেছে,
আর তার পাশেই তোমার বৃত্ত।-