তোমার চোখে আমার দুঃস্বপ্ন
দূরদর্শী সাদামাটা বিকেল
দুটো পাখির পাশাপাশি বসার গল্প
অল্প বুকের ওঠানামা উদ্বায়ী,
ঠিক কখন নিস্তব্ধ বন্দরে জাহাজ পৌঁছায়,
কিছুই বোঝা যায়না ।-
নাম - ঐশী অধিকারী
যখন অনুভূতি গুলো বুকে চেপে দমবন্ধ করে রাখা যায়না , আ... read more
পেনদানি
অসম্ভব ভালোলাগার সাদা টেবিলে , পেনদানি
মধ্যরাতের বইয়ের ওজনে চেপ্টে থাকা -
বেকারের কটূক্তি,
দুদিনের বেশি হলো আর বিরক্ত করেনা।
সামনের দেওয়ালে দিদির আঁকা দেওয়াল চিত্র,
তার বয়স ওই এক যুগ পেরোলো,
আমার রোজনামচার দিনলিপি,
সংস্করণে আটকে রইলো-
হাসিমুখে, বুকফুলিয়ে বাবাকে দেখানো হলোনা ।
কুড়ির কোটায় নথিপত্রের হলুদ পাতা ,
ওই সাধারণের খাতায় নাম লিখিয়ে থেমে আছে ।
এগিয়ে আছে খামতি, মাথা ভন ভন পরিশ্রমিকেরা
দাড়িয়ে নেই দেওয়াল ঘড়ির সময় ।
চাহিদার সামনে একটা পেনদানি,
এদিকে তাকিয়ে দেখেছে দিনের পর দিন ,
লিখছি, কবিতা নোটস আর চাকরির আবেদন
ইশ, সমস্ত রাত ঠায় জেগে আছি -
আমি, আর সামনে পেনদানি।
-
আমি আসছি এই সমাজের বিষাদগ্রস্থ বিকেল,
আমার অসহ্য লাগে।
স্টেশনের ডেঙ্গু জলে কাদায় লেপটানো ছেঁড়া কম্বল,
ইস্, গায়ে দেওয়া যায় নাকি?
আমি আসছি, মাছিমারা দু-কলম লেখা আর ধাতে সয় না,
থালার উপর তিন আঙুল ভাত রেখে হাত ধুয়ে উঠছি ,
পিত্ত মাখা নীলচে পাকস্থলী, খেতে পায়না।
আমি আসছি, আমার দমবন্ধ লাগে
লাল , কমলা , সবুজ, সাদা মানুষের ভিড়ে।
আমার অসহ্য লাগে মুখোশ ছাড়া চামরাধারীদের,
বিল্ডিং সমান টাকার পাহাড় , কেউ খেতে পায়না ।
তাই আমি আসছি --
পেখম ছড়িয়ে রোদ পোহানো মাঝ দুপুরের ভাবনারা -
ইতস্তত , স্বেচ্ছাচারী ।
নাগালের কাছাকাছি পাওয়া হয়না
ওদের ভাবনাময় অস্ফুট যুক্তাক্ষর
সময়ের ঘোলাজলে, জলে ওঠে না ।
বিছানায় শরীর আকারের ঘামের দিগন্ত- দাগ
শিশির ভোর চাপিয়ে বিকেল গড়ানো কলঙ্ক,
পৃষ্ঠায় ওঠে নিদাগ সোজা বাক্য -
স্তুপ -কাগজের পাশের পেয়ালায়,
খয়েরী চা'য়ে ঠোঁট ভেজায় ।
-
ভ্রমান্তের পরিণাম
✳️✳️✳️✳️✳️✳️
উড়ুক্কু অর্কিডের এক- কলি ফুল
না গ্রীষ্মের, না বসন্তের ।
ওদের ছুঁতে চাওয়া স্পর্শকাতর বর্ণবিভ্রাট বহুরূপী
চাহিদার দাসী, কাঁচা পয়সার বিলাসী।
স্থিতু মাটির আঙুল গোটানো পদক্ষেপ
বাড়তি বাটখারা চাপিয়ে ওজন বাড়ায়,
টগবগে এথেরোয়, স্বদেশী প্রবাসী।
ব্রাহ্মণ বরপ্রাপ্ত একলব্য, রাজরানী
সাধনায় আপামোর বিশাল প্রাচীর।
তুলনায় ঝরঝরে দেশী ঝাপট গাঁদা?
ছাইয়েও গলে যাওয়া ভঙ্গুর সাদা - পাখা।
ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকা সবজান্তা জ্ঞানপাপী -
আদর ছাড়া আদেশ
উপায়ান্তু উপদেশে
পেলেছে ভ্রূণ , পরমেন্দু।-
সময়ান্তে
সময় থমকে থাকলে আদ্র সকাল পর্দা ঢেকে -
আরেকবার টেনে আনতাম অন্ধকার
শুকনো ঠোঁটের ভারী কোন দুটো ভিজিয়ে দিতাম চুম্বনে
আদরের নগ্ন বুকে মুখ গুজে চোখ বুজতাম আরেকবার।
সময় থাকলে ফু দিয়ে সরিয়ে দিতাম ধুলো -
"তোমায় গান শোনাবো " হারমোনিয়ামে।
তোমার কালি লেপা চোখে চুমু খেয়ে দিতাম আরেকটু
শুধু আরেকটা কবিতা শোনার অনুরোধে।
সময় থাকলে হাত টেনে ধরে , আটকে রাখতাম -
দূর দূরান্তে তোমার এক্সপ্রেস চায়ে চুমুক,
আমার পোষয়না -
আমার কব্জি জোড়া সময় বিভ্রাট,
আমার পোষায় না ।
অপেক্ষাদের আসকারাও দিতে পারো প্রিয় -
সব রবিবার "রবি"র গান ভালবেসে।-
প্রাজন্মিক
এই প্রজন্ম ম্যাড়ম্যাড়ে
মার গলানো পান্তাভাতের খোঁজে
মাইল সমান ফাইল হাতানো লাইন ভর্তি করে
এই প্রজন্ম মুখ ফুটে বলতেও পারেনা -
দুই পৃষ্ঠা গেলা জ্ঞান।
পিঠের চেইন টানে ট্রান্সপারেন্ট ডেস্ক,
জুতোর উপর টাই নামিয়ে মাথা নামায় কেউ কেউ
এই প্রজন্ম মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারেনা ,
মুখ ফসকে উগরে দেয় আপাদমস্তক।
এরা লয়াল -ভবঘুরে
হটকারী উদ্বাস্তু।
বিচ্ছিন্ন ভ্রমর বিকল্প ফুলের মধু খোঁজে -
এই প্রজন্ম লড়াই করতে পারেনা ,
মুখ বুজে পড়ে থাকে এক কোনায় ।।
-
ডাটা বুক
বুড়িয়ে কাহিল গুচ্ছ সিউডো - স্নায়ু
সময়ে ছায়াও কাটেনা ভ্রূণক্ষারেও
হানাবাড়ির পাহাড়ায় নিথর ঠান্ডা দেহ
ওরাও বেয়ে উঠতে চায় একদিন -
কাঁধের ভারি মাটি যেন গুড়ো গুড়ো ধুলো।
অবুঝ সাজতে চায় একটা দিন -
যেন পাঁচটা বছরও গড়ায়নি কালো দেশে।
ওদের শিরদাঁড়ায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাস!
সস্তা চায় জিভ ভিজিয়ে হাসতে চায় একদিন
হাতে ধরে রাখা যায়না
গরম কাপ
দে ছুট বোন - ম্যারো গিয়ে খায় রাক্ষস
কে ?
ফাঁকা বই, স্যানিটাইজার, খাকি বডি গার্ড
আর নবীশের দরবার ।-
চারণ
ভালবাসা লিখিনি
টিনের ছাউনি আর শিলাবৃষ্টির
ওই শব্দ আর মেঠো গন্ধ চিনতেও
ছোট থেকে বড় হতে হয়েছে ।
ভালবাসা লিখিনি
বেগুনি আকাশে ,স্পষ্ট আঁধারের
সংক্ষিপ্ত আলাপের
বেঞ্চের গায়ে গায়ে চোখের নামাঙ্কিত
অপরিচিতদের সমাপ্ত গল্পের।
ভালবাসা লিখিনি
চোখ চোখ দুপুরে , কোলের বিড়ালের
সবুজ সিঙ্কোনা ধোঁয়াটে তমাকে
বরফের আকাশে সময়ের ব্যঘাতে।
ভালবাসা লিখিনি
সমস্ত গোলাপে, ডুবু ডুবু পাপড়ির
ভেসে থাকা বাক্যের ,
দিনে দিনে গভীরে , আকন্ঠ আবেগের
হাতে হাত সকালের , বালিশের গন্ধে ।
সবার দেখা হোক ঝড়ের সমুদ্রে
চায়ের স্বর মাখা ছ্যাঁকা খাওয়া আঙুলে
সময় কাটুক কোনো বন্ধ ঘড়িতে
আর আকাশ ডাকুক তার নিজের বাড়িতে।
-
চুন খসা সুপাড়ি
সমতলে পা পিছলে দূরবীন দেখি অনেকটা গতি নদী
আঁকা বাঁকা লালগোলা, বরফ ছোঁয়া পাহাড়
সোনালী চূড়া মেঘের আড়াল, খিটখিটে রোদ
গোটাটাই গলিয়ে ফেলার চেষ্টা।
সমতলের শিলা বৃষ্টি, জানলায় বসে করিডোর
সকলের স্কুলবাসে প্রচন্ড তুষারপাত
সমতলে কালো ভূত, চুনাপাথর গুঁড়িয়ে সাদা চামড়ার,
টেনে ছিঁড়ে ফেললেও , পোড়া তামা রং
ফসকায় ,
গাঢ় ঘুম, পণ্ড বিকেল , একটা বসন্ত, আট সকাল
পর্দা আড়াল করলোনা সত্য, কালো সত্য
বরফ , চুনাপাথর, পলিমাটি অবলম্বনে -
অনবদ্য,
দীর্ঘায়িত লাল পদ্য।-