গ্রন্থিক অজ্ঞাত   (গ্রন্থিক)
465 Followers · 65 Following

আগের মানুষটা আলাদা, কিছুটা কবি type এর। এই মানুষটা শুধু পদ্য করে, ছড়া কাটে।
Joined 20 December 2017


আগের মানুষটা আলাদা, কিছুটা কবি type এর। এই মানুষটা শুধু পদ্য করে, ছড়া কাটে।
Joined 20 December 2017

কিছু বৃষ্টি মন খারাপি না হলেই ভালো
কিছু বৃষ্টি ঝড়ের শেষে, ভবিষ্যতের আলো,
একটা বৃষ্টি সেদিন ছিল যেদিন চৈত্রমাস
আপনি তখন বৃষ্টিস্নাত, আপনি আমার আশ।

কিছু বৃষ্টি খুঁজে ফেরে সে, আমি খুঁজি রোদ
কিছু বৃষ্টি পাহাড় জুড়ায়, সামনে অবরোধ
একটা বর্ষায় ভিজবো বলে হারাই কেবল খানিক
তোমার তখন ব্যস্ত জীবন, আমি খুঁজি মানিক।

কিছু বৃষ্টি এমন এলো, দেখতে গেলাম সবে
কিছু বৃষ্টি মন খারাপে সঙ্গী মুড়ি চপে
একটা নদী বয়ে চলে বৃষ্টিজলে স্নাত
ঘাটে বসে বৃষ্টি ভিজি, বন্যা অবিরত।

-



সূর্যমুখী চেয়ে দেখা আমার মানা
সূর্য পানে চেয়ে চলা বহুদিনের
উল্টোদিকে হলুদ রঙের বিপদ আছে
বুকের মাঝে রক্তরাঙা মাত্রহীনের।

সূর্যমুখী হঠাৎ ক'রে দেখতে পেলে
হলুদ বিপদ খুন করেছে রক্ত রাঙা
স্বীকার করে আমার গাথায় ছিল যেটা,
প্রতিনায়িকা; ভালো হবার তাই যে মানা।

সূর্যমুখী, তোমার সঙ্গে জীবন আছে
সঙ্গী খোঁজার স্বীকারোক্তি কঠোর ভারী
আমিও তবে সূর্যপানে চেয়ে চলি
পরের জন্মে তোর জন্য আগাম আড়ি।

একটা তারার আজ রাত্রে মৃত্যু হ'লে
তার আভা যেদিন তোকে ছুঁয়ে যাবে
আমি সেদিন আসবো ফিরে হিসাব নিতে
সূর্যমুখী সেদিনটা ঠিক কেমন হবে!

আমি আছি, আমি থাকবো অনন্তকাল
নিজের বলে রাজ্য সকল দখল ক'রে
একদিন ঠিক করবো জারি হত্যা আদেশ
যেথায় যত সূর্যমুখী, মুঠোয় ভ'রে।

-



রথযাত্রা

আবার গল্পে ক্লান্তি নেমে আসে
শব্দ শিখে ভাবের চাদর বোনা
মিথ্যে হাসির ধর্মটুকু দেখায় ;

সেদিন যেন জনাকীর্ণ পথে
তুমি বাদে সবার আনাগোনা
এই ভাবেতে কাটলো কত কাল।

কবি হ'লে হাসিয়ে ছেড়ে দিতাম
মূর্তি মানে নদী টুকুই বুঝি
সময়চক্র হারিয়ে দেয় তোমায় -

তবে কেনো এতো আয়োজন;
সবটা ছেড়ে তোমার দেওয়া যেটা
রথের দিনে সেটুকু হোক ঢাল।

তুমি আছো আমিও আছি ঠিকই
যেটা নেই সেটাই যেন প্রকট
তোমার সময় তার দিকেতে চলে।

ভক্ত দেখি ভক্তি দেখি পথে
রক্ত ঝরে হলফনামা লিখে
খুঁজতে বসে পাইনা খুঁজে তারে,
তোমায় বুঝে তোমার কথা বলে।

-



সহস্র আলোকবর্ষ পরে
নক্ষত্র ফিরে আসে পাহাড়ি নদীর জলে।
মৃত্যুগ্রাসি অবচেতনে দেখি তারে
পাথরের খাঁজে খাঁজে বেঁচে থাকে, শেষ দেখা।

তবু সে নক্ষত্র মরে গেছে বহু আগে,
জানো নি কো তুমি তাকে
জানিবার প্রয়োজন হয়না কোনোদিন।
শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি
কেড়ে নেয় তোমায়।

বুকের ভেতর আগুন জ্বালিয়ে কোটি বছর সে বেঁচেছিল,
তোমায় পাবে বলে।
পাথরের দিকে পিঠ দিয়ে তুমি যখন তাকে পেলে
খবর নিয়ে দেখো সে মৃত, সবার কাছে।

-



প্রিয়

মাঠের সঙ্গে তখনও মনের সম্পর্ক ছিল
ঝড়ের বিকেলে ধুলোর মাঝে প্রথম শুনি
তার এক্কা দোক্কা খেলার বোল;
ধা ধি না না তি না যেনো হওয়ায় ভেসে আসে।

বাড়ি ফিরে ভালো লাগে শঙ্খ ঘোষ
নতুন শোনা কবিতায় তুমি তখন নবম শ্রেণি
আর স্কুলের রাস্তায় তুমিই তখন শাড়ি।
আজ যখন পাড়ায় ফিরি,
সে খেলার মাঠে ফ্ল্যাট গজিয়ে যায়
সূর্য ডোবে তোমায় ভুলতে চেয়ে।

আগমনীর সুরে বড্ডো প্রিয় ছিল শঙ্করা রাগ।

সেদিন কাল বৈশাখীর পর যখন তোমার বাড়ির নিচে গিয়ে দাঁড়াই
তুমি শঙ্করার আলাপে মত্ত ছিলে . . .

-



গল্প কিছু অল্প করে বাঁচে
সেই গল্পের রাজকন্যে তুই
বৃষ্টি নেমে ভিজিয়ে দিলো তোকে
একলা আমি ক্যাবলা হয়ে রই।

দিন কেটে যায় তোর অপেক্ষাতে
আমার আবার ভালো হওয়া মানা
বাউন্ডুলে নিজের আস্কারাতে
তোর জন্য জমাই দস্যিপনা।

তুই তেমনটা যেমন কোনো গল্পে
শেষ বাক্যে সুখের পৌনপণিক;
বাজ পড়লো। ভয় পাওয়া তোর আছে
সঙ্গে আমায় জড়িয়ে ধরার হিড়িক।

-



বৃষ্টি ভেজা বাকি আছে খানিক
খানিক বৃষ্টি ঘাম ভিজিয়ে জামায়
ভেজা রাস্তায় পিছলে পড়ার দিনে
ট্রাম লাইনটা টেনে নিচে নামায়।

শহর জুড়ে কিসের যেন মিছিল
আটকে দেবার প্রাচীন অভিপ্রায়
কষ্ট করে যেই পৌঁছাই আলোয়
তোমার কষ্ট জমে ওঠে পায়ে।

নিয়ম মাফিক ব্যথা সবার আছে
নেই যেটা কলেজ স্ট্রিটের স্বত্ব
শ্যামবাজারের গলির মুখে সেদিন
আমার মৃত্যুর নিশানা অব্যর্থ।

প্রাপ্তিটুকুই হারার কারণ সবার
সবাই মরে হারিয়ে ফেলার ভয়ে
আমার তবু তুমিই তো আছো
এর বেশি আর কে বা বলো চায়?

-




এমন কিছু গল্প শেষে বেঁচে থাকা
মৃত্যু শ্রেয় তার চেয়ে অনেক চুপিসারে,
একলা আমি একলা তুমি সবার মাঝে
থাকার মানেই, তুমি শুধু অধিকারে।

যেটুকু যা প্রাপ্তিবোধে হারিয়ে ফিরি,
তোমার ছবি সঙ্গে করে পুষিয়ে ওঠে?
পাওয়ার কথা উঠলো বলেই স্বীকার করি,
নিঃস্ব হওয়ার সূত্র লেখা তোমার ঠোঁটে।

নাগরদোলা যেমন ভাবে উপর-নিচে
নামায় ওঠায়, তেমন তুমি লাস্য জানো;
মাঝ রাতের আকাশ জুড়ে ভোর এসে যায়
বিনিদ্ররাত হয়েই না হয় মৃত্যু হানো।

চক্রাকারে আবর্তনে নিম্নগামী
'জড়িয়ে ধরা' বাঁচতে চাওয়ার শেষ সম্বল,
মূল্যহীনে কাটায় যেমন অগ্রদানী
তোর শব্দ আমার চলার সেটুকু বল।

-



বৃষ্টি হয়ে দুঃখ ঝরে জানি
বাকি থাকা বেঁচে থাকার আশ
তোমার বিষয়ে আজও অভিমানী
ভালো থাকার একটু অভিলাষ।

এগিয়ে গেছি তোমার মতো করে
ভালো আছি কর্মব্যস্ততায়
বৃষ্টি ভিজে যেই চলেছি পথে
ছাতা হাতে ওভাবে কে চায়?

ঠিক চিনেছি ভুল করিনি বটে
যদিও তুমি চিনতে পারলে কি?
ডাকলে তবে দেখিয়ে দিতাম তোমায়
আজ আমার আছে কত কি!

তুমি ছাড়া বেশ চলে যায় সব
তোমারও চলে দেখতে পেলাম বেশ।
তার পরেতেও একটা কিছু খোঁচা
সেই সময়ের কাটেনি বুঝি রেশ।

সম্রাজ্ঞী, আজ সকালে দেখি
তোমা নিয়ে উত্তেজনা কই?
তবু তুমি আড়াল ছিলে ভালো
আজও বুঝি,
আমার কিছু একটা নেই।

-



অবগাহনের সুর

তোমায় নিয়ে একটা সূর্যোদয় দেখবো।
দেখবো একটা ভোরের স্বপ্ন, মূর্তির কোলে।
হলুদের ছোঁয়া দেওয়া পাথরগুলো মূর্তির জলে অপেক্ষা করে -
এমন ক'রে সূর্যস্পর্শা হওয়ার;
কাঞ্চনজঙ্ঘা ততক্ষণে সেই হলুদ ছুঁয়ে দেখেছে,
নদীর সেই ছোট নুড়ির সত্তা, আমার মত করে তখন বেঁচে ওঠে।

মূর্তির জলে ডুবে থাকা ওই হলুদ পাথরটার মতো আমার অবগাহন
মূর্তির শান্তির জলে;
স্লিপিং বুদ্ধের পাদপদ্মে প্রথম আভার পতনের মতো
তোমায় ঘিরে আমার সেই অবগাহনের সুর বাজবে।

ততক্ষণে সেই সুরে নতুন রাগ জন্মাবে।

-


Fetching গ্রন্থিক অজ্ঞাত Quotes