সূর্য তখন অস্তাচলে আঁধার পারে বাড়ি
বন্দী পাহাড় মূর্তি'টাকে দিচ্ছে এবার আড়ি ।
বদলে যাওয়া অন্ধকারেই মিশুক , যেমন খুশি
ঘুমিয়ে কিংবা জেগেই হোক না আমার স্বপ্নদেশী ।
নতুন সূর্য আঁকবো কাল ঝরা পাতা তুলি পাশে ,
কাশফুলে আর পলাশ রঙে রাঙাবো উচ্ছাসে ।
স্মৃতির চিহ্ন উড়েই চলুক একঘেয়েমির স্রোতে
একঘরে হোক রুক্ষ'রা সব , শিশির জমাস হাতে ।
মেঘের গায়ে মেঘ জমেছে , বৃষ্টি তো নেই তেমন ,
খরার গায়ে অবিকল তুই বৃষ্টি উদযাপন ।
আবেগ'গুলো ভীষণ এখন মানুক আনুগত্য ,
আদিম হোক বা অধুনা সেতো সবাই সহজাত !
রঙচড়া নয় , শুধু ফাটল ধরা মনের সারে
শিশিরে পাতা আর সবুজ নীলের আস্তাকুঁড়ে ,
আঁধার বনের শাল'পিয়ালে , নির্বাকতার গর্জনে
মনের মানুষ কান পাতে ঠিক মনেরই ঐকতানে ॥-
বৃষ্টি নামুক চোখের সঙ্গোপনে ।"
নৌকা বিমায় , দাঁড়ের সীমায় , হৃদয় যখন খেয়া !
বিনিময় প্রথা , জলে ইস্তফা , অন্ধ ছাড়া কী আর ?-
যখন তখন বর্ষা ঠোঁটে মেঘেরা সব অশান্ত অধরা ,
কবিতারা , খামে নাম খুঁজে পায় আকাশ ও ধরায় ।-
তুমি কালবৈশাখী , বৃষ্টি দেখবে স্বাধীনতায় ।
বর্ষার গান ফুটপাতে ভিজবে স্বাদহীনতায় ॥-
শরত কালের পেঁজা তুলোয়
যখন তুমি ভরা বর্ষণ ,
সামনে যদিও হলেই বা হ্রদ
অদুরে তার সমুদ্র মন্থন ।
তোমার চোখের সমুদ্র নীল
পলক পড়েনা জবাবদিহির ,
অশ্রুগ্রন্থী হার মানে বেশ
কাব্যেই তা ক্ষোভবিহীন।
পিছুটানের খিল দিয়ে দেখ
ফাটলে বোধহয় নেই ওজন আর ।
ফুঁপিয়ে ওঠা লাল অভিমান
শ্মশান ফেরত ক'জন আর ।
তুমি জানি ছিলেই বুকে
দোষ কী তাতে , চৌচিরে
মুক্তা নাহয় মুক্তিই পাক
ঝিনুকমালার বুক চিরে ।।-
তুই আমার বৃষ্টি হবি ?
ইলশেগুঁড়ি ? কিংবা জলের ছবিই !
তোর কয়েকফোঁটা আমার জানালার শিঁকে ,
আঙুল দিয়ে ছোঁব , তুই কব্জি বেয়ে ফেলবি নোঙর ।
আমার মরীচিকার দেশে ভিজবি কনুই শুঁকে ,
জল আশায় শান্ত হবে 'তুই' মাখা বন্দর ।
তুই আমার বৃষ্টি হবি ?
ঝমঝমিয়ে ? কিংবা শুধুই রব-ই !
গ্রীষ্মদিনে রৌদ্রমাখা কৃষ্ণচূড়ার লালে
গলবে রঙ লাজে , একলাটি চুপ করে ।
আমি তখন গাল ভেজাতে লুকোচুরির ছলে
একান্তে ডাল টেনেই তাকাই ছায়ার আসরে ॥
তুই অামার বৃষ্টি হবি ?
বন্যাধারায় ? কিংবা খানিক জ্যান্ত শব-ই !
ধ্বংসে তখন ধৈর্য রেখে গুনবো দিন 'বেকার' মতে ,
জানি সহস্রাব্দ পেরিয়ে তুই বলবি আমায় -----
"তোর ওই সমান্তরাল বিক্রি'বাটার দিনে
কাদা হয়ে জমবো তোর ছন্নছাড়া রাস্তায়" ॥-
বৃষ্টিমাখা পিঞ্জরে গোধূলি সূর্যে রঙ
তেজস্বিনী বন্দীদশায় লজ্জা'মুখো মুখ ।
বিদায়বেলার প্রাক্তনে লাগেও যদি শিশির
চিঠির পাতা হোক লেখা অক্ষর হোক দিশি ।
বিন্দু'রকম কৌতুহলের বশে অক্ষরজ্ঞান ব্যর্থ ।
মেঠো হাওয়ার জলাতঙ্কে যখন তুমি অন্য'দেশে
অবুঝ আমি , মধ্যাহ্নে তোমার চোখের রহস্যে ॥-
তুমি আমার শহরতলি হও !
আমি উত্তাল ঢেউ ! সমুদ্র সৈকত ।
তুমি পেরেক গাঁথো , চাবুক মারো
আমি অাবার মুছবো স্মৃতির খত ॥-
যদি কোনো নিরুদ্দেশে উড়ে চলে এক কুলো ছাই !
নিঃশ্বাস সন্দেশে নেবে মেজাজ আর মনখারাপই ।
বানাবো জাহাজ বিশাল, বেপরোয়া মাস্তুল তার ,
সন্দেহের সাগর চিরে হবে সে মন সোহাগী।
যদি হয় একফালি চাঁদ , পাহাড়ি নমস্কারে !
কিংবা মুখ থুবড়ে আনাড়ী তীরন্দাজী ।
হাসবে চাঁদমারিও দেখে সেই লক্ষ্যভেদী ,
শয়তানী চোখের ভাষায়, হোক তবে সরফরাজি ।
ধূলো'ধরা স্কুল ম্যাগাজিন , হন্যে হয়ে আকাশবাণী ,
কানামাছির গোয়েন্দা গিরি চশমায় দিল কুরবানি ।
শৈশব হাতছানি দেয় শোকেসের খেলনা হতে ,
ব্যোমকেশে চরস দেখে, ডেনিস আজ অভিমানী ।
ট্যাঁরা-বাঁকা মস্তিষ্কের পচা ঘিলু ফ্রিজের ঘরে ,
জোনাকি ব্যাটারি জুড়ে টর্চ জ্বেলে গর্জে ওঠে ।
হৃদয় আজ নিউক্লিয়ারিক, সংযোগে প্রলয় হানে ,
রবি মামা দেয়না হামা, প্রকৃতির লালচে চোটে ।
যেরকম হাওয়ায় তফাত হবে আরো কুয়োর ব্যাঙে ,
যদি হই ঢাল তলোয়ার , আসল আর নকল দাড়ির !
কালবৈশাখী 'হ্যারিকেন' হয়ে, ভাবে বুঝি দৃষ্টিগোচর ,
বানাবো সমান্তরাল , ভাঙা হোক ভয়ের সিঁড়ি ॥-
চারদেওয়ালি চিলেকোঠা চাঁদ চোয়ালে চৌহদ্দি চায় ,
চক্রবাকের চক্রান্তে চড়া'র চৌচিরতা চিরন্তন ।
চোখ চাইলে চশমা চলে চৌরাস্তার চৌকাঠে ,
চঞ্চল চপল চিত্ত চোরাবালির চামড়ার চোটমোচন ॥-