।। সীমিত ।।
মেঘের ঘোমটা নাছোড়বান্দা,
শীত-রোদ বনবাসে,
এমনি করেই আজকাল দেখি
সন্ধ্যা নেমে আসে।
বন্ধুরা সব ব্যাস্ত ভীষণ,
কর্মে কিংবা সংসারে মন,
অতিমারী আর লক-ডাউন মিলে
বাকি টুকু করে পণ্ড।
আমোদের ঘাড়ে শুধুই খাজনা,
ভালোবেসে বাঁচা বন্ধ।— % &-
~ বাঙালির পুজো ~
-------------------------
নীল-সাদা রাস্তায় থরে থরে
লাল-পেড়ে সাদা শাড়ি রমরমা;
হলুদ ট্যাক্সি, সাদা ওলা-উবের,
বাইকের সাথে মিলে সাতরঙা।
আলো আর রঙের বসনে সেজে
একরোখা কল্লোলিনী ছোটে;
বাঁশের বেড়া, দড়ির বাঁধন, কিংবা
মহামারীর ভয় নেই মোটে।
হোক লেসার-এর খেলা বন্ধ,
হোক না মণ্ডপ-সজ্জা সাধারণ;
কিছুতেই দমবে না বাঙালির
বছরের চেপে রাখা উদ্যম।-
।। জীবন যুদ্ধ ।।
কিছুই বদলায়নি।
আজও নির্যাতিত শরীরে কাঁকড়া বিছের বিষ,
জলের তলায় শ্বাসরুদ্ধ ছটপটানি;
অবশ দেহ ঠিক যখন অনুভূতির উর্ধ্বে,
নির্মম হাত ঠিক তখনই টেনে তোলে মাথা,
কোনো অজানা প্রশ্নের উত্তর জানতে।
বরং বেড়েছে জটিলতা।
নির্যাতিত আর নির্যাতকের অদ্ভুত সম্পর্ক,
যেখানে যন্ত্রণা ক্রমে নেয় করুণার রূপ;
সে সম্পর্ক আজ বিধিসম্মত,
সারি দিয়ে সাজানো স্টকহোম সিনড্রোম।
প্রেক্ষাপট পালটেছে।
রণভূমি বলে আর আলাদা কিছু নেই।
ঘরে ঘরে, মনের গভীরে, বিদ্বেষের শিকড়,
আকাশঢাকা মহীরুহের ছায়ায় শুধুই বিষাদ।
স্তরে স্তরে জমা অস্বস্তি আর অবিশ্বাস,
এ ভার কে নেবে বরণ করে?
কত পা এগোবে, কোন জন?
প্রশ্ন চিরন্তন, সর্বব্যাপী ...
উত্তর পুরোটাই ব্যাক্তিগত।-
।।কবিতা এখন।।
কবিতা এখন কাজের মাসি,
ঘেমো দেহে স্যানিটাইজার মাখে।
ঘর ঝেড়ে মুছে, বাসন মেজে,
মুখের গন্ধ মাস্কে ঢাকে।
কবির আদর নেই বরাদ্দ,
খোঁজ আর পড়ে না বইয়ের গন্ধে।
খুঁতখুঁতে বউ, সেকেলে শাশুড়ি,
ঘরে ঘরে খোঁটা সকাল সন্ধে।
তার 'পরে আছে কপালের ফের,
অচল স্বামী, কিশোর ছেলে।
সংসার ভার সবই ঘাড়ে তার,
আরও কটা টাকা ভালো হয় পেলে।
পাকা বাড়ি বহু পুরনো সপ্ন,
ধার করে শুরু করেছিল কাজ।
বছর ঘুরল, বাড়ি আজও বাকি,
ধার শোধ করা কি কঠিন আজ!
তবু বুক বেঁধে, কোভিডের যুগে,
একা বাড়ি ভাড়া নিয়ে যায় লড়ে।
লোলুপ দৃষ্টি, সহজ পথের
সব হাতছানি উপেক্ষা ক'রে।-
Submission
No more hiding dark circles,
or the odd blemishes on my face.
No side-face, no sunglasses,
or a hat to make you guess.
Here's all that I am and be,
face up, up close, up front ...
Standing before you, no guards,
all imperfections bare blunt!
My eyes pinned on your gaze,
and all your eyelids that flicker.
Judge me, trust me or love me,
nothing can make them weaker.
Just the pleasure of pure surrender,
no conditions, nor any demands!
And no matter what your verdict is,
Your pride is safe in my hands!
-
।। আসর ।।
অল্প আলো, মন্দ-ভালো,
কাবাব-সতে, আবছা পাতে।
কারণ সুধা, বাড়ায় ক্ষুদা,
নেশার কোলে, সবাই ঢলে।
বাইরে হাওয়া, শীতল ছোঁয়া,
তাও ভেতরে, পারদ চড়ে।
মুক্তকেশী, সল্পবেশী,
লাস্য চালে, নাচের তালে।
স্পর্শ নরম, শরীর গরম,
কেউ পরে, কেউ আগেই বাড়ে।
কারুর আশা, বিত্তে ঠাসা,
কেউবা দোলে, মায়ার জালে।
বাড়ন্ত রাত, কেউ বাজিমাত
করল, নাকি শুধুই ফাঁকি?
ভাঙা আসর, নিঝুম শহর,
প্রশ্ন তোলে, অবোধ ছলে।-
।। বিপণন ।।
ডুপ্লে বাড়ি, বিলিতি গাড়ি,
"ছেলেটা আমার আদুরে ভারী";
"থাকবে মেয়ে রাণীর হালে",
ফর্দ মত যৌতুক পেলে।
-
।। গণতন্ত্র ।।
দিন-বদলের বারোয়ারি প্রতিশ্রুতি
বদলে গেছে দল-বদলের খেলায়।
আসন, স্বজনপোষণ বা পুনর্বাসন,
সবই হাত-বদল হচ্ছে হেলায়।-
।। অলীক ।।
যতই থাকো পরিপাটি,
আন্তরিক বা খাঁটি,
এক নিমেষের বেহিসেবেই
সোনাও ধুলোমাটি।
অতীতের যত কার্যকলাপ,
বর্তমানে বৃথাই আলাপ,
ব্যাকরণের কঠিন পাতায়
বারণ কাটাকাটি,
সত্যি অনুভূতির ভাষা
সোনার পাথর বাটি।
-