পূর্ণতা

রাতের খোলা বুকে মাথা রেখে চুপ করে শুয়ে_
একলা আকাশ।
চোখে নেই ঘুম....আছে শুধু এক ঝাঁক জোনাকির
রূপালী স্বপ্নের ছুটোছুটি।
মেঘেরা আজ অন্তিম শয্যায় লীন...
পাথরের কোলে আছড়ে পড়া সাগরের ঠোঁটে শুধুই গোঙানি।
চাঁদের পরিধি বরাবর হাঁটতে হাঁটতে হোঁচট খাই হঠাৎ ,
বৃত্তের বেশ কিছুটা কখন যেন গিলে ফেলেছে অন্ধকার।
তবুও আধ খাওয়া চাঁদকে ঘিরে জমে ওঠে তারাদের জলসা।
আকাশ যখন তার সম্পূর্ণটা উজাড় করছে সাগরের নীলে_
আমি তখন দূরে দাঁড়িয়ে কবিতার ছন্দটা মেলাতে ব্যস্ত।
অন্তমিল না থাকলেও, কিছু পরিণতি বড়ই মধুর।

অরুন্ধতী ⭐

-

নতুনকে ভালবেসে

পুরোনো স্মৃতির পর্দাগুলো সরিয়ে
এঘর- ওঘর করছে একঝাঁক কথা।
কিছু কথা...আগলে রাখার, কিছু এড়িয়ে চলার।
আমি দুহাতে বুকে টেনে নিই শব্দের মায়াজাল,
হাসির জন্য আলাদা করে লাগে না কোনো শুল্ক_
তাও আজ হাসির বেনামী কারাবাস।
নতুনের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া পুরোনো কিছু আদর
এখনও চোখের পাতা ভেজায় নিমেষে...
শান্তির সজীব গল্পে বারবার কাটাছেঁড়া করে
এক দল নিন্দুকের সুতীক্ষ্ণ চোখ।
আমি এগিয়ে চলি সামনের দিকে... মনের মেঠো পথ ধরে।
ফেলে আসা দুঃখকে কবর দিয়ে
সামনের গুলমোহর গাছটার পাতায় পাতায় লিখে রাখি
আজকের কথা... বর্তমানের কথা।
ভেজা রোদ্দুরের মায়াবী ঠোঁটে তখনও সূর্যের পরিহাস,
পথ হয়নি এখনও শেষ, আগামী আছে দাঁড়িয়ে
আমার অপেক্ষায়...
এগিয়ে চলি আমি...কাহিনীর বাকিটুকু জানতে,
বৈশাখের কৃষ্ণচূড়ায় তখন উৎসবের মরশুম।

অরুন্ধতী ⭐

-

সময়ের ঘরে রৌদ্রের উঁকিঝুঁকি,
তবুও বৃষ্টিতে চুপচুপে ভিজে আমি...
পনেরোটা গ্রীষ্ম পেরিয়েছে নীরবে_
শুকোতে পারেনি সেই নীলচে ঘা।
যারা যাওয়ার তারা গেছে দূরে...বহুদূরে,
কথা দিয়েও, ফিরে আসেনিকো আর।

অরুন্ধতী ⭐

-

রাতের পাগলামি

রাত নামে কবিতার আটচালায়
আমি আকাশে খুঁজি নীরবতা,
চোখের পানসিতে স্বপ্নের কোলাহল
মনের কাঠগড়ায় ব্যর্থতার চিতা।
মেঘ হয়ে ভালবেসেছিল যে
বৃষ্টি হয়ে ঝরেনি কখনও আঁচলে,
পলাশ বনে খুঁজতে গিয়ে বসন্ত
হেমলক হয়ে ফুটেছিল কাজলে।
সাগরের কান্নায় বারবার ভেজে শুক্তি
লহরীর বুকের চেনা তিলে আঁচড়,
হারানোর ছিল না তো নতুন কিছু আর
কে ছিল আপন, কেই বা ছিল পর...।

অরুন্ধতী ⭐

-

ছায়ার মায়া

শুকনো পাতার আলজিভে কবিতার শ্লীলতাহানি...
বেশ কিছু শব্দেরা এখনও নগ্ন।
আবেগের জতুগৃহে দাউদাউ করে পুড়ছে তখনও
আত্মসম্মানের চিতা।
আগুনের মাথা উঁচু করা ফুলকির কলার ধরে
কে যেন প্রশ্ন করে_
আজ কি সম্পূর্ণ হল তোমার কবিতা...নাকি আজও
শুধুই নীরব থাকার পালা?
উত্তর আসে না কোনো...
জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায় অনুভূতির সেই আটচালা।
ঝরে পড়তে চায় পাতা... কিন্তু কে যেন আঁকড়ে ধরে রেখেছে।
বসন্তের পাতা ঝরার গল্পটা কি তাহলে মিথ্যে ছিল?
মিথ্যে ছিল কবিতার মানহানির মামলা?
অসম্পূর্ণ কবিতায় কোথায় খুঁজে বেড়াব আজ তোমায়?
শিরোনামে না থাকার অভিমানে বাড়িয়েছ দূরত্ব,
আজ সেই শিরোনামে, শুধুই তোমার রাজত্ব।
নেই শুধু তুমি_
কবে, সেই আগুনের ফুলকির সাথে মিশে গেছো
আকাশের নীল বুকে।
খুব জানতে ইচ্ছে করে...
"ভালো আছো তো তুমি?"

অরুন্ধতী ⭐

-

ভালোবাসো যদি...ভালোতেই কোরো বাস,
দূরে যাওয়ার নিখুঁত গল্পে_
ক্ষমার অছিলায়, কোরো না স্মৃতির পরিহাস...

তুমি ছিলে, তুমি আছো... তুমি থাকবে ডাকনামে,
পরিচিতির ঘনত্ব হাইড্রোমিটারে কম হলেও_
প্রিয় তুমি পূর্ণিমার চাঁদ, ভাবনার শিরোনামে।

দৃষ্টির আড়ালে যেতে যেতে আজ সবই শুধু কল্পনা,
চোখের রেটিনা পুড়ছে গভীর জ্বরে_
স্বস্তির বারিশে অপূর্ণ স্মৃতি তবুও ভিজলো না।

নতুন জীবনে ভালো থেকো, ভালো রেখো নিজেকে,
সময়ের কাছে নজরবন্দী মন_
বিদায় না বলার প্রতিজ্ঞায়...স্মরণে রাখবে তোমাকে।

অরুন্ধতী ⭐

-

তুমি চেয়েছিলে দূরত্ব বাড়াতে,
আমি কাগজে নিজেকে বেঁধেছি।
তুমি ভেবেছিলে মৌন থাকবে,
আমি পলাশ হয়ে ঝরেছি...
তুমি ছায়াপথের মতোই দীর্ঘ নীরব,
আমি তিস্তার মতো শীতল...
তুমি নাস্তিকের মতো কেবলই অবিশ্বাসী,
আমি মোনালিসার মতোই অচল।

অরুন্ধতী ⭐

-

রঙ খুঁজি যখন আগামীর মায়াবী সুতোয়
অতীতের কপালে দিয়ে চুমু, ফাগুন হেঁটে যায়,
লাল পলাশের নাকছাবিতে ঘুমোয় একাই বসন্ত
আবিরের চেনা গল্পে, ভালবাসা বড়ই মায়াময়।

অরুন্ধতী ⭐

-

সমুদ্রের গর্ভে বিষাদের অট্টালিকা,
তুমি রাত জাগো কার অপেক্ষায়?
তারাদের চোখে স্বপ্নীল রূপকথারা
রঙ খোঁজে, পূর্ণিমার ছেঁড়া ঘাগরায়।

অরুন্ধতী ⭐

-

একটা আস্ত মেঘ, নিমেষেই গিলে খায় স্বপ্নের মায়াবাড়ি,
তখনও কি লিয়োনার্দোর স্মৃতিঘরে, মোনালিসার কালাপানি?

অরুন্ধতী ⭐

-