জানি,
আমি ঠিক প্রেমিকের মতো
মৃত্যুকে ভালোবাসতে পারিনি,
তাই তো এই ইটের শরীর দিয়ে
রোজ খসে পড়ে একটা করে রক্ত পলাশ।
রুক্ষ ঠোঁট কামড়ে ধরে গরম গভীর দীর্ঘশ্বাস।
খুব ভেতরে চাপা পড়ে থাকা
কালচে রক্তের শিরায় শিরায় বিদ্রোহ,
আর বুকের ভেতর হঠাৎ করেই চেঁচিয়ে ওঠে,
মৃত দেহ।
এতদিনে ভুল জেনেছি,
ভালোবাসায় হামেশাই ভেসে থাকা যায়না,
মাঝে মাঝে ডুবে যেতে হয়,
গভীরে।
-
নিয়ম করে হিসেব করার রেওয়াজ,
এর চেয়ে ফুরিয়ে যাওয়াই শ্রেয়,
বন্ধ চোখে বুঝতে পেলাম আজই,
আমার মত হাওয়া'ও স্বাধীন বড়।
হারিয়ে গেলে নদী হবো বলে,
কালির আঁচড় শুকিয়ে যাওয়াও নিষেধ,
আঙুলের ক্ষত একটু সবুজ ছুঁলে,
চুপ থাকা আর হেরে যাওয়া'তেও বিভেদ্।
কবিতারাও ফিরে গেছে দেশে,
হাতের কলম ছন্নছাড়া ছন্দহীন,
আমার সঙ্গী এক আঁচল মেঘ
আর রঙ চটে যাওয়া জন্মদিন।-
মান-অভিমানের খেলাঘর, অল্প আশায়'ই ফিরে এসো,
এক ঘেঁয়ামির জীবন হলে, ক্ষণিকের হাসিই ভালোবাসো।-
ভালোবাসার রং-এ রাঙ্গানো
মনের খাতার প্রতিটা ভাঁজ,
জ্বলজ্বলে - রাত জাগা তারা
আকাশের গায়ে কারুকাজ।
কবিতার বুকে ফুটে উঠে,
লুকিয়ে রাখা মনখারাপ,
ঘাসের উপর স্পষ্ট গাঁথা,
স্মৃতিদের পায়ের ছাপ।
মেঘের আড়ালে একটা তারা
গান শোনায় সারা নিশি;
ভালোবেসে লিখে চলে,
ভালো থাকার স্বরলিপি।
-
চাপা কান্নায় বালিশ ভিজে, এ জগতে কেও নেই আমার আপন,
ও মা! এবার তোমার দেখা পেলে জড়িয়ে ধরে বলবো
"একমাত্র তোমার দ্বারেই শান্তি ভীষণ" ।-
পদ্মরাগ নয়নবারি;
চোখের তলায় অর্ধেন্দু ছাপ,
সুরের জালে পদাবলী;
কাগজের এপিটাফ।-
আজকাল-
সোজা হাটতে গিয়েও আটকে যাই,
সরু পথ, মাকড়শার জাল,
ভাঙা কাঁচে সূর্যের লাল;
হোঁচট খেয়ে আবার সামলে উঠে দাঁড়াই..!
তবে ফিরে পাইনা- কপালের মেঘ,
প্রথম আলাপ, খোঁপার গোলাপ,
জমানো শব্দ; হারিয়ে যায় সব কিছুই।
তবু হেমলক পিছু ছাড়েনা আমার,
টেনে নিতে চায়: বাঁচিয়ে রাখা নীরবতা
চোখের জল..
চুষে নিতে চায়, বেহায়া ব্ল্যাকহোল
শূন্যতা ধরিয়ে দেয় হাতে/
আমি গায়ের জোরে পেরে উঠিনা আর
মুখ কালো করে বাড়ি ফিরে আসি,
শেষ রাতে।-
এভাবে নিঃশব্দে আকাশ ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে,
একটা আস্ত নক্ষত্র সমুদ্রের বুকে মিশে গেছে।
পাহাড়ের মরা বুকটাও,
প্রদীপের তেল শুকানো সলতের মতো,পুড়ে গেছে,
তাও ভালো আছে।
আমিও যাযাবর সেজে একটা অন্য পৃথিবীর খোঁজে বেরিয়েছিলাম,
শীতের চাদরে রোদ লুকিয়ে,
যেখানে নদী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি,
বিশ্ব জয়ের স্বাদ পেয়েছি,
সেখানে এক ছায়াপথ শূন্যতাও পাথর হয়ে যায়।
সেখানেই আমি পাথরকে ঈশ্বর হতে
আর ঈশ্বরকে নিঃস্ব হতে দেখেছি।
চোখ, কান, মুখ, দম বন্ধ করে,
হাতের রেখায় বিশ্ব এঁকেছি,
স্বর্গীয় সুখ পেয়েছি।
এ পৃথিবীর একটা দুঃখও আমায় ছুঁয়ে দেখতে পারেনি।
শুধু আমি সময়টাকে আর হাতের মুঠোয় ধরে রাখতে পারিনি।-